Thank you for trying Sticky AMP!!

মুশফিক একা ঘুমাতে পারেননি সাত দিন

ক্রাইস্টচার্চ হামলার পর দেশে ফিরে সাতদিন একা ঘুমাতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ছবি: প্রথম আলো

১৫ মার্চ ২০১৯—সুযোগ থাকলে মুশফিকুর রহিম তারিখটা তাঁর জীবনের পাতা থেকে একেবারে মুছেই দিতেন। এই দিনে যা ঘটেছিল, তিনি কিছুতেই তা মনে রাখতে চান না। শুধু মুশফিক কেন, এক বছর আগে ক্রাইস্টচার্চের সেই ঘটনা ভুলে থাকতে চান গত বছর নিউজিল্যান্ড সফরের টেস্ট দলে থাকা বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারই। ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছিলেন অর্ধশতাধিক মানুষ। ওই হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা।

১৬ মার্চ শুরু হওয়ার কথা ছিল ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। ঘটনার দিন হ্যাগলি ওভালে ছিল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। মাঠের খুব কাছেই আল নুর মসজিদ, সেদিন সেখানেই জুমার নামাজ পড়ার কথা ছিল মুশফিক-তামিমদের। মসজিদে যখন নির্বিচার গুলি চলছিল, বাংলাদেশ দলের বাস মসজিদের একেবারেই কাছে। মাঠের সংবাদ সম্মেলন থেকে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর বের হতে কিছুটা দেরি না হলে হয়ে যেতে পারত বিরাট সর্বনাশ। গুলির শব্দ, রক্তাক্ত মানুষ দেখার এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আগে হয়নি ক্রিকেটারদের। সেদিন কোনোভাবে বেঁচে ফিরে অঝোরে কেঁদেছিলেন মুশফিক। এমন ঘটনার পর আর খেলার মানসিকতা থাকে না। বাতিল হয়ে যায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সফর অসমাপ্ত রেখে বাংলাদেশ দল ফিরে আসে দেশে।

সেই ভয়ংকর ঘটনার এক বছর পূর্তি মনে করিয়ে দিতেই কাল মুশফিক বললেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমত আর অনেকের দোয়ায় আমরা প্রাণে বেঁচে গেছি সেদিন। এক বছর হয়ে গেছে! ভুলেই গিয়েছিলাম। মনে করতেও চাই না। যেখানে ছিলাম, সেটা বর্ণনা করার মতো নয়। সবার আগে নিজের জীবন। আর বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, পরিবার, আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে জীবন একটাই। খেলার আগে অবশ্যই পরিবার। এটা সব সময়ই বিশ্বাস করি। ওই সময় পরিবারের কথাই বেশি মনে পড়ছিল। এ কারণে চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল বারবার।’

ভুলে যেতে চাইলেও কি ভোলা যায়! এরপরও যখন বিদেশে খেলতে গেছেন, মোস্তাফিজুর রহমানের মনে পড়েছে সেই রোমহর্ষ ঘটনা, ‘মাঝে মাঝে মনে পড়ে। বিশেষ করে বিদেশে খেলতে গেলে। কিন্তু খেলতে গেলে এসব নিয়ে ভাবলে কি আর চলে!’ মনে পড়ে সৌম্য সরকারেরও, তবে তিনিও মুশফিকের মতো ভুলে থাকতে চান ভয়ংকর সেই স্মৃতি, ‘ওই ঘটনার পর অন্তত সাত দিন আমি একা ঘুমাতে পারিনি। খুব ভয় লাগত। এমন ঘটনা যেন কারও জীবনে না ঘটে। এটা একেবারেই মনে রাখতে চাই না।’