ক্রীড়া প্রতিবেদক
খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমের পাশেই যে ভিআইপি বক্স, সেখানে বসে সনি নর্দে আর মামুনুল ইসলাম। প্রথমজনের হালকা চোট, এই ম্যাচে তাই ঝুঁকি নেননি কোচ যোসেফ আপুসি। দ্বিতীয়জনের জ্বর। শেখ জামালের প্রাণভোমরা নর্দে আর দলের অধিনায়ক মামুনুল দুজনই মাঠের বাইরে বসে কাল দেখলেন দলের জয়।
দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ৩-১ জয়, পেশাদার লিগে এর চেয়ে ভালো সূচনা আর হতে পারত না সদ্য ফেডারেশন কাপজয়ী শেখ জামালের।
নর্দে মাঠে থাকলে তিনিই আক্রমণে নেতৃত্ব দেন শেখ জামালের। নিজে গোল করেন, করানও। তাঁকে ঘিরেই শেখ জামালের খেলাটা আবর্তিত। মাঝমাঠ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন মেলে মামুনুলের কাছ থেকে। এ দুজন না থাকায় কাল নিজের প্রিয় ছক ৪-৩-৩ বদলে শুরুতে
৪-২-৩-১ ছকে যান শেখ জামাল কোচ আপুসি। শেষ ৩০ মিনিট অবশ্য ৪-৩-৩-এ ফেরেন, যে কৌশলের কাছে এবার মার খাচ্ছে সব দলই।
দুই মৌসুম পর পেশাদার লিগে ফিরে আসা চট্টগ্রাম আবাহনী নামে পাঁচজন ডিফেন্ডার নিয়ে। ওপরে একজন মাত্র স্ট্রাইকার রেখে চার মিডফিল্ডার। একমাত্র যে বিদেশি খেলোয়াড়কে নিয়ে মাঠে নামে তারা, তাঁকে কুড়ি মিনিট আগে তুলে নেওয়া হয়। শেষ সময়টা পুরোপুরি স্থানীয় খেলোয়াড় নিয়েও বেশ ভালোই খেলেছে চট্টগ্রাম আবাহনী।
পেশাদার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা চট্টগ্রাম আবাহনীর মাত্র দুজন খেলোয়াড়ের আছে। বাকিরা সবাই নিচের ডিভিশন থেকে উঠে আসা। এই আনকোরা অনভিজ্ঞ দল শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা শেখ জামালের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করেছে, একটি গোলও করেছে। আরেকটিও হতে পারত। সেটি হলে চাপেই পড়ে যেত শেখ জামাল।
দলে চোট সমস্যা, লিগে প্রথম ম্যাচ। তার ওপর ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনী প্রথম গোলটা খেয়ে বসে খানিকটা গোলরক্ষক পিরুর ভুলে। বাঁ প্রান্ত থেকে লিংকনের বক্সে তোলা ক্রস ওয়েডসন হেড করলে বল ধরেও রাখতে পারেননি পিরু। শীতের কুয়াশামাখা সন্ধ্যায় বল তাঁর হাত ফসকে বেরিয়ে গেলে ডিফেন্ডার নাসিরের টোকায় জালে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও নাসিরই করেছেন জয়সূচক একমাত্র গোলটি। সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা নাসির এখন রক্ষণ ছেড়ে ওপরে খেলার দাবি করতেই পারেন!
নর্দে, মামুনুল না থাকায় এদিন জামাল উইং ব্যবহার করেছে বেশি। ৫০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলও উইং থেকে আসা ক্রসে। ক্রস করেন সোহেল রানা, ডার্লিংটনের আলতো টোকায় বল জালে। জামালের তৃতীয় গোলও ডার্লিংটনের। আবু আবদুল্লার দূরপাল্লার শট চট্টগ্রাম আবাহনীর পোস্টের কোনায় লেগে প্রতিহত। ফিরতি বল একজনকে কাটিয়ে গোল করেন ডার্লিংটন।
গোল না করেও নজর কেড়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর সোহেল। পায়ে দুর্দান্ত ড্রিবলিং, ৮১ মিনিটে তাঁকে আটকাতে গিয়ে বক্সে ফাউল করেন নাসির। পেনাল্টিতে ৩-১, গোলদাতা মিলন।
তবু স্বস্তির জয়ই শেখ জামালের। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে নর্দে-মামুনুলকে ছাড়া বড় পরীক্ষাই হয়তো দিতে হতো আপুসির দলকে!