টানা পাঁচ দিন মাঠে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন না—এ অজুহাত দেখিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মঈন আলী। তবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ঠিকই খেলে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার। এখন অবশ্য আবার টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার কথা ভাবছেন। এ বছরের শেষ দিকে পাকিস্তান সফরে যাবে ইংল্যান্ড। সেই সফরের টেস্ট দলে ডাক পেলে ‘অবশ্যই যাবেন’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন মঈন।
ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলে ২৮২৯ গড়ে ২৯১৪ রান ও ৩৬.৬৬ গড়ে ১৯৫ উইকেট পাওয়া মঈন দলের নতুন কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কাজে মুগ্ধ। ম্যাককালামের কোচিংয়ের প্রভাব যে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে, এটাই বলেছেন ৩৪ বছর বয়সী মঈন।
বিবিসির টেস্ট ম্যাচ স্পেশাল প্রোগ্রামে নিজের ফেরার বিষয়ে মঈন বলেছেন, ‘যদি ব্রেন্ডন ম্যাককালাম আমাকে দলে চান, নিশ্চয়ই আমি পাকিস্তান সফরে খেলব।’ পাকিস্তানে খেলার অভিজ্ঞতা এর আগেই হয়েছে মঈনের। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন, ‘আমি সেখানে কয়েক বছর আগে পাকিস্তান সুপার লিগে খেলেছি। কিন্তু এটা আর সেটা এক নয়। সেখানে আমার পরিবারের শিকড় গাঁথা আছে। ইংল্যান্ড দলের হয়ে তাই সেখানে খেলতে যাওয়াটা হবে দারুণ ব্যাপার।’
মঈনের জন্ম ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। কিন্তু তাঁর শিকড় তো পাকিস্তানেই। মঈনের দাদা ভাগ্য অন্বেষণে ইংল্যান্ড পাড়ি জমিয়েছিলেন আজাদ কাশ্মীর থেকে। ইংলিশের মতো উর্দু আর পাঞ্জাবি ভাষাটাও ভালোই পারেন মঈন।
মঈনের কাছে শিকড়ে ফেরার বিষয়টি যেমন রোমাঞ্চকর বিষয় বলে মনে হচ্ছে, তেমনি ২০০৫ সালের পর পাকিস্তানে ইংল্যান্ডের পূর্ণাঙ্গ সফর করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ ঠেকছে, ‘এটা ঐতিহাসিক এক বিষয় হবে। কারণ, অনেক বছর ধরে ইংল্যান্ড সেখানে সফরে যাচ্ছে না।’
গত বছরের শেষ দিকে অবশ্য পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বরে সিরিজ শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে নিরাপত্তার সমস্যা দেখিয়ে পাকিস্তান সফর বাতিল করে দেশে ফিরে যায় নিউজিল্যান্ড। এরপর সফর বাতিল করে ইংল্যান্ডও।
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর জঙ্গি হামলার পর প্রায় ছয় বছর নিরাপত্তাশঙ্কায় কোনো দল যায়নি পাকিস্তান সফরে। পাকিস্তানিদের ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখার অপেক্ষা ফুরোয় ২০১৫ সালে। ২টি টি-টোয়েন্টি ও ৩টি ওয়ানডে খেলতে দেশটিতে যায় জিম্বাবুয়ে। এরপর একে একে অনেক দলই পাকিস্তান সফর করেছে। এবার ইংল্যান্ডকেও পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
পিএসএল খেলার অভিজ্ঞতা থেকেই মঈন বলেছেন, ‘সেখানে কী ধরনের সমর্থন আর ভালোবাসা সবাই পায়, সেটা আমি জানি। এটা সত্যিকার অর্থেই দারুণ।’ কদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুর্দান্ত এক সিরিজ কাটিয়ে গেছেন পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া উসমান খাজা। মঈন কি তেমন কিছু করার সুযোগ পাবেন?