এ স্বাদ আগে পাননি মিরাজ
বাংলাদেশ দল যে আজ চার বোলার নিয়ে নামছে, সেটা অনুমিতই ছিল। অধিনায়ক মুমিনুল হকও টসের সময় নিশ্চিত করে দিলেন বিষয়টি। তখনই জাগল প্রশ্ন, তবে কি সত্যিই ঘটছে? একাদশ ঘোষণার পর নিশ্চিতভাবেই জানা গেল। হ্যাঁ, দেশের মাটিতে টেস্ট একাদশ থেকে বাদ পড়ার স্বাদটাও পাওয়া হয়ে গেল মেহেদী হাসান মিরাজের।
সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি বাংলাদেশকে বড় বিপদে ফেলে দিয়েছে। এমনিতেও বরাবরই রক্ষণাত্মক মনোভাব নিয়ে নামা বাংলাদেশ বেশি ব্যাটসম্যান নিয়ে নামতে চায়। দলের ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইনআপকে বাঁচাতে সাত ব্যাটসম্যান নিয়ে নামতে হয় নিয়মিত। সাকিব না থাকাতে সেটার প্রভাব পড়ছে বোলিংয়ে। চারজন বোলার নিয়ে প্রতিপক্ষকে দুবার অলআউট করতে নামার পরিকল্পনা আঁটতে হয় দলকে। গত তিন ম্যাচে অবশ্য মাত্র এক ইনিংসেই বোলিং করার সুযোগ পেয়েছে বোলাররা।
পাকিস্তানে তিন পেসার নামানো হলেও দেশের উইকেটে যে সে কাজ হচ্ছে না জানা ছিল। রুবেল হোসেনকে স্কোয়াডেই রাখা হয়নি। ফলে ইবাদত হোসেন ও আবু জায়েদকেই বোলিং আক্রমণে দেখা যাবে। তাইজুল ইসলামেরও দলে থাকা নিশ্চিত। বাকি স্থানটা কে নেয়, সেটা নিয়ে আগ্রহ ছিল। অফ স্পিনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ নাকি নাঈম হাসানকে নেওয়া হয়, সেটাই ছিল দেখার বিষয়। শেষ পর্যন্ত নাঈমই টিকে গেছেন। আর তাতেই ২০১৬ সালের পর ঘরের মাঠের কোনো টেস্টে দেখা যাচ্ছে না মিরাজকে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকের পর এমন কিছু দেখতে হয়নি। অভিষেকে ৭ উইকেটের পর পরের ম্যাচেই ম্যাচ জেতানো ১২ উইকেট। রাতারাতি বোলিং আক্রমণের ভরসা হয়ে উঠছিলেন। দেশের স্পিনবান্ধব উইকেটে তাইজুলের সঙ্গে তাঁর জুটি অধিনায়কদের ভরসার কারণ ছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করার পথে মিরাজের ১৫ উইকেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। দেশের উইকেটে ১১ ম্যাচে মাত্র ২১.৪৪ গড়ে ৬১ উইকেট এই অফ স্পিনারের। প্রতি ৪৫ বলে পান একটি করে উইকেট।
সমস্যার শুরু প্রতিপক্ষের মাঠে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বপ্নের সে শুরুর পর বাস্তবে নামেন নিউজিল্যান্ড সফরে। ২০১৭ সালের শুরুর সে সিরিজে ৪ ইনিংসে পেয়েছেন মোটে ৪ উইকেট। পরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে ভালো করলেও দক্ষিণ আফ্রিকায় পেসবান্ধব উইকেটে গিয়ে মাথা কুটে মরেছেন। পচেফস্ট্রুমে ২ ইনিংস মিলিয়ে ২৪৭ রান দিয়েও কোনো উইকেট না পেয়ে বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ডও গড়েছেন। বিদেশের মাটিতে সব মিলিয়ে ১১ ম্যাচে ২৯ উইকেট। সেগুলা এসেছে ৫৭.৬৮ গড়ে। প্রতিটি উইকেট পেতে ৮৮-এর বেশি বল খরচ করতে হয় তাঁকে।
বাংলাদেশের উইকেটে তবু মিরাজকে নিয়ে নামাটাই অভ্যাস ছিল বাংলাদেশের। ২০১৯ সাল সেটা বদলে দিয়েছে। এ বছরে ৪ টেস্ট খেলে মোটে ৬ উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্পিনবান্ধব উইকেটে পেয়েছেন ৩ টি। ভারতে ইন্দোর টেস্টের পারফরম্যান্স দল থেকেই ছিটকে দিয়েছিল। কলকাতা টেস্টে কনকাশন (মাথায় আঘাত জনিত) বদলি হিসেবে নেমে ব্যাট করতে পেরেছেন, মূল কাজ অর্থাৎ বোলিং করা হয়নি। এবার দেশের মাটিতেও বাদ পড়ার স্বাদ পেলেন মিরাজ।
সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিখিয়ে দেওয়া নিচু হয়ে যাওয়া ও স্পিনবান্ধব উইকেট থেকে সড়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন রাসেল ডমিঙ্গো। ওই ধরনের উইকেটের সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করে নেওয়া মিরাজও বাদ নতুন ঘরানার উইকেটের প্রথম টেস্টেই। নিজের বোলিং দক্ষতা নিয়ে ভারা ও নতুন কৌশল শেখার সময় কি চলে এল মিরাজের?
আরও পড়ুন
-
আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
-
নৌকার পাটাতনের নিচে রাখায় ভূমধ্যসাগরে অক্সিজেন–সংকটে মারা যান ৮ বাংলাদেশি
-
মৃত্যুসনদ জাল করার অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা
-
অভিযোগ সত্য কি না, সেটা আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম: ড. ইউনূস
-
মে মাসে গরম কেমন থাকবে, বৃষ্টি কতটা হবে জানাল আবহাওয়া অফিস