
এক দিন হাতে রেখেই জাতীয় ক্রিকেট লিগে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে খুলনা। চার দিনের ম্যাচের তৃতীয় দিনে আজ ৩৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারালেও অমিত মজুমদার ও ইয়াসিন মুনতাসির অপরাজিত থেকে খুলনাকে জেতান।
শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে স্বাগতিক খুলনা নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩১৩ রানে অলআউট হওয়ার পর বরিশাল নিজেদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। বরিশালকে ফলোঅনে নামানোর পর ৪ উইকেটে ১১৯ রানে গতকাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে তারা। আজ ১০৫ রানে বাকি ৬ উইকেট হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বরিশাল ২২৮ রানে অলআউট হওয়ায় জয়ের জন্য মাত্র ৩৮ রানের লক্ষ্য পায় খুলনা।
বরিশালের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০.৫ ওভার বোলিং করে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেওয়া অফ স্পিনার আফিফ হোসেন খুলনার জয়ে বড় অবদান রাখেন। বরিশালের প্রথম ইনিংসে হ্যাটট্রিক করেন আফিফ। বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫১ রানে ২ উইকেট নেওয়া আফিফ ম্যাচসেরা।
বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করা অভিজ্ঞ শামসুর রহমান ৪৪ রানে আউট হন। শামসুল ইসলাম (২৩), রুয়েল মিয়া (১০) ও ইয়াসিন আরাফাতের (১৩) দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ইনিংস হারের শঙ্কা পেরিয়ে খুলনাকে লক্ষ্য দিতে পেরেছিল বরিশাল। অল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনার ২টি উইকেট নেন শামসুর।
জাতীয় লিগে আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে স্বাগতিক সিলেটের বিপক্ষে ৩০ রানে পিছিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ময়মনসিংহ বিভাগ। আরিফুল ইসলাম ও আবু হায়দারের সেঞ্চুরিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪০১ রানে অলআউট হয় ময়মনসিংহ। তাড়া করতে নেমে সৈকত আলীর ১৭৫ ও তোফায়েল আহমেদের ৭৯ রানে ৪৮৯ রানে অলআউট হয় সিলেট। এরপর বিনা উইকেটে ৫৮ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে ময়মনসিংহ।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৯৮ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করা সিলেটের হয়ে আজ ফিফটি তুলে নেন তোফায়েল। দশে নেমে ১১০ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন সিলেটের পেসার ইবাদত হোসেন। প্রথম ইনিংসে ময়মনসিংহের রাকিবুল হাসান ১৬৮ রানে নিয়েছেন ৯ উইকেট। আগের দিন ৫ উইকেট নেওয়া এই বাঁহাতি স্পিনার আজ নিয়েছেন আরও ৪ উইকেট। অবশ্য জাতীয় লিগে এক ইনিংসে ৮ উইকেট নেওয়ার কীর্তি এর আগে থেকেই আছে। দেশের প্রধান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আসর জাতীয় লিগে ইনিংসে ৯ উইকেট নেওয়া তৃতীয় বোলার রাকিবুল। আগের দুজনও ছিলেন বাঁহাতি। জাতীয় দলের সাবেক বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাক একাই কীর্তিটা গড়েছেন দুবার। প্রয়াত বাঁহাতি স্পিনার মোশাররফ হোসেন ইনিংসে ৯ উইকেট পেয়েছেন একবার।
সিলেটে একাডেমি মাঠে রংপুরের বিপক্ষে ৭৫ রানে এগিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ঢাকা বিভাগ। গতকাল ৮ উইকেটে ৩০৮ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করা রংপুর আজ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৫৮ রানে অলআউট হয়। আগের দিনই সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া নাঈম ইসলাম এক প্রান্তে ১৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ঢাকার হয়ে ৩টি করে উইকেট রিপন মন্ডল ও তাইবুর রহমানের।
২২১ রানে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়া ঢাকা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ২১২ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে। ৪৬ রানে আশিকুর রহমান এবং ৮৬ রানে অপরাজিত আছেন জিসান আলম। আলাউদ্দিন বাবু ও রবিউল ইসলাম ১টি করে উইকেট নেন।
শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৩৩ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল চট্টগ্রাম বিভাগ। আগের দিন ২৬ রানে অপরাজিত থাকা ইয়াসির আলী আজ মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি। ৯২ রানে আউট হন।
ইরফান শুক্কুর ৪১ ও হাসান মুরাদ ৩২ রান করেন। প্রথম ইনিংসে ৪০১ রানে অলআউট হওয়া চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে ২৭৭ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৯৬ রানে অলআউট হওয়া রাজশাহী জয়ের জন্য ৪৮৩ রানের লক্ষ্যে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে।
প্রীতম কুমার (৫৬) ও এস এম মেহরোবের (৫৪) অপরাজিত ইনিংসে ৪ উইকেটে ২১৯ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে রাজশাহী। জয় তুলে নিতে আরও ২৬৪ রান চাই দলটির। চট্টগ্রামের হয়ে ২ উইকেট নেন আহমেদ শরীফ।