
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া-ভারত কিংবা অন্য কোনো ম্যাচ নিয়ে এত আলোচনা হয় না, যতটা হয় কোনো টুর্নামেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি বা এশিয়ান ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা এসিসির কাছে তাই এই ম্যাচ যেন সোনার ডিম পাড়া হাঁস। যেকোনো টুর্নামেন্টের সূচি করার সময় এটা নিশ্চিত করা হয়, যেন এক বা একাধিকবার ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়।
তবে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল আথারটন মনে করেন, গত মাসে এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে যে ধরনের উত্তেজনা ও বিবাদ দেখা গেছে, এরপর আইসিসির উচিত নয় প্রতি টুর্নামেন্টে এই দুই দলের ম্যাচ ‘নিশ্চিত’ করে ফিকশ্চার সাজানো।
আইসিসি টুর্নামেন্টের ড্র পদ্ধতিতে আরও স্বচ্ছতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আথারটন। দ্য টাইমসে লেখা এক কলামে তিনি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সংখ্যা কমানোরও প্রস্তাব দিয়েছেন। কলামে আথারটন লিখেছেন, ‘এই ম্যাচটা যতটা বিরল, ততটাই দামি। বরং বিরল বলেই এর দাম এত বেশি। আইসিসির সম্প্রচারস্বত্ব যে এত টাকায় বিক্রি হয়, তার অন্যতম কারণ এই ম্যাচ, যেমন সর্বশেষ ২০২৩-২৭ চক্রে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার।’
যখন এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অন্যভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, তখন সেটার যৌক্তিকতা তো আরও কমে যায়। তাই ভবিষ্যতের সম্প্রচারস্বত্ব চক্রে আইসিসির ড্র প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়া উচিত। তাতে যদি ভারত-পাকিস্তান প্রতিবার মুখোমুখি না-ও হয়, দোষ কোথায়।সাবেক অধিনায়ক মাইকেল আথারটন
আথারটনের মতে, দ্বিপক্ষীয় সিরিজের মূল্য কমে যাওয়ায় আইসিসি ইভেন্টগুলোর গুরুত্ব ও সংখ্যা বেড়েছে। তাঁর কথা, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ তাই এখন অনেকের জন্যই টাকার হিসাবের ভারসাম্য রক্ষার উপায়, যাদের খেলার মাঠে তেমন কিছু অর্জন নেই।’
আথারটন মনে করেন, এশিয়া কাপে যা ঘটেছে, এরপর সময় এসেছে এই ‘নীরবে সমর্থিত ব্যবস্থার’ ইতি টানার, ‘একসময় ক্রিকেট ছিল কূটনীতির বাহন, এখন তা স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও প্রচারের হাতিয়ার। কোনো সিরিয়াস খেলারই উচিত নয় শুধু অর্থনৈতিক লাভের জন্য টুর্নামেন্টের ফিকশ্চার সাজানো। আর যখন এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অন্যভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে, তখন সেটার যৌক্তিকতা তো আরও কমে যায়। তাই ভবিষ্যতের সম্প্রচারস্বত্ব চক্রে আইসিসির ড্র প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়া উচিত। তাতে যদি ভারত-পাকিস্তান প্রতিবার মুখোমুখি না-ও হয়, দোষ কোথায়।’
সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছেন, কীভাবে ড্র সাজানো হয় যেন দুই দলের ম্যাচ নিশ্চিতভাবেই থাকে, ‘২০১৩ সালের পর থেকে আইসিসির প্রতিটি টুর্নামেন্টে ভারত ও পাকিস্তান একই গ্রুপে পড়েছে। এর মধ্যে আছে তিনটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ, পাঁচটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও তিনটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। প্রাথমিক পর্ব সিঙ্গেল রাউন্ড রবিন ফরম্যাটে হোক বা একাধিক গ্রুপে ভাগ করা হোক—এই ম্যাচ নিশ্চিত করতে ড্রগুলো নিপুণভাবে সাজানো হয়েছে।’