বুরাইদাহ (রা.)-এর বরাতে তার পিতা বর্ণনা থেকে পাওয়া এই হাদিস।
মাইয ইবনু মালিক আসলামী নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! নিশ্চয়ই আমি আমার আত্মার ওপর জুলুম করেছি, অর্থাৎ ব্যাভিচার করেছি। আমি চাই যে আপনি আমাকে পবিত্র করবেন। তখন তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন।
পর দিন সে আবার নবী (সা.)–এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যাভিচার করেছি। এবারও তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সম্প্রদায়ের কাছে একজন লোককে পাঠালেন। লোকটি সেখানে গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি মনে করেন যে তার মস্তিষ্ক–বিকৃতি ঘটেছে? সে মন্দ কাজে লিপ্ত হয়েছে? জবাবে তারা বলল, আমরা তো তার মস্তিষ্কের বিকৃতি সম্পর্কে কোনো কিছু জানি না। আমরা জানি যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ প্রকৃতির।
এরপর মাইয তৃতীয়বার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এল। তখন তিনি আবারও একজন লোককে তার গোত্রের কাছে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠালেন। তখনো তাঁরা তাঁকে জানালেন যে আমরা তার সম্পর্কে খারাপ কোনো কিছু জানি না এবং তার মস্তিষ্কের কোনো বিকৃতি ঘটেনি।
এরপর যখন চতুর্থবার সে এল, তখন তার জন্য একটি গর্ত খোঁড়া হলো। নবী (সা.) তাকে (ব্যভিচারের শাস্তি প্রদানের) নির্দেশ প্রদান করলেন। সুতরাং তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হলো।
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর গামিদী এক নারী এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যাভিচার করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে পবিত্র করুন। তখন নবী (সা.) তাকে ফিরিয়ে দিলেন।
Also Read: তৃতীয় তারাবি
পর দিন আবার নারী এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) আপনি কেন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আপনি সম্ভবত আমাকে ওইভাবে ফিরিয়ে দিতে চান, যেমনভাবে আপনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মাইযকে? আল্লাহর শপথ করে বলছি, নিশ্চয়ই আমি গর্ভবতী।
তখন তিনি বললেন, তুমি যদি ফিরে যেতে না চাও, তবে আপাতত এখনকার মতো চলে যাও এবং প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করো। এরপর যখন সে সন্তান প্রসব করল, তখন ভূমিষ্ঠ সন্তানকে এক টুকরা কাপড়ের মধ্যে নিয়ে তাঁর কাছে এল এবং বলল, এ সন্তান আমি প্রসব করেছি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, যাও তাকে (সন্তানকে) দুধপান করাও। দুধপান করানোর সময় পার হলে পরে এসো। এরপর যখন তার দুধপান করানোর সময় শেষ হলো, তখন ওই নারী শিশুসন্তানটি নিয়ে তাঁর কাছে আবার এল এমন অবস্থায় যে শিশুটির হাতে এক টুকরা রুটি ছিল। এরপর বলল, হে আল্লাহর নবী! এই তো সেই শিশু, যাকে আমি দুধপান করানোর কাজ শেষ করেছি। সে এখন খাবার খায়।
Also Read: দ্বিতীয় তারাবি
শিশুসন্তানটিকে তিনি একজন মুসলোনকে প্রদান করলেন। এরপর তাকে (ব্যভিচারের শাস্তি) দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। নারীর বুক পর্যন্ত গর্ত খনন করানো হলো; এরপর জনগণকে (তার প্রতি পাথর নিক্ষেপের) নির্দেশ দিলেন। তারা তাকে পাথর মারতে শুরু করল।
খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) একটি পাথর নিয়ে অগ্রসর হলেন এবং নারীর মাথায় নিক্ষেপ করলেন, তাতে রক্ত ছিটকে পড়ল খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)-এর মুখমণ্ডলে। তখন তিনি নারীকে গালি দিলেন। নবী (সা.) তাঁর গালি শুনতে পেলেন। তিনি বললেন, সাবধান! হে খালিদ! সে মহান আল্লাহর শপথ, যাঁর হাতে আমার জীবন, জেনে রেখো! নিশ্চয়ই সে এমন তওবা করেছে, যদি কোনো ‘হক্কুল ইবাদ’ বা বান্দার হক বিনষ্টকারী ব্যক্তি এমন তওবা করত, তবে তারও ক্ষমা হয়ে যেত।
এরপর তার জানাজার নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। তিনি তার জানাজার নামাজ আদায় করলেন। এরপর তাকে দাফন করা হলো।
(মুসলিম, হাদিস: ৪৩২৪)
Also Read: খতম তারাবি
আরও পড়ুন
-
ইরানের প্রেসিডেন্টের খোঁজে চলছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান
-
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট–পররাষ্ট্রমন্ত্রীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না
-
মিরপুরে দিনভর বিক্ষোভ, পুলিশ বক্সে আগুন
-
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে নিখোঁজ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দোল্লাহিয়ানকে নিয়ে আলোচনা
-
বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ইরানের হেলিকপ্টারটির কিছু ছবি