
পেসার ইবাদত হোসেনের বলে রিপন মণ্ডলের ক্যাচটা নিলেন আরিফুল ইসলাম। মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা মাতলেন জয়ের উল্লাসে। ম্যাচটা যখন আবাহনী–মোহামেডান, এমন দৃশ্য দেখা গেল অনেক বছর পর।
আবাহনী–মোহামেডান মুখোমুখি হওয়ার মানেই ঐতিহ্য ও রোমাঞ্চের গল্প। তবে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ গত কয়েক বছরে হয়ে গিয়েছিল একপেশে। ২০১৬ সালের পর থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচ মানেই ছিল আবাহনীর জয়।
৯ বছর আর ১১ ম্যাচ পর অবশেষ পাল্টাল গল্পটা। মিরপুরে আজ আবাহনীকে ৩৯ রানে হারিয়েছে মোহামেডান। এই জয়ে প্রথম পর্বটা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকেই শেষ করল মোহামেডান।
মোহামেডানের জয়ে আনিসুল ইসলামের কৃতিত্বই সবচেয়ে বেশি—বেশিরভাগ ম্যাচেই বেঞ্চে বসে থাকা এই ওপেনার এবারের লিগে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ১১৮ বলে ১১৪ রান করে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
মাহিদুল ইসলামের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১২৩ রানের জুটিতে মোহামেডানকে ২৬৪ রানের সংগ্রহে ভিত গড়েছেন আনিসুর। ৫০ ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা আনিসুল ম্যাচের পর প্রথম আলোকে বলেন, ‘চেষ্টা করেছি সহজাত ক্রিকেট খেলার। আবাহনীর সঙ্গে মারতে পারায় সেঞ্চুরিটা একটু বেশি স্পেশাল। জিততে পারায় আরেকটু বেশি ভালো লাগছে, হেরে গেল হয়তো এটা তেমন কাউন্ট হতো না।’
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা আবাহনীর আশা হয়ে টিকে ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। ১১৩ বলে ৮০ রান করে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলকে ১৯০ রানে রেখে নাজমুল আউট হয়ে যাওয়ার পরই শেষ হয়ে যায় আবাহনীর শেষ সম্ভাবনাও। পুরো আসরে দাপট দেখানো আবাহনীকে আজ হেরে যাওয়ায় মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকায় দুই নম্বরে থেকেই যেতে হচ্ছে সুপার লিগে।
মোহামেডানকে শীর্ষে ওঠাতে ইবাদত হোসেনেরও একটা বড় অবদান আছে—মোহামেডানের এই বোলার আগের দুই ম্যাচে তিনটি করে উইকেট পাওয়ার পর আজ নিয়েছেন ৪টি।
লিগের শুরুটা ভালো ছিল প্রাইম ব্যাংকের। জিতেছিল প্রথম ৮ ম্যাচের ৫টিতেই। সেই দলটি এরপর টানা তৃতীয় হারে সুপার লিগের আগেই বিদায় নিল। আজ প্রথম পর্বের শেষে ম্যাচে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে প্রাইম ব্যাংক। এই ম্যাচে গুলশানের জয়ের নায়ক আজিজুল হাকিম।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই ক্রিকেটার শুরু থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন । আজ লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া এই ওপেনার ১০৬ বলে ১০৫ রান করেছেন। প্রাইম ব্যাংক অলআউট হয় ২২৩ রানে। রান তাড়ায় জাওয়াদ আবরারকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৭১ রান এনে দেন আজিজুল। অধিনায়ক ফেরেন দলকে ১৭৯ রানে রেখে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
শাইনপুকুরকে না হারালে রেলিগেশন লিগে খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যেত রূপগঞ্জ টাইগার্সের। তবে আজ প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে শাইনপুকুরকে ২৮ রানে হারিয়েছে দলটি। ১১ ম্যাচের ৭ পয়েন্ট পাওয়া দলটির অবশ্য শঙ্কা পুরোপুরি কাটেনি। আগামীকাল ব্রাদার্স গাজী গ্রুপকে হারালে ব্রাদার্স ও টাইগার্সের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। দুদলের মুখোমুখি ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ার এ ক্ষেত্রে আসবে নেট রান রেটের হিসাব।
ওপেনার আবদুল মজিদের সেঞ্চুরিতে (১০২*) ভর করে ৬ উইকেটে ২৫০ রান করে টাইগার্স। রান তাড়ায় ২২২ রানে অলআউট হয় শাইনপুকুর।