দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের ধাক্কা দিতে পারেন জাম্পা

বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। তবে হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ঠিক সময়ে জয়ের ধারা খুঁজে পেয়েছে তারা। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার যাত্রাটা ছিল অন্য রকম। শুরু খুব ভালো হলেও লিগ পর্বের শেষে এসে দাপট কিছুটা হলেও হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। ইডেন গার্ডেনে আজ মঞ্চটা যেহেতু সেমিফাইনালের, দুই দলের মধ্যেই নকআউটের স্নায়ুচাপ কাজ করবে। দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রজন্ম ‘চোকার’ উপাধি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইবে। আর অস্ট্রেলিয়া ধরে রাখতে চাইবে তাদের ট্রফি উঁচিয়ে ধরার অভ্যাস। সব মিলিয়ে ভালোর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মন্দটাকেও ভালোতে রূপ দেওয়ার প্রচণ্ড মানসিক শক্তি অস্ট্রেলিয়াকেই কিছুটা এগিয়ে রাখবে।

মুম্বাইয়ে কাল ভারত-নিউজিল্যান্ডের প্রথম সেমিফাইনালে অনেক রান দেখলাম। কলকাতায়ও নিশ্চয়ই উইকেট ভালো থাকবে। দুই দলই পেস সমৃদ্ধ। দর্শক হিসেবে আমি তাই উইকেটে বাউন্স চাইব। এটা দুই দলকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং-বোলিংয়ের সুযোগ করে দেবে। নকআউট ম্যাচ বলে দুই দলই টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে চাইবে।

অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ট্রাভিস হেড বিশ্বকাপে যোগ দিয়েছেন দেরিতে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটা শতকের পর বড় ইনিংস খেলেনি। ওয়ার্নার ইনিংস আগলে রাখছেন ঠিকই, কিন্তু ডি কক বা রোহিতের মতো স্ট্রাইক রেটে রান তুলছেন না। স্মিথ, লাবুশেনরাও দলকে ভালো জায়গায় নিতে পারেন। তবে এককভাবে দলকে টেনে নেওয়ার মতো প্রভাব বিস্তারকারী ইনিংস দেখিনি। ম্যাক্সওয়েল ও মার্শ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান। দুজনই সর্বশেষ দুই ম্যাচে বড় ইনিংস খেলেছেন, যা অস্ট্রেলীয়দের চাঙা করেছে।

অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাটিং করতে পারলে ৩১০-৩২০ রান করে ফেলতে পারে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সেটা কেন হতে দেবে? বড় রান তাড়ার চাপের মুখে তাদের ভাঙতে দেখেছি বেশ কয়েকবার। প্রোটিয়ারা নিশ্চয়ই অস্ট্রেলিয়াকে ২৭০-২৮০ রানে আটকে রাখতে চাইবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইয়ানসেনের মধ্যে ভবিষ্যতের একজন সিমিং অলরাউন্ডারকে দেখতে পাচ্ছি। নতুন বলে সে দারুণ কার্যকর। রাবাদা এখন ফার্স্ট চেঞ্জে আসছেন। তিনি বরাবরই বিশ্ব মানের। আর কোয়েৎজির কথা তো না বললেই নয়। নামে বড় তারকা না হলেও উইকেট নেওয়ায় তিনিই এগিয়ে থাকবেন। স্পিনার মহারাজের কাছে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পাশাপাশি উইকেটের দাবি থাকবে।

অস্ট্রেলিয়ার বোলিং অনেকটা অভিজ্ঞ। স্টার্ক, কামিন্স, হ্যাজেলউডরা সবাই পরীক্ষিত। তবে টানা খেলার কারণেই কি না, তাঁদের সবার গতি কিছুটা কমে এসেছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বোলিংটা এই বিশ্বকাপে প্রায় একাই টেনে নিচ্ছেন জ্যাম্পা। উইকেট নিচ্ছেন, রান কমিয়ে রাখছেন—দলের জন্য যখন যা দরকার তা-ই করছেন। পেস বোলিং পছন্দ করা দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের ধাক্কা দিতে জাম্পাই হবেন গুরুত্বপূর্ণ।

অস্ট্রেলিয়া কি আরেকটি ফাইনালে উঠতে পারবে?

এটাও ঠিক, প্রোটিয়ারা তাদের দিনে কী করতে পারে তা এই বিশ্বকাপেই দেখা গেছে। ডি কক ৪টি শতক করেছেন। ফন ডার ডুসেনের মধ্যে একজন পরিণত বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানের ছায়া দেখছি। আর মার্করাম ক্ল্যাসিক্যাল ব্যাটসম্যান হয়েও খুব আক্রমণাত্মক। এঁরা সবাই রানে আছেন। পাঁচ ও ছয়ে ঝড় তোলার জন্য ক্লাসেন ও মিলার তো আছেনই।