Thank you for trying Sticky AMP!!

আগ্রহহীন সিরিজে মুশফিকদের চ্যালেঞ্জ

.

বিশ্বকাপ ফুটবলের রমরমা মৌসুমে ক্রিকেট কি তাহলে উপদ্রব! প্রশ্নটা উঠছে, বাংলাদেশের বাজারে সবচেয়ে বিক্রীত যে সিরিজ, সেই বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটও হালে পানি পাচ্ছে না। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ থেকে দিবারাত্রির তিন ওয়ানডের সিরিজ শুরু হচ্ছে। অথচ কাল পর্যন্তও বিসিবির টিভি সম্প্রচারস্বত্বের মালিকেরা কোনো ভারতীয় চ্যানেলের কাছে সিরিজের একটা ম্যাচও বিক্রি করতে পারেনি!
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়ে ক্রিকেট দেখার লোক খঁুজে পাওয়া যাবে কি না, সেই সংশয় বিসিবিতেও। ব্যাংক থেকে টিকিট বিক্রির হার খুবই হতাশাজনক। বিসিবির তবু আশা, ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামের বুথ থেকে নিশ্চয়ই লোকজন টিকিট কিনবে।
এলে ভালো, না এলে ইতিহাসে সম্ভবত প্রথমবারের মতো দর্শক-আগ্রহহীন একটি বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ হবে ঢাকায়। তার ওপর বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের দৃষ্টিতেই সিরিজ খেলতে আসা ভারতীয় দলটি ‘দ্বিতীয় শ্রেণির’। মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলিসহ নিয়মিত দলের অন্তত আট ক্রিকেটারই নেই বাংলাদেশ সফরের দলে। তো এমন একটা দলের খেলা কেন দেখতে আসবে মানুষ?
দেখতে আসার প্রধান কারণ বাংলাদেশ দলের জন্য নিজেদের ফিরে পাওয়ার সিরিজ। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজ, এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার হতাশায় পুড়েছে দল। টানা সাত ওয়ানডে হেরে জয়ের জন্য বুভুক্ষু এখন সেই দলটা। ঠিক এ রকম এক সময়ে আহত ‘বাঘে’র সামনে খর্বশক্তির ভারত মানেই তো সম্ভাবনার সলতেতে আগুনের ফুলকি! তা ছাড়া বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়ে আন্তর্জাতিক সিরিজ হলে একটা না একটা ম্যাচ বাংলাদেশ জেতেই। গত বিশ্বকাপের সময়ে হওয়া ইংল্যান্ড সফরের কথাই ধরুন। নটিংহাম ও বার্মিংহামের প্রথম আর শেষ ওয়ানডেতে হারলেও ব্রিস্টলে দ্বিতীয় ওয়ানডেটা বাংলাদেশ জিতেছিল ৫ রানে।
সম্ভাবনার পাল্লায় এত কিছু তুলে দিলে অবশ্য বাংলাদেশ দলের চাপে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইদানীং মানুষের জয়ের প্রত্যাশাও নাকি চাপ হয়ে যায়! কাল অবশ্য বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিক চাপ বলতে চাইলেন না এটাকে, ‘না, এটা বাড়তি চাপ নয়। এটা ঠিক, ২০১৪ সালে একটা ম্যাচও এখনো জিততে পারিনি। তবে এটাকে চাপ হিসেবে দেখছি না, প্রেরণা হিসেবে দেখছি। যদি ভালো খেলি, সব ঠিকঠাক থাকে তিনটা ম্যাচেই আমরা জিততে পারি।’ চাপের পরিবর্তে এটাকে অধিনায়ক বলছেন চ্যালেঞ্জ, ‘অন্য রকম একটা চ্যালেঞ্জ। ভারতীয় দলটা অনেক তরুণ, তবে শক্তিশালী। আইপিএলের যারা ভালো পারফরমার, তারা দলে এসেছে। মনে হচ্ছে চ্যালেঞ্জিং সিরিজই হবে।’
অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে সুরেশ রায়নার ভারতীয় দল হয়তো একটু পিছিয়েই থাকবে। তার পরও সিরিজটা ভারত হারলে পরিসংখ্যানের খাতায় ‘ভারত’ই লেখা থাকবে, ‘ভারতের দ্বিতীয় দল’ লেখা থাকবে না। সেটা জেনে চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন রায়নাও। সে চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাহলে একটু প্রতিশোধস্পৃহাও নেই! কাল সংবাদ সম্মেলনে রায়নার কথা শুনে কিন্তু তাই মনে হলো, “বাংলাদেশ অধিনায়ক সম্ভবত বলেছে আমরা ‘এ’ দল নিয়ে আসছি। কিন্তু আসল কথা হলো, এখানে দুটো দল খেলবে—ভারত ও বাংলাদেশ। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ছেলেদের জন্য ভারতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার এটা দারুণ এক মঞ্চ।”
ভারতীয় তরুণদের জন্য যা নিজেদের প্রমাণের মঞ্চ, বাংলাদেশের জন্য সেটাই নিজেদের ফিরে পাওয়ার উপলক্ষ। কে জিতবে চ্যালেঞ্জ?