
ব্লেসিং মুজারাবানির লাফিয়ে ওঠা বলটা ছুঁয়ে গেল মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। জিম্বাবুয়ের উইকেটকিপার নিয়াশো মায়াভোর গ্লাভসে বল যেতেই শেষ হয় তাঁর আরও একটি ইনিংস—০, ২, ৪, ৪ যার ক্রম। টেস্টে সর্বশেষ চার ইনিংসে দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি মুশফিক, ফিফটির দেখা পাচ্ছেন না ১২ ইনিংস ধরে।
দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ব্যাটে রানের খরা চললে সেটা আলোচনার বিষয় হবে বৈকি। সে আলোচনা আজ উঠল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষেও। তবে মুশফিকের দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও কিছুদিনের অধিনায়ক মুমিনুল হক তাঁর অগ্রজ ক্রিকেটারের এমন ‘অফ ফর্ম’ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন।
আমি কোনোভাবেই ওনাকে নিয়ে চিন্তিত নই। এত দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, উনি জানেন কীভাবে ফিরে আসতে হয় আর কীভাবে রান করতে হয়। এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়, উনি বাংলাদেশ দলের জন্য কী করেছেন আর ওনার রানটা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, কতটুকু কী করতে পারেন।মুমিনুল হক, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান
সরাসরি মুমিনুলের কাছেই শুনুন মুশফিকের ফর্ম নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি কোনোভাবেই ওনাকে নিয়ে চিন্তিত নই। এত দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন, উনি জানেন কীভাবে ফিরে আসতে হয় আর কীভাবে রান করতে হয়। এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয়, উনি বাংলাদেশ দলের জন্য কী করেছেন আর ওনার রানটা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, কতটুকু কী করতে পারেন।’
বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে মুশফিকের অর্জন আসলেই ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলা থেকে মাত্র ৫ ম্যাচ দূরে দাঁড়িয়ে তিনি। টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন ৩টি, সেঞ্চুরি ১১টি। রঙিন পোশাকের ক্রিকেটকে এরই মধ্যে বিদায় বলে দেওয়া মুশফিক এখন শুধু টেস্ট ক্রিকেটটাই খেলছেন। অন্য সংস্করণ খেলছেন না বলে শুধু লাল বলের ক্রিকেটে মনোযোগ আরও বেশি দিতে পারার কথা এখন। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টেও তাঁর ব্যাট নিষ্প্রভই থাকল, যেমন ছিল ওয়ানডে থেকে অবসরের আগে শেষ তিন ইনিংসে (২, ০, ১)।
আমার মনে হয়, টেস্ট ক্রিকেটে উনি আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারবেন। দুই সংস্করণ থেকে যেহেতু অবসর নিয়েছেন, এখন এক সংস্করণে উনি মনোযোগ দেবেন। আগে যত ভালো খেলতেন, এখন আরও ভালো খেলবেন।মুমিনুল হক, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান
৯৫টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতায় পুষ্ট মুশফিকের ওপর থেকে তবু আস্থা হারাচ্ছেন না মুমিনুল। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বরং বিশ্বাস—মুশফিকের ব্যাট থেকে এখনো ভালো কিছু আসা সম্ভব এবং আগের চেয়ে সে সম্ভাবনা এখনই বেশি। মুমিনুলও মনে করেন, শুধু এক সংস্করণের ক্রিকেটই খেলছেন বলে মুশফিকের পক্ষে এখন আগের চেয়েও ভালো করা সম্ভব, ‘আমার মনে হয়, টেস্ট ক্রিকেটে উনি আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারবেন। দুই সংস্করণ থেকে যেহেতু অবসর নিয়েছেন, এখন এক সংস্করণে উনি মনোযোগ দেবেন। আগে যত ভালো খেলতেন, এখন আরও ভালো খেলবেন। কারণ, একটা সংস্করণ যখন খেলবেন, তখন একটা লাইনেই আপনি থাকবেন। পারফর্ম করাটা সহজ হয়ে যায়।’