নির্বাচন তো পরে, কাউন্সিলরদের নাম চেয়ে ক্লাব আর জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোয় বিসিবির চিঠি পাঠানোর জন্য অপেক্ষাই শেষ হচ্ছিল না এত দিন। এর আগে বোর্ড সভাপতি দুবার তারিখ ঘোষণা করলেও সেটি ঘোষণাই হয়ে থেকেছে। অবশেষে কাল চিঠি ছেড়েছে বিসিবি। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপটা শুরু করে দেওয়ার পর বিসিবির আশা, আগামী পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা সারা সম্ভব।
ক্রিকেট বোর্ডের মোট কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৭৪। তাঁদের নাম চেয়ে বিভিন্ন ক্লাব এবং জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রধানের উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী। ক্যাটাগরি-১ (জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা) থেকে কাউন্সিলর হবেন ৭১ জন, ক্যাটাগরি-২ (ঢাকার ক্লাব) থেকে ৫৮ জন ও ক্যাটাগরি-৩ (অন্যান্য সংস্থা, এনএসসি, সাবেক খেলোয়াড়, শিক্ষা বোর্ড ইত্যাদি) থেকে ৪৫ জন।
কাল নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, ‘আজ (গতকাল) থেকে আমরা কাউন্সিলরদের নাম চেয়ে চিঠি পাঠানো শুরু করেছি। আশা করি, কালকের (আজ) মধ্যে চিঠিগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।’ চিঠিতে বলা হয়েছে, বিসিবির ২০১২ সালে সংশোধিত গঠনতন্ত্রের শর্তাবলি অনুসরণ করে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বোর্ড সভাপতি বরাবর মনোনীত কাউন্সিলরদের নাম পাঠাতে হবে। চিঠির সঙ্গে নাম পাঠানোর জন্য নির্দিষ্ট একটা ফরমও দিয়েছে বিসিবি। সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ক্লাব প্রধানের স্বাক্ষরসহ নাম পাঠাতে হবে ওই ফরমেই।
নির্দিষ্ট ফরমে নাম চাওয়ার বিষয়টা শুধু নতুনই নয়, কৌতূহলোদ্দীপকও। আগের নিয়ম অনুযায়ী মনোনীত কাউন্সিলরের নাম পাঠানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট ছক দিয়ে দিত বোর্ড। বিভিন্ন ক্লাব বা সংস্থা তাদের নিজস্ব প্যাডে সে অনুযায়ী নাম পাঠাত। কাউন্সিলরদের নাম চেয়ে চিঠি দিতে রহস্যজনক বিলম্ব ও নতুন এই ফরম প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে কাউন্সিলর বাছাইয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে। নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক বিসিবির বাইরের থাকা পক্ষের দাবি, পছন্দের প্রার্থীদের কাউন্সিলর করে আনতেই এই উপায় অবলম্বন করেছে নাজমুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অস্থায়ী কমিটি। তবে এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী অন্য ব্যাখ্যাই দিতে চাইলেন, ‘কাউন্সিলরের নাম পাঠানো নিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। বোর্ড হয়তো সেসব এড়ানোর জন্যই এই নিয়মটা করেছে।’ জানা গেছে, কেউ যেন ফরম জাল করে নাম না পাঠাতে পারে, সে জন্য বিশেষ নিরাপত্তাচিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে ফর্মে। জলছাপে আছে বিসিবির মনোগ্রামও।
চিঠি ও ফরম কীভাবে পাঠানো হচ্ছে, আলোচনা আছে সেটা নিয়েও। ঢাকার সব ক্লাবের চিঠি ও ফরম হাতে হাতে পাঠানো হয়েছে। ক্যাটাগরি-৩-এর চিঠিগুলো গেছে ডাক বা কুরিয়ারে। আর জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কিছু চিঠি গেছে কুরিয়ারে, কিছু হাতে হাতে। এ ব্যাপারে নিজামউদ্দিনের ব্যাখ্যা, ‘হরতালের কারণে সব চিঠি কুরিয়ারে পাঠানো নিশ্চিত করা যায়নি। তাই কিছু চিঠি হাতে হাতে ও কিছু চিঠি কুরিয়ারে গেছে। তবে কোথায় কে চিঠি গ্রহণ করছেন, আমরা সেটি লিখে রাখছি।’
২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কাউন্সিলরের নাম পেয়ে গেলে বিসিবি সে তালিকা পাঠাবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি)। এনএসসি এরপর আপত্তি-অনাপত্তির সুযোগ দিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। এরপর ঘোষিত হবে নির্বাচনের তারিখ। বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহীর আশা, ‘নাম পাওয়ার পর নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা সারতে আরও দুই সপ্তাহের মতো লাগতে পারে। আমাদের ইচ্ছা আছে ঈদের আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করার।’