দারুণ এক জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরু
দারুণ এক জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরু

১৭ বছর বয়সী কিশোরের তাণ্ডবের পরও কোহলিদের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

নিজেদের ব্যাটিংয়ে রেকর্ডের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ১ ওভারে ৩৩ রান নেওয়া রোমারিও শেফার্ড রেকর্ড গড়ে ফিফটি করেন ১৪ বলে। এর আগে দারুণ শুরু এনে দেন জ্যাকব বেটহেল ও বিরাট কোহলিও। যা বেঙ্গালুরুকে এনে দেয় ২১৩ রানের সংগ্রহ।

কিন্তু চেন্নাই সুপার কিংসের ১৭ বছর বয়সী আয়ুশ মাহাত্রের দুর্দান্ত ৯৪ রানের ইনিংসের সামনে ম্লান হতে বসেছিল কোহলিদের কীর্তি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ১ বলে ৪ রানের হিসাব মেলাতে পারেনি মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। চেন্নাইকে হারতে হয়েছে মাত্র ২ রানে।

ম্যাচটা অবশ্য আগেই জিততে পারত বেঙ্গালুরু। শেষ দিকে চেন্নাইয়ের ভরসা হয়ে ওঠা রবীন্দ্র জাদেজার ক্যাচসহ বেশ কিছু হাতের ক্যাচ ফেলেছে বেঙ্গালুরুর ফিল্ডাররা। যা দলটির জন্য ম্যাচটাকে কঠিন করে তুলেছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি কোহলিরাই হেসেছেন।

এদিন জবাব দিতে নেমে ভালো শুরু পায় চেন্নাইও। ৪ ওভারেই তারা করে ৪৯ রান। যেখানে চতুর্থ ওভারেই আসে ২৬। পরের ওভারে অবশ্য প্রথম উইকেট হারায় তারা। ১৪ রান করে আউট হন শেখ রশিদ। ৫ রানের বেশি করতে পারেননি স্যাম কারানও। চেন্নাইয়ের রান তখন ৫৮। দ্রুত ২ উইকেট হারালেও হাল ছাড়েনি চেন্নাই। মাহাত্রে ও জাদেজা ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে লড়াইয়ে রাখেন। দশম ওভারে দলের রান ১০০ পার করেন এ দুজন। শেষ ৭ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ৭৪ রান।

যা এক পর্যায়ে নেমে আসে ২৪ বলে ৪৩ রানে। এর মধ্যে ১৬তম ওভারে জীবন পান জাদেজা ও মাহাত্রেকে। তবে জীবন পেয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি মাহাত্রে। ফিরেছেন ৪৮ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৪ রান করে। এরপরও মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে চেন্নাইয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখেন জাদেজা। শেষ ২ ওভারে চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। যা শেষ ওভারে ৬ বলে ১৫ থেকে নেমে আসে ১ বলে চারে। কিন্তু শেষ বলে ইয়াশ দয়াল প্রয়োজনীয় চারটি মারতে পারেননি। ফলে তলানিতে থাকা চেন্নাইকে ১১ ম্যাচে ৯ নবম হারের স্বাদ পেতে হয়।

বৃথা গেল আয়ুশ মাহাত্রের দারুণ এক ইনিংস

এর আগে টস হারা বেঙ্গালুরুকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন জ্যাকব বেথেল ও বিরাট কোহলি। দুজন মিলে প্রথম উইকেট জুটিতেই দলকে এনে দেন ৫৯ বলে ৯৭ রান। ৩৩ বলে ৫৫ রান করা বেটহেলকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মাতিশা পাতিরানা। দলীয় ১২১ রানে ফেরন কোহলিও। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৬২ রান। এরপর ঝড় তোলার বাকি কাজটা করেন রোমারিও শেফার্ড। তিনি যখন উইকেটে যখন এসেছেন, তখন ইনিংসে বল বাকি ১৪। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রান ৫ উইকেটে ১৫৭।

সেখানে নেমে মাত্র ১৪ বলে ফিফটি করেছেন শেফার্ড। যা আইপিএলে দ্রুততম ফিফটির তালিকায় যৌথভাবে দ্বিতীয়। সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড যশস্বী জয়সোয়ালের, ১৩ বলে। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে শেষ ২ ওভারে বেঙ্গালুরু তুলেছেন ৫৪ রান। আইপিএলে ইনিংসের শেষ ২ ওভারে এত রান আগে কখনো হয়নি। তাতে একটা সময়ে ১৮০ হবে কি না সেই শঙ্কায় থাকা বেঙ্গালুরু তুলেছে ২১৩ রান।

ম্যাচ শেষে কোহলি ও ধোনি

এসব কৃতিত্বই শুধু শেফার্ডের। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তিনি ও টিম ডেভিড ১৫ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েছেন, যেখানে শেফার্ডের অবদানই ১৪ বলে ৫৩। এই জুটিতে মাত্র একটি বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন ডেভিড। যেহেতু শেফার্ড বাকি থাকা ১৪টি বলই খেলেছেন, তাই সেটিও তার পাওয়ার কথা না। তবে ১৯তম ওভারে খলিল আহমেদের একটি বলে নো বল করায় সেই সুযোগ পেয়েছেন।

১৪ বলে ফিফটি করেছেন শেফার্ড

চেন্নাইয়ের হয়ে এদিন শেষ দুই ওভার বোলিং করেছেন খলিল ও পাতিরানা। ইনিংসের ১৯তম ওভারে খলিলের এক ওভারেই শেফার্ড তোলেন ৩৩, (একটি নোসহ)। আইপিএলে চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা কোনো বোলারের করা এটিই সবচেয়ে খরুচে ওভার। এরপর পাতিরানার শেষ ওভারে ওঠে ২৪।

শেষ ২ ওভারে এদিন শেফার্ড নিয়েছেন ৫২। টি-টোয়েন্টিতে শেষ ২ ওভারে এর চেয়ে বেশি রান কেউ কোনো দিন নিতে পারেননি। সমান ৫২ রানই তুলেছিলেন নেপালের দীপেন্দ্র সিং। শেফার্ডের ইনিংসটিই মূলত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বেঙ্গালুরুকে এনে দিয়েছে দারুণ এক জয়।