আউট হয়ে মাথা নিচু করে ফিরছেন অধিনায়ক লিটন দাস। এ যেন বাংলাদেশের পুরো ইনিংসেরই প্রতিচ্ছবি।
আউট হয়ে মাথা নিচু করে ফিরছেন অধিনায়ক লিটন দাস। এ যেন বাংলাদেশের পুরো ইনিংসেরই প্রতিচ্ছবি।

আরেকটি ব্যাটিং ধসে সিরিজ হারের ক্ষত

এই সিরিজে ডিআরএস নেই। থাকলে তাওহিদ হৃদয় হয়তো বেঁচেই যেতেন। আবরার আহমেদের বলে আম্পায়ার তাঁকে এলবিডব্লু আউট দেওয়ার পর এই ব্যাটসম্যানের প্রতিক্রিয়ায় ফুটে উঠেছে তেমনটাই। কিন্তু সপ্তম ওভারের ওই বলটায় হৃদয় যদি প্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধারও হতেন, ম্যাচের ফলে সেটা কি তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারত!

হঠাৎ এক ব্যাটিং ধসের ছোট্ট একটা অংশ হৃদয়ের ওই আউট। পাকিস্তান দিয়েছিল ২০২ রানের লক্ষ্য। রান তাড়ায় বাংলাদেশের দরকার ছিল ওভারপ্রতি ১০–এর বেশি। আর এমন লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়েই কিনা ১৮ বলের মধ্যে ১২ রানে ৫ আর ৩৬ বলের মধ্যে ৩৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।

অমন ব্যাটিং ধসের পর যা হওয়ার, তা–ই হয়েছে। ১৪৪ রানে আটকে গিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ৫৭ রানে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে শনিবারের এই হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজও হেরেছে লিটন দাসের দল। প্রথম ম্যাচেও একই রান তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ দল হেরেছিল ৩৭ রানে।

ব্যাটিং ধস শুরুর আগে রান তাড়ার শুরুটা ভালোই ছিল বাংলাদেশের। সালমান আগা আর হাসান আলীর প্রথম ২ ওভার থেকেই দুই ওপেনার তুলে নেন ৩২ রান। যার মধ্যে ২৯ রানই তানজিদ হাসানের।

চতুর্থ ওভারে পারভেজ হোসেন পেসার হারিস রউফকে তুলে মারতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ হলে বিপর্যয়ের শুরু। পঞ্চম ওভারে ফাহিম আশরাফের বলে তানজিদ আর ষষ্ঠ ওভারে হাসানের শিকারে পরিণত হন লিটন।

আবরার আহমেদের বলে এলবিডব্লিউ হন তাওহিদ হৃদয়।

দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার ওই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার বদলে সপ্তম ওভারে আবরারের টানা দুই বলে আউট হৃদয় ও জাকের আলী, দুজনই এলবিডব্লু। বিনা উইকেটে ৪৪ থেকে মুহূর্তেই ৫ উইকেটে ৫৬। এরপর শামীম হোসেন আর রিশাদ হোসেনের বিদায়ে স্কোরবোর্ড পরিণত হয় ৭৭/৭–এ।

এরপরও যে বাংলাদেশের রান দেড় শর কাছাকাছি পৌঁছেছে, এতে অবদান তানজিম হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের। মিরাজ ১৭ বলে ২৩ রান করে ফিরেছেন। তানজিম আউট হওয়ার আগে করেছেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৫০ রান। ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টি–টোয়েন্টিতে ফিফটি করেছেন তানজিম। বোলিংয়ের সময় ৩ বল করে চোটের কারণে মাঠ ছেড়ে যাওয়া শরীফুল ইসলাম ব্যাটিংয়ে নামেননি।

ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেছেন সাহিবজাদা ফারহান।

এর আগে বল হাতেও দিনটা ভালো যায়নি বাংলাদেশের। সাইম আইয়ুব রানআউট হয়ে প্রথম ওভারে ফিরে গেলেও সাহিবজাদা ফারহান ও মোহাম্মদ হারিসের দ্বিতীয় উইকেট জুটি পাকিস্তানকে নিয়ে যায় তিন অঙ্কের ঘরে। দুজনের ১০২ রানের জুটিতে ফারহানই ছিলেন আক্রমণাত্মক। শূন্য আর ৫১ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়া এই ওপেনার খেলেন ৪১ বলে ৬ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস। শেষ দিকে হাসান নেওয়াজের ২৬ বলে ৫১ রানের ইনিংস পাকিস্তানকে নিয়ে যায় দুই শর ঘরে, যা শেষ পর্যন্ত এনে দিয়েছে বড় জয়ও।

সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি–টোয়েন্টি আগামীকাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ২০১/৬ (ফারহান ৭৪, নেওয়াজ ৫১, হারিস ৪১, সালমান ১৯; তানজিম ২/৩৬, হাসান ২/৪৭, রিশাদ ১/৫০)। বাংলাদেশ: ১৯ ওভারে ১৪৪ (তানজিম ৫০, তানজিদ ২২, মিরাজ ২৩, আবরার ৩/১৯, ফাহিম ১/৮, শাদাব ১/১৩, হাসান আলী ১/২১, হারিস রউফ ১/২৩, খুশদিল ১/২৫, আইয়ুব ১/১৪)। ফল: পাকিস্তান ৫৭ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাহিবজাদা ফারহান। সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।