প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের রান ১৫২ থেকে দ্বিতীয় ম্যাচে বেড়ে হয় ১৬৬। পার্থক্যটা মাত্র ১৪ রানের। আর এতেই বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের চেহারা পাল্টে গেল!
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৫৩ রানের লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। আজ প্রথম ম্যাচের তুলনায় কাছাকাছি লক্ষ্যেই ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ হাঁটল সম্পূর্ণ উল্টো পথে। ১৬৭ রানের মাঝারি স্কোরের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৪৩ রানে। ২৩ রানের জয় দিয়ে সিরিজে ঘুরে দাঁড়াল জিম্বাবুয়ে।
প্রথম ম্যাচে শুরুতে রয়েসয়ে খেলে জুটি গড়ার চেষ্টা ছিল দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকারের। সেই চেষ্টায় সফল দুই ওপেনার প্রথম উইকেট জুটিতে ১০২ রান যোগ করে জয়ের ভিত গড়ে দেন। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে কী বুঝে বাংলাদেশ দল সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘরানার ব্যাটিং করল, কে জানে। প্রথম ম্যাচের মতো আজও যে ইনিংসের শুরুতে একটি জুটিই দরকার ছিল।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও একটি জুটির জন্য হাহাকার করছিলেন, ‘আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে জ্বলে উঠতে পারিনি। কোনো জুটি গড়তে পারিনি শুরুতে। যখন আপনি ১৬০+ রান তাড়া করবেন, তখন আপনার শুরুতে জুটি গড়তে হবে।’
আজ জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে দুই ওপেনারের মধ্যেই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা ছিল। সেই চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় ১৭ রানেই সৌম্য ও নাঈমকে হারায় বাংলাদেশ। চার বলের মধ্যে দুজনের ফেরাতেও খুব ক্ষতি হয়েছে, তা কিন্তু না। দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপের দল বাংলাদেশ ঠিকই প্রথম ছয় ওভারে পেয়েছে ৪২ রান। কিন্তু মাঝের ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বাঁহাতি স্পিন পেয়ে যেন চোখ চকচক করছিল সাকিব-মাহমুদউল্লাহদের।
জিম্বাবুয়ের এই বোলারের চার ওভার থেকে দ্রুত কিছু রান বের করার চেষ্টা ছিল বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সেই চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উল্টো উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তাঁর বোলিংয়ে একে একে আউট হন সাকিব (১২ রান), মাহমুদউল্লাহ (৪ রান) ও মেহেদী (১৫ রান)। বাংলাদেশ তিনজনকেই হারায় মাত্র ৭ রানের ব্যবধানে। ম্যাচের চেহারাটা পাল্টে যায় সেখানেই।
মাহমুদউল্লাহ অবশ্য ওই সময়ে নিজের ও সতীর্থদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের চেষ্টাকে সমর্থনই করেছেন, ‘আমার ব্যাটিং নিয়ে আমি হতাশ না। আপনি যখন ১৬০ তাড়া করবেন, তখন শুরুতে ঝুঁকি নিতেই হবে। যেহেতু দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম, তাই চাপে ছিলাম। তখন একটা ৫০ রানের জুটি হলে একটা ভিত তৈরি হয়ে যায়। সেখান থেকে আরেকটু টেনে নিলে জয়টা সহজ হয়।’
সাকিব-মাহমুদউল্লাহ না পারলেও অভিষিক্ত শামীম হোসেন ও আফিফ হোসেন ২৩ বলে ৪২ রানের জুটি গড়ে ঠিকই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে আউট হন শামীমও। তবে ম্যাচ শেষে অধিনায়কের প্রশংসা পেয়েছেন অভিষিক্ত ক্রিকেটার, ‘শামীম বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য দারুণ প্রতিভা। ওর আজ ভালো অভিষেক হয়েছে। কিন্তু আমরা জিততে পারিনি। ব্যাটসম্যান হিসেবে খুব ভালো করেছে। শেষ করতে পারলে আরও ভালো হতো। ওরও ভালো লাগত। আমাদেরও ভালো লাগত।’
ফিল্ডিংয়ের ভুলকেও হারের আরেক কারণ হিসেবে মনে করছেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। ২৫ জুলাইয়ে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে এসব ভুল দেখতে চান না তিনি। সমতায় থাকা (১-১) সিরিজটি জিততে চান অধিনায়ক, ‘আমরা ফিল্ডিংয়ে কিছু সুযোগ নিতে পারিনি। এই ভুলগুলো টি-টোয়েন্টিতে হয়। পরের ম্যাচে যেন এই ভুলগুলো না হয়, সেই লক্ষ্য থাকবে। যেহেতু একটা ম্যাচ আছে, এই ম্যাচটা আমরা ফাইনাল ম্যাচ হিসেবেও খেলব। সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ম্যাচটা জেতার চেষ্টা করব।’