Thank you for trying Sticky AMP!!

সাঈ মানে সাতটি দৌড়

সাফা ও মারওয়া দুটি পাহাড়ের নাম। সাফা থেকে মারওয়ার দূরত্ব ৪৯২ গজ। এই সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত একটি ধাপ আর মারওয়া থেকে সাফা দ্বিতীয় ধাপ। এভাবে আপনাকে সাতটি ধাপ হাঁটতে হবে কিছু নিয়ম মেনে। আল্লাহর নির্দেশে ইব্রাহিম (আ.) তাঁর স্ত্রী বিবি হাজেরা ও ছেলে ইসমাইল (আ.)-কে এ দুই পাহাড়ের মাঝে রেখে চলে যান। এটি ছিল ইব্রাহিম (আ.)-এর জন্য আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত পরীক্ষা। এ সময় শিশু ইসমাইল (আ.) পানির জন্য কাঁদছিলেন আর মা হাজেরা একবার সাফা পাহাড়ে ছুটছিলেন আবার পরক্ষণে মারওয়া পাহাড়ে ছুটছিলেন। এভাবে সাতবার ছোটাছুটির পর আল্লাহর নির্দেশে জমজম কুয়ার আবির্ভাব হয়।

সাঈ শুরুর আগে সাফা পাহাড়ের কাছে এলে এই দোয়া একবার সজোরে পড়ুন, ‘ইন্নাস্ সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন স্যাআ ইরিল্লাহি আবদু বিমা বাআদাল্লাহু বিহি।’

অর্থ: নিশ্চয়ই আস-সাফা ও আল-মারওয়া আল্লাহর নিদর্শন। যেভাবে আল্লাহ বলেছিলেন, আমি সেভাবেই শুরু করলাম।

Also Read: সিজদার যত উপকারিতা

এবার সেখান থেকে কাবাঘরের দিকে ঘুরুন এবং কাবা দেখার চেষ্টা করুন। এবার পরপর তিনবার এই দোয়াটি দেখে দেখে সজোরে পড়ুন,

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্ দাহু লা সারিকালাহুল মুলক ওয়া লাহুল্ হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই্ইন কাদির।’

 অর্থ: এক আল্লাহ ছাড়া ইবাদতযোগ্য আর কেউ নেই। তাঁর কোনো শরিক নেই। সব রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। এক আল্লাহ ছাড়া ইবাদতযোগ্য আর কেউ নেই। তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন, তাঁর বান্দাদের সাহায্য করেছেন ও তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করেছেন।

 এরপর দুই হাত উঠিয়ে নিজের ভাষায় আল্লাহর কাছে যা খুশি চান। এবার সাফা থেকে হেঁটে মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছান। তবে দুই পাহাড়ের মাঝে কিছু অংশে সবুজ আলো চিহ্নিত আছে, সেখানে পুরুষেরা একটু জোরে হাঁটবেন বা হালকা দৌড়াবেন। এটি প্রতিবার করতে হবে পুরুষদের; নারীদের এটি করার প্রয়োজন নেই। মারওয়া পাহাড়ে পৌঁছালে আবার কাবার দিকে মুখ করুন (এবার হয়তো কাবাকে দেখতে পারবেন না)। এ সময় সেই একই দোয়া পরপর তিনবার দেখে দেখে পড়ুন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্ দাহু লা সারিকালাহুল মুলক ওয়া লাহুল্ হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই্ইন কাদির।’ এরপর দুই হাত উঠিয়ে নিজের ভাষায় আল্লাহর কাছে মনের সব নেক দোয়া করে ফেলুন। তারপর আবার সাফার দিকে—ঠিক এভাবে সাতটি ধাপ পূর্ণ করুন।

Also Read: আজানের সময় দোয়া করলে গুনাহ মাফ হয়

মনে রাখবেন

•   সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার প্রয়োজন নেই।

•   সাঈয়ের সময় যদি নামাজের জামাত শুরু হয়ে যায়, তাহলে সাঈ ভেঙে জামাতে নামাজ আদায় করুন। তবে মনে রাখবেন, কতগুলো ধাপ আপনি সম্পন্ন করেছিলেন। জামাতের পর বাকি ধাপগুলো শেষ করুন।

•   সাঈয়ের সময় অজু ভেঙে গেলে আবার অজু করার দরকার নেই। কারণ, সাঈয়ের জন্য অজু জরুরি নয়।

•   নিচতলায় সাঈ না করে ওপরে চলে যেতে পারেন, ভিড় কম হবে আর কাবাঘর আরও ভালোভাবে দেখা যাবে।

•   সাফা ও মারওয়ার মাঝে যে অংশে জমজমের কনটেইনার আছে, সেখানে থেমে জমজমের পানি পান করতে পারেন। এই জায়গায় হাঁটার সময় সাবধান থাকবেন। কারণ, এখানকার মাটি অনেক সময় পিচ্ছিল হয়।

• পিরিয়ডরত নারীরা সাঈ করতে পারবেন, কিন্তু তাওয়াফ করতে পারবেন না।

• আপনি দেখতে পাবেন, অনেকেই দলে দলে জোরে জোরে বিভিন্ন সুরা পড়ে সাঈ করছেন। হাঁটার সময় যেকোনো সুরা পড়তে পারেন অথবা কোরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।

Also Read: ফজরের নামাজের জন্য জেগে ওঠার কয়েকটি কৌশল

খেয়াল করুন

সব ধরনের খরচ সম্পর্কে ধারণা রাখা: টাকা কম-বেশির ভিত্তিতে নয়, প্যাকেজের সুবিধাদি দেখে, শুনে, বুঝে চুক্তি করবেন। উড়োজাহজাভাড়া, মক্কা-মদিনায় দর্শনীয় জায়গা বেড়ানো, ইত্যাদি আগে থেকে জেনে নিতে হবে।

খাবার: সৌদি আরবে পৌঁছে তিন বেলা খাবার দেওয়া হবে কি না বা বিকল্প ব্যবস্থা কী, তা জানতে হবে।

মক্কা-মদিনায় বাসার অবস্থান: মক্কায় বাসার ধরন ( সমতল বা উচুঁতে) ও তা কাবা শরিফ থেকে কত দূরে, বাসায় লিফট আছে কি না, বাসার প্রতি কক্ষে কতজন এবং বাথরুম কতজনের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে, জেনে নেবেন। একই কথা মদিনার বাসার জন্য প্রযোজ্য। মদিনার বাসা মসজিদে নববি থেকে কত দূরে তা জেনে নিন।

ওমরাহর ভিসার জন্য Saudi Visa Bio অ্যাপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন  করতে হয়।

নুসুক অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন: মদিনার  রিয়াজুল জান্নাতে দুই রাকাত নামাজ পড়তে চান। তাদের অবশ্যই নুসুক অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করে সময় নিতে হবে। মুয়াল্লিমকে দিয়ে সময় বুকিং করে নিন। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন না। সময়মতো লাইন ধরে ভেতরে প্রবেশ করুন। নফল নামাজ পড়ে দোয়া করুন। নুসুক অ্যাপটি অ্যাপল ও অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে সহজলভ্য।

Also Read: সুরা বুরুজে আছে এক বুদ্ধিমান বালকের ঘটনা