১৭ বছর পর কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) গ্রাউন্ডে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০০১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে এই মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। কোনোটিতেই বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি। দুটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হারতে হয়েছে, অন্যটিতে ২৮৮ রানে। একতরফা লড়াই হলেও এই তিন ম্যাচ অনেক দিন মনে রাখার মতো বেশ কিছু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে। টেস্ট ক্রিকেট প্রথম ও শেষবারের মতো অবিশ্বাস্য এক কাণ্ডও দেখেছে এই মাঠে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্টে।
২০০১ সালে এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচটিতে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ ৯০ রানেই। এরপর শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা করলেন রান-উৎসব। ওপেনার মারভান আতাপাত্তু (২০১) ডাবল সেঞ্চুরি ছোঁয়ার তিন বল পর ড্রেসিংরুমে হাঁটা ধরলেন। আর তাতেই ইতিহাস। টেস্ট ক্রিকেট প্রথমবার দেখল ‘রিটায়ার্ড আউট’। দ্বিতীয় রিটায়ার্ড আউট দেখতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৫০ রান করে মাহেলা জয়াবর্ধনেও ছেড়ে যান মাঠ। এমন আউট এরপর দেখেনি টেস্ট ক্রিকেট। শ্রীলঙ্কা যখন ইনিংস ঘোষণা করল, স্কোরকার্ডটাও অদ্ভুত দেখাচ্ছিল—৫৫৫/৫ ডি.।
তাপাত্তুদের রিটায়ার্ড আউট কাণ্ডের পরের দিন এসএসসিতে মোহাম্মদ আশরাফুলের ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরি। টেস্ট অভিষেকের দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ এক সেঞ্চুরি করে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে শিরোনাম হয়ে গেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান। ১৭ বছর ৬৩ দিন বয়সে সেঞ্চুরি, টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে কম বয়সে আর কেউ সেঞ্চুরি করতে পারেননি। পাকিস্তানের মুশতাক মোহাম্মদের (১৭ বছর ৮২ দিন) রেকর্ড ভাঙা আশরাফুলের সেই রেকর্ড এখনো টিকে আছে।
২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম তিন বলেই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক পেয়েছিলেন চামিন্ডা ভাস। শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি পেসার চার বছর পর এসএসসিতে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের বিপক্ষেই করেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরিটি। সেটিও ৮ নম্বরে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই তাঁর এই একটাই সেঞ্চুরি।
এসএসসিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্টে খেলেছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এই দুই ম্যাচে পেয়েছেন ১৯ উইকেট। ২০০১ ও ২০০৭ সালে চার ইনিংসে বোলিং করে প্রথম তিনবারই পেয়েছিলেন ৫টি করে উইকেট।
২০০২ সালে টেস্ট অভিষেকে ব্যাট হাতে চমকে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের পেসার তাপস বৈশ্য। প্রথম ইনিংসে দল ৮৬ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর উইকেটে গিয়ে ৫২ রানে অপরাজিত থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরেন বৈশ্য। টেস্টে বাংলাদেশের কোনো ৯ নম্বর ব্যাটসম্যানের প্রথম ফিফটি ছিল সেটি।