রসনা

ভোজন–স্বজন

খাবার নিয়ে ভিডিও তৈরি করে জনপ্রিয় হয়েছেন রাফসান ও ফাইজা। ইউটিউব চ্যানেলের সূত্রে নিজের নাম ছাপিয়ে তাঁরা এখন পরিচিত ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’ ও ‘ক্ষুধা লাগছে’ নামে। এবার ঈদে কী থাকছে তাঁদের মেনুতে?

ফাইজার ‘ক্ষুধা লাগছে’ ইউটিউব চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার প্রায় ৪ লাখ ২৪ হাজার
ফাইজার ‘ক্ষুধা লাগছে’ ইউটিউব চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার প্রায় ৪ লাখ ২৪ হাজার

কোন খাবার আপনি দিনের যেকোনো সময় খেতে রাজি আছেন? প্রশ্ন করেছিলাম রাফসান ও ফাইজার কাছে। খাবার নিয়েই তো দুজনের কারবার। গত কয়েক বছরে ফুড ভ্লগার হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এই দুই তরুণ।

প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা কী বলেছিলেন, সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। আগে জেনে নিই, ঈদের দিন তাঁদের মেনুতে কী থাকছে! রাফসান বললেন, ‘আমাদের বাড়ির একটা ঐতিহ্য আছে। ঈদের দিন ভাত, আলুভর্তা আর ডিম খেয়ে আমাদের সকাল শুরু হয়। আম্মু নানা ধরনের ডেজার্ট তৈরি করেন।’ আর ফাইজা? ‘আমি একটা চিংড়ির বিরিয়ানির রেসিপি দেখেছি কিছুদিন আগে। সেটাই রান্নার চেষ্টা করব। খুব ভালো রান্না তো করতে পারি না। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করলে আসল ম্যাচ খেলতে নামব।’

ইফতেখার রাফসানের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজের নাম ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’। আর ফাইজা তাঁর পুরো নাম ফাহরিন জান্নাত ছাপিয়ে ‘ক্ষুধা লাগছে আপু’ হিসেবেই বেশি পরিচিত। ‘ক্ষুধা লাগছে’ নামের ইউটিউব চ্যানেল কিংবা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের পেজে ঢুঁ মারলে আপনি নামকরণের সার্থকতা টের পাবেন। বিভিন্ন হোটেল–রেস্তোরাঁর বার্গার, পিৎজা থেকে শুরু করে চিতই পিঠা কিংবা ঝালমুড়ির রিভিউও আছে সেখানে।

ফাইজা তাঁর পেজ ও চ্যানেলে ঝালমুড়ির মতো নানা স্বাদের মিশ্রণ রাখতে চান। শুধু খাবারদাবার নয়, ঘোরাঘুরি বা ফ্যাশনসংক্রান্ত কনটেন্টও তৈরি করছেন তিনি। অন্যদিকে রাফসানের সোজাসাপটা কথা, ‘মানুষ তাঁর মূল্যবান সময় দিয়ে আমার ভিডিও দেখছে, আমি চাই তারা সময়টা উপভোগ করুক।’

রাফসানের ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’ ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ত্রাইবারের সংখ্যা ৭ লাখের কাছাকাছি।

একসময় মজার ছলেই ফুড ভ্লগিং শুরু করেছিলেন। এখন লাখো ভিউ, সাবস্ক্রাইবারের পাশাপাশি একধরনের দায়িত্ববোধ যুক্ত হয়েছে। নির্ঘুম চোখ নিয়ে আমাদের সঙ্গে অনলাইন–আড্ডায় বসেছিলেন রাফসান। একটা বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করতে গিয়ে কয়েক রাত ঘুমাতে পারেননি। তবে খাবারদাবার নিয়ে আলাপ শুরু হতেই সব ক্লান্তি ভোজবাজির মতো উড়ে গেল। স্বভাবসুলভ উচ্ছলতা নিয়ে কথা বললেন তিনি। ফাইজার জাদুটাও এখানেই। ক্যামেরার সামনে কোনো ভান–ভণিতা না করে নানা বিষয় উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর এই ধরনই হয়তো নেটিজেনরা পছন্দ করছে। তাই ‘ক্ষুধা লাগছে’ ইউটিউব চ্যানেলটির সাবস্ক্রাইবার এখন প্রায় ৪ লাখ ২৪ হাজার। ফেসবুকে তাঁর ফলোয়ার ১৩ লাখের বেশি।

দুই ফুড ভ্লগারই ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) শিক্ষার্থী। ‘রাফসান দ্য ছোটভাই’ অবশ্য ক্যাম্পাসের পাশাপাশি ফুড ভ্লগের জগতেও ফাইজার বড় ভাই। ইউটিউবে তাঁর সাবস্ত্রাইবারের সংখ্যা ৭ লাখের কাছাকাছি।

রাফসান–ফাইজাদের সঙ্গে কেউ হয়তো ‘ফাস্ট–ফুড জেনারেশন’ তকমা জুড়ে দিতে পারেন। তবে শুরুতে যে প্রশ্নের কথা বলছিলাম, তার উত্তরে কিন্তু বাঙালি ভোজনরসিককেই খুঁজে পাওয়া গেল। রাফসান বললেন, তাঁর যেকোনো সময়ের পছন্দের খাবার হলো তেহারি। ঈদের দিন দুপুরে মায়ের হাতের তেহারি খাবেন, সেই অপেক্ষায় এখন থেকেই দিন গুনছেন। আর ফাইজা পুরোদস্তুর ভেতো বাঙালি। ভাত আর ভর্তার কথা বলতে গিয়েই জ্বলজ্বল করছিল তাঁর চোখ!