Thank you for trying Sticky AMP!!

আরেকটি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ভারত, এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ: অস্ট্রেলিয়ার কাছেই ফাইনালে হার ভারতের

ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ—সংস্করণ বদলালেও ফাইনালে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়া হয়ে পড়েছে নিয়মিত ঘটনা। আইসিসির আগের দুটি বৈশ্বিক ইভেন্টের ফাইনালেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে ভারত। তবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারত সবচেয়ে সফল দল, সর্বশেষ তিনবারের মধ্যে দুবারের চ্যাম্পিয়ন। এবারের আসরেও ফাইনালে তারা এসেছে অপরাজিত থেকেই। তবে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের হারের সেই ধারা বদলাল না বেনোনিতেও।

ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে ১৪ বছর পর প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, তাদের ইতিহাসে যেটি চতুর্থ। হারজাস সিংয়ের অর্ধশতকের সঙ্গে হ্যারি ডিক্সন, হিউ উইবগেন ও অলিভার পিকের ৪০ পেরোনো ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া তুলেছিল বিশ্বকাপের ফাইনালের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৫৩ রান। রেকর্ড রান তাড়া করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ভারত, ৪৩.৫ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ১৭৯ রানের মধ্যেই। কোনো জুটি বা ইনিংসই ভারতকে সে অর্থে আশা জোগাতে পারেনি।

Also Read: অ্যাডিলেডে অদ্ভুত কাণ্ড: অস্ট্রেলিয়া যখন ‘হাউজ্যাট’ বলতে ভুলে গেল

২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই বাংলাদেশের কাছে ফাইনালে হেরেছিল ভারত, এরপর অবশ্য গতবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারতই জিতেছিল শিরোপা। এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে আবার শিরোপা হাতছাড়া হলো তাদের। ফাইনালের আগে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক উইবগেন বলেছিলেন, তারা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত, লড়াই করতে ভালোবাসেন। সে চ্যালেঞ্জে ভারতকে পাত্তাই দিল না তারা। এবারের আগে ২০১৮ সালে শেষ ফাইনাল খেলেছিল অস্ট্রেলিয়া, সেবার তারা হেরেছিল ভারতের কাছেই।

অর্ধশতক করেন হারজাস

বেনোনির উইলোমুর পার্কে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় অস্ট্রেলিয়া। এক প্রান্তে ডিক্সন ঝোড়ো শুরু করলেও তৃতীয় ওভারে কোনো রান না করেই ফেরেন আরেক ওপেনার স্যাম কন্সটাস। অবশ্য অধিনায়ক হিউ উইবগেনের সঙ্গে ডিক্সনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওঠে ৭৮ রান। এরপর জোড়া ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া, নামান তিওয়ারির পরপর ২ ওভারে ফেরেন ডিক্সন ও উইবগেন। ডিক্সন করেন ৪২ রান, উইবগেন থামেন অর্ধশতকের ২ রান আগে।

Also Read: ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ হয়ে মুশফিককে মনে করালেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান

অস্ট্রেলিয়াকে এরপর টানেন হারজাস সিং ও অলিভার পিক। দুজন চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬৮ বলে তোলেন ৬৬ রান। ৬৪ বলে ৫৫ রান করে হারজাস ফেরার পর দ্রুতই রাফ ম্যাকমিলানও থামেন। ৪০তম ওভার শেষ হওয়ার আগেই ১৮৭ রান তুলতে ৬ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া বেশ চাপেই ছিল।

তাদের এগিয়ে নেন পিক, যিনি ছিলেন শেষ পর্যন্ত। চার্লি অ্যান্ডারসন ও টম স্ট্রেকারকে নিয়ে সপ্তম ও অষ্টম উইকেট জুটিতে আরও ৬৬ রান যোগ করেন তিনি। ৪৩ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৬ রান করে। ৩৮ রানে ৩ উইকেট নেন ভারতের পেসার রাজ লিম্বানি, তবে ফাইনালে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ঠিকই পায় অস্ট্রেলিয়া।

রান তাড়ায় ভারতের ইনিংস গতি পায়নি কোনো পর্যায়েই। একপাশে আদর্শ সিং ছিলেন, কিন্তু অন্য পাশে উইকেট পড়েছে নিয়মিত। পেসার মালি বিয়ার্ডম্যান ও অফ স্পিনার ম্যাকমিলানের তোপে ৯১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। সেমিফাইনালে ৩২ রানে ৪ উইকেট হারালেও ঐতিহাসিক জুটিতে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছিল ভারত। এবার আর তারা তেমন কিছু করতে পারেনি।

৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা বিয়ার্ডম্যান

শেষ পর্যন্ত আদর্শও ৭৭ বলে ৪৭ রান করে থামেন বিয়ার্ডম্যানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার জয় তখন হয়ে পড়ে সময়ের অপেক্ষা। মুরুগান অভিষেক ও নমন অবশ্য সে অপেক্ষা লম্বাই করেন ইনিংসে তখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪৬ রানের জুটিতে। ভিডলারের বলে অধিনায়ক উইবগেনের হাতে ক্যাচ দিলে শেষ হয় অভিষেকের ৪২ রানের ইনিংস, ঠিক আগের বলেই তাঁর সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন উইবগেনই।

শেষ উইকেট জুটিও অস্ট্রেলিয়াকে অপেক্ষায় রাখে ৩.২ ওভার। তবে অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপাবঞ্চিত করার কথা হয়তো ভাবতে পারেননি তাঁরাও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

অস্ট্রেলিয়া অনূর্ধ্ব-১৯: ৫০ ওভারে ২৫৩/৭ (হারজাস ৫৫, উইবগেন ৪৮, পিক ৪৬, ডিক্সন ৪২; লিম্বানি ৩/৩৮, নামান ২/৬৩, সৌমি ১/৪১, মুশির ১/৪৬)।

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৩.৫ ওভারে ১৭৪ (আদর্শ ৪৭, অভিষেক ৪২, মুশির ২২; বিয়ার্ডম্যান ৩/১৫, ম্যাকমিলান ৩/৪৩, ভিডলার ২/৩৫)।

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৭৯ রানে জয়ী।