Thank you for trying Sticky AMP!!

‘ফ্যাব ফোর’খ্যাত—স্টিভ স্মিথ, কেইন উইলিয়ামসন, জো রুট ও বিরাট কোহলি

স্মিথ, উইলিয়ামসন, রুট, কোহলির মধ্যে ‘ফার্স্ট’ হবেন কে

৩২, ৩১, ৩০, ২৯—যেন কোনো ক্লাসে চার শিক্ষার্থীর রোল নম্বর। এমন রোল হলে অবশ্য তাঁদের ভালো শিক্ষার্থী বলার সুযোগ খুব একটা নেই। তবে এই সংখ্যাগুলো পড়াশোনার দুনিয়ার নয়। এই সংখ্যাগুলো ক্রিকেটের এবং যাঁদের নামের সঙ্গে সংখ্যাগুলো জড়িয়ে, তাঁরা শুধু ভালো নন, এককথায় দুর্দান্ত।

তাঁরা ক্রিকেটের ‘ফ্যাব ফোর’খ্যাত—স্টিভ স্মিথ, কেইন উইলিয়ামসন, জো রুট ও বিরাট কোহলি। বর্তমান সময়ে খেলে যাচ্ছেন, এমন টেস্ট ক্রিকেটারদের মধ্যে এই চারজনের টেস্ট শতকসংখ্যাই সর্বোচ্চ।

সর্বশেষ ৯ টেস্ট ইনিংসে উইলিয়ামসনের শতক সংখ্যা

ফ্যাব ফোরের মধ্যে সর্বোচ্চ শতক স্মিথের—৩২। সর্বশেষ ৯ টেস্ট ইনিংসের ৬টিতেই শতক পাওয়া উইলিয়ামসনের শতকসংখ্যা ৩১। রুটের শতক ৩০টি। ফ্যাব ফোরে শতকের তালিকায় সবার নিচের নামটি কোহলির—২৯টি।

অবশ্য সব সংস্করণ মিলিয়ে বাকি তিনজন কোহলির ধারেকাছেও নেই। কোহলির আন্তর্জাতিক শতক ৮০টি। ফ্যাব ফোরের মধ্যে কোহলির সবচেয়ে কাছাকাছি যিনি, সেই রুটের শতক ৪৭টি। তবে শুধু টেস্ট ক্রিকেট আমলে নিলে কোহলি খানিকটা পিছিয়ে। সেটা শুধু শতকের বেলায়ই নয়, ব্যাটিং গড়েও। টেস্টে ফ্যাব ফোরের মধ্যে শুধু কোহলির গড়ই ৫০–এর নিচে—৪৯.১৫।

ক্লাসে পাশাপাশি রোল হলে কী হয়? কে কাকে কীভাবে সহায়তা করবে, এই আলোচনার পাশাপাশি একে অপরকে ডিঙিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও চলে। ফ্যাব ফোরের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা আলাদা নয়। তাঁরা প্রতিনিয়তই একে অপরকে তাতিয়ে দিচ্ছেন সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। কিন্তু এই চারজনের মধ্যে সবার ওপরে থেকে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারেন কে? টেস্টে কার শতক হবে সবচেয়ে বেশি? ভবিষ্যদ্বাণীটা এখনই করার সুযোগ নেই। তবে একটা ধারণা তো করাই যায়।

Also Read: বিপিএলে ফিরলেন মুমিনুল

‘ফার্স্ট বয়’ স্মিথকে নিয়েই শুরু করা যাক। স্মিথের বয়স ৩৪ বছর। প্রায় ১৪ বছর টেস্ট খেলা স্মিথ আর কত দিন খেলবেন? এমনিতেই গত বছরটা স্মিথের মানের তুলনায় ভালো যায়নি। ২৪ ইনিংসে রান ৯২৯, ব্যাটিং গড় ৪২.২২, শতক ৩টি, অর্ধশতক ৩টি। এখন আবার নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, ওপেন করছেন টেস্টে।

টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রতি ৬ ইনিংস পরপরই শতকের দেখা পেয়েছেন স্মিথ। সে হিসাবে, আগামী ২৪ টেস্টে ৪৮ ইনিংস খেললে স্মিথ আরও ৮টি শতক করতে পারেন।

নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধরা যাক স্মিথ আগামী ৩ বছর খেলবেন। ভবিষ্যৎ সফরসূচি (এফটিপি) অনুযায়ী, এই তিন বছরে অস্ট্রেলিয়া খেলবে ২৪টি টেস্ট। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রতি ৬ ইনিংস পরপরই শতকের দেখা পেয়েছেন স্মিথ। সে হিসাবে, আগামী ২৪ টেস্টে ৪৮ ইনিংস খেললে স্মিথ আরও ৮টি শতক করতে পারেন। যদিও ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে স্মিথ সব টেস্ট খেলতে পারবেন কি না, সেটাও বড় প্রশ্ন।

এই হাঁটুর চোট উইলিয়ামসনকে অনেক ভুগিয়েছে

উইলিয়ামসন আছেন কিছুটা বিপদে। টেস্ট অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়া এই ক্রিকেটার দীর্ঘদিন ধরেই চোটে ভুগেছেন। ম্যাচ খেলছেন বেছে বেছে। ৩৩ বছর বয়সী উইলিয়ামসনের সামনে এফটিপি অনুযায়ী আগামী তিন বছরে আছে ২৩টি টেস্ট।

চোটে ভোগা উইলিয়ামসন ক্যারিয়ার আর কত দিন টেনে নিতে পারবেন, সেটা একটা প্রশ্ন। যদি ধরেও নেওয়া হয়, উইলিয়ামসন অন্তত ২০টি টেস্ট খেলবেন। তাহলে গড়ে ৫.৪৮ ইনিংস পর শতক করা উইলিয়ামসন আগামী ২০ টেস্টে শতক পেতে পারেন কমপক্ষে ৭টি। তবে সবকিছু নির্ভর করছে তাঁর ফিটনেসের ওপর।

Also Read: পরের দুই টেস্টেও নেই কোহলি, অনিশ্চিত শেষ ম্যাচেও

আগামী তিন বছরে রুটের সামনে টেস্ট আছে সবচেয়ে বেশি—৩৩টি। তাহলে প্রায় প্রতি ৮ ইনিংস পর শতক করা রুট এখনো কমপক্ষে ৮টি শতকের দেখা পেতে পারেন। তবে রুটের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের বাজবল খেলার কৌশলকেও মাথায় রাখতে হবে। কারণ, দ্রুত রান তোলার পথে বড় ইনিংসে ঝুঁকি বাড়ে। তবে রুটের ক্ষেত্রে আশার কথা হলো, বড় কোনো চোটের সঙ্গে তাঁর সখ্য নেই।

ফ্যাব ফোরের মধ্যে সবচেয়ে কম শতকের মালিক কোহলির চেয়ে বাকি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতকের মালিক চেতেশ্বর পূজারা পিছিয়ে ১০টি শতক ব্যবধানে।

কোহলিও সামনে বেছে বেছে ক্রিকেট খেলতে পারেন। ভারতের সামনে এখন থেকে আগামী তিন বছরে আছে ২৭টি ম্যাচ। এর মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সামনের ২টি টেস্টে খেলবেন না, না–ও খেলতে পারেন পঞ্চম টেস্টেও। সে ক্ষেত্রে কোহলির সামনে ম্যাচ আছে ২৪টি। এর মধ্যে কোহলি যদি ২০টি টেস্টেও খেলেন, তাহলে তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারে শতক পাওয়ার গড় (৬.৫৯) হিসাবে, তিনি আরও ৬টি শতক পেতে পারেন। যদিও এগুলো শুধুই সংখ্যা। কোহলিদের এভাবে সংখ্যার প্যাঁচে ফেলা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, তাঁদের মতো ব্যাটসম্যানের সামর্থ্যের পুরোটা আসলে কোন উচ্চতা, সেটি কেউ জানে না।

৩৭ বছর বয়সী খাজা আছেন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে

বর্তমানে খেলে যাচ্ছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে কেউ কি ফ্যাব ফোরকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন? উত্তর দেওয়া মুশকিল। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এই চারজনকে আপাতত কেউ ছাড়াতে পারছেন না। কারণ, ফ্যাব ফোরের মধ্যে সবচেয়ে কম শতকের মালিক কোহলির চেয়ে বাকি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ শতকের মালিক চেতেশ্বর পূজারা পিছিয়ে ১০টি শতক ব্যবধানে। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া এই ক্রিকেটারের শতক ১৯টি। পূজারার পর সর্বোচ্চ শতক দিমুথ করুনারত্নের। ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের শতক ১৬টি।

গত বছরের সেরা টেস্ট ক্রিকেটার উসমান খাজার শতক আছে ১৫টি। তবে ৩৭ বছর বয়সী খাজা আছেন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে। ফ্যাব ফোরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জটা তাই নিতে হতে পারে উঠতি কোনো ক্রিকেটারকে, কিংবা এই প্রজন্মের ক্রিকেটারদের। তবে টেস্ট থেকে তাঁদের নজর ফেরাতে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোও কিন্তু আছে!

Also Read: কেন টেস্ট খেলতে চান না, জানালেন তাসকিন