ভারতের কাছে সিরিজটা বিশেষ কিছু। অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার দুঃস্বপ্ন, সেই টেস্ট শেষে বিরাট কোহলির ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দেশে ফেরা...কী দুশ্চিন্তাতেই না ছিল ভারত। কিন্তু অজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষে ২-১ ব্যবধানে ২০২০-২১ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জিতেই দেশে ফেরে ভারতীয় দল।
তবে এক বছর আগের সেই টেস্ট সিরিজে ক্রিকেটের বাইরে ভারতীয় খেলোয়াড়দের অনেক কার্যকলাপে ভীষণ বিরক্ত অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। করোনায় জবুথবু সে সময় ভারতের কয়েকজন ক্রিকেটার করোনাবিধি ভেঙে হোটেলের বাইরে এক রেস্টুরেন্টে খেতে যান। তা-ও এমন এক সময়ে, যখন অস্ট্রেলিয়ায় করোনার বিধিনিষেধে ভীষণ কড়াকড়ি। এ নিয়ে জটিলতায় সিরিজটাই বাতিল হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
সে সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক টিম পেইন এখনো যেন বিরক্ত। ভারতের চ্যানেল ভূত-সিলেক্টের প্রামাণ্যচিত্রনির্ভর সিরিজ ‘বান্দো মে হ্যায় দাম’-এ (ছেলেদের সাহস আছে) পেইন বলেছেন, ওই চার-পাঁচজন ভারতীয় ক্রিকেটারের কারণে সিরিজটাই ভেস্তে যেতে বসেছিল।
ওই চার-পাঁচজনের জন্য পুরো টেস্ট সিরিজই ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিল। কিসের জন্য? নান্দুজের এক বাটি চিপস?ভারতের নিয়ম ভাঙা নিয়ে বিরক্ত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক টিম পেইন
সিরিজের মাঝপথে একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, রোহিত শর্মা, শুবমন গিল, ঋষভ পন্ত, পৃথ্বী শ ও নবদীপ সাইনি মেলবোর্নের এক রেস্তোরাঁয় খেতে গেছেন। তড়িঘড়ি করে করোনা পরীক্ষা করা হয়, তাতে নেগেটিভ হওয়াতেই সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে খেলার অনুমতি পান রোহিতরা।
ভূত সিলেক্টের ডকু-সিরিজে এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিরক্তিই ঝরে পেইনের কণ্ঠে। তাঁর চোখে ওই ভারতীয় ক্রিকেটারদের আচরণ ছিল ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’। রোহিতদের ওই কাজের প্রভাব বোঝাতে পেইন বলেন, ‘ওই চার-পাঁচজনের জন্য পুরো টেস্ট সিরিজই ঝুঁকিতে পড়ে গিয়েছিল। কিসের জন্য? নান্দুজের এক বাটি চিপস? যেখানেই ওরা গিয়ে থাকুক না কেন, ওদের কর্মকাণ্ড দেখে আমার সত্যিই কাণ্ডজ্ঞানহীন মনে হয়েছে।’
অস্ট্রেলিয়ার পেসার ও বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও সে সময়ে অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমের মনোভাব বোঝাতে বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন ক্রিকেটার সত্যিই বেশ বিরক্ত হয়েছিল। বিশেষ করে তারা, যাদেরকে পরিবারের কাছ থেকে দূরে বড়দিন কাটাতে হয়েছিল। সফরের অংশ হওয়ার জন্য ওদের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়েছে। অথচ এরপর শুনল অন্য দলের খেলোয়াড়েরা নিয়মকানুনকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিয়ে ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছে!’
তবে ভারতের সে সময়ের অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানের চোখে, অস্ট্রেলিয়া ওই ছবি নিয়ে মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলতে চেয়েছে। ‘ছবিতে যে খেলোয়াড়দের দেখা গেছে ওরা আসলে “টেকঅ্যাওয়ে” অর্ডার নিতে গিয়েছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে ওদের বাইরে অপেক্ষায় থাকতে হয়। খবরে যা জানানো হয়, সেটি পুরোপুরি মিথ্যা’—রাহানের ঘটনার ব্যাখ্যা। মেলবোর্নে হারের পর অস্ট্রেলিয়ার এমন কাণ্ডের পেছনে অন্য কারণ দেখেন রাহানে, ‘আমরা জানতাম অস্ট্রেলিয়া মনস্তাত্ত্বিক খেলা শুরু করবে, বিশেষ করে মেলবোর্নে যা হয়েছে সেটির পর।’