Thank you for trying Sticky AMP!!

এ অবস্থা থেকেও ছক্কা হতে দেননি পুরান।

পুরান থাকলে ছক্কা মেরেও শান্তি নেই ব্যাটসম্যানের

এ যেন ধারাভাষ্য নিয়ে বহু প্রচলিত সেই রসিকতার পুনরাবৃত্তি। ‘দারুণ শট, অনেক জোরে মেরেছেন, বল উড়ে যাচ্ছে সীমানার বাইরে! কিন্তু না, আউট! হয়ে হলে গেলেন ব্যাটসম্যান!’ এমনটা শুনে ধারাভাষ্যকারকে মনে মনে গালি দেননি এমন লোক কমই আছে। কিন্তু গতকাল আরেকটু হলেই হাস্যকর এমন পরিস্থিতিই বাস্তব হয়ে উঠেছিল আইপিএলে।

যেকোনো দিক থেকেই পুরানের চেষ্টা দেখলে অবিশ্বাস্য মনে হয়। ছবি: টুইটার

গতকাল আইপিএলে ৪২ বলে ৮৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসের সঞ্জু স্যামসন। এ ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ছিল ৭টি ছক্কার মার। এ কথায় অবশ্য স্যামসনের আপত্তি থাকতে পারে। বলতেই পারেন, মারলাম তো ৮টা। নিকোলাস পুরান ওভাবে বাগড়া না বসালে রানও তো চারটা বেশি হয়! অবিশ্বাস্য দক্ষতায় কাল সীমানার বাইরে থেকে ছক্কার বল ফিরিয়ে এনে সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছেন কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান।

ঘটনা রাজস্থান ইনিংসের অষ্টম ওভারের। মুরুগান অশ্বিন মাত্রই বোলিংয়ে এসেছেন। তৃতীয় বলেই তাঁকে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করলেন স্যামসন। গায়ের শক্তি খরচ করে একটা বল মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারলেন এই ব্যাটসম্যান। বল শুধু সীমানা ছাড়ায়নি, দড়ি পেরিয়ে তিন গজও পার হয়ে গিয়েছিল।এ বলের ভাগ্যে ছয় রানই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। কিন্তু পুরান ওসব মানলে তো!

বল তাঁকে টপকে চলে যাচ্ছে দেখেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন। সেটা দেখে অবশ্য ঝাঁপের চেয়ে উড়াল শব্দটাই ব্যবহার করতে ইচ্ছা হয়। জফরা আর্চার সেটা দেখে টুইট করে বসেছেন, ‘যাত্রা (ফ্লাইট) শুভ হোক, পুরান।’ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বলটা হাতে পুরেও নিলেন। কিন্তু ততক্ষণে বল ও পুরান দুজনই সীমানার বহু বাইরে। এত দুর্দান্ত এক ক্যাচ বৃথাই হয়ে থাকত, আর স্যামসনের নামের পাশে ঠিকই যোগ হতো ৬ রান। শেষ চেষ্টা হিসেবে পুরান যা করলেন তা আরও অবিশ্বাস্য। শরীরের নিম্নমুখী ত্বরণের মাঝেই কীভাবে যেন বল লুফে নেওয়া হাতকে এক পাশে নিয়ে এলেন। তারপর বলটা পাঠিয়ে দিলেন মাঠে। বলটাও যেন পুরানের এমন চেষ্টাকে ব্যর্থ হতে না দেওয়ার পণ করেছিল। ঠিকই সীমানার এ প্রান্তে এসেই মাতি ছুঁল সে। ব্যস, নিশ্চিত ছক্কাটা রূপ নিল মামুলি দুই রানে।

পুরানের এভাবে বল ফেরত দেওয়া দেখে সবাই তখন স্তব্ধ। এমনকি তাঁর ব্যাক আপ হিসেবে যাওয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও বলটা সঙ্গে সঙ্গে বোলারের কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে পেছনে ফিরে হাততালি দিয়ে সে প্রচেষ্টার প্রশংসা করে নিলেন। ব্যাটসম্যানরাও আর রান নেওয়ার চেষ্টা করছেন না দেখে তাতে যোগ দিলেন বোলার অশ্বিন ও উইকেটরক্ষক সরফরাজ খান। স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকার সে ক্যাচের ভিডিও টুইট করে প্রশংসা করেছেন, ‘আমার দেখা জীবনের সেরা সেভ। অসাধারণ।’ইয়ান বিশপও এ চেষ্টাকে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা সেভ বলে মেনে নিয়েছেন, এটা দেখতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান ভাবছেন।

শেষ দিকে রাহুল তেওয়াতির অবিশ্বাস্য এক ঝড়ে পাঞ্জাব ম্যাচটা বেশ আয়েশ করে জিতেছে। কিন্তু তাতে পুরানের এই ফিল্ডিং প্রচেষ্টার আবেদন কমেনি এক ফোঁটা।