
প্রথম দিনের মতো ষষ্ঠ রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনে বোলাররা একক আধিপত্য দেখাতে পারেননি। তবে হাসান মাহমুদ ও রুয়েল মিয়া নিয়েছেন ৫ উইকেট করে। ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি পেয়েছেন অমিত হাসান ও আসাদউল্লাহ আল গালিব।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাজশাহীর বিপক্ষে দ্বিতীয় দিনটা শুরু করেছিল সিলেট ২ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে। দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৭০। অপরাজিত আছেন আসাদউল্লাহ আল গালিব ১১১ রানে, অমিত হাসান ১৭২ রানে।
চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৬৪ রানের। জাতীয় ক্রিকেট লিগে সিলেট বিভাগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। সর্বোচ্চ জুটি রাজিন সালেহ ও অলক কাপালির—২০১৪–১৫ মৌসুমে ফতুল্লায় ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ৩৪৮ রান।
গত মৌসুমেও একবার ২৫০ ছাড়িয়েছিল অমিত–গালিবের জুটি। কক্সবাজারে খুলনার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে করেছিলেন ২৫১ রান। সেই ইনিংসে অমিত করেছিলেন ২১৩, গালিব ১১৫। এবার তাঁরা কত দূর যাবেন, কে জানে!
৬০ রানে অধিনায়ক জাকির হাসান আউট হওয়ার পর গালিবের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অমিত। পাঁচে নামা অমিত পেয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দশম সেঞ্চুরি, গালিবের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। গালিব ব্যক্তিগত ৪৩ রানে পৌঁছেই ছুঁয়েছেন ১ হাজার রানের মাইলফলক। ১১১ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ১৩টি চার ও ১টি ছক্কা। বয়সে দুই বছরের ছোট অমিত খেলেছেন ২০১ বল, মেরেছেন ২৪টি চার ও ১ ছক্কা।
সিলেট একাডেমি গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় দিনটা শুরু করেছিলেন ময়মনসিংহের দুই ব্যাটসম্যান আল আমিন জুনিয়র ও আবু হায়দার সেঞ্চুরির সুবাস নিয়ে। কিন্তু দুজনের কেউই পৌঁছাতে পারেননি তিন অঙ্কে।
দিনের তৃতীয় ওভারে বরিশালের বাঁহাতি পেসার রুয়েল মিয়ার বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আল আমিন। ৭০ রানে দিন শুরু করে শেষ করেন ৭৪ রানে। ভাঙে আল আমিন–হায়দারের ১২৮ রানের সপ্তম উইকেট জুটি।
৮৬ রানে দিন শুরু করা আবু হায়দারও সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত। রুয়েলের বলেই উইকেটকিপার জাহিদউজ্জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৯৭ রানে। ৭৬ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৭টি ছক্কা। দলকে ২৯৯ রানে রেখে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি।
এরপর আরও ৫৫ রান যোগ করে ময়মনসিংহ। অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান দশে নেমে ৩৫ বলে ৭ ছক্কায় করেন ৫৫ রান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয় ফিফটি পাওয়া রাকিবুলকে বোল্ড করে পঞ্চম উইকেট নেন রুয়েল। ৭৫ রান দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পঞ্চমবার ৫ উইকেট পেলেন এই ‘সিলেটি’।
তবে রুয়েলের দল ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেনি। ফজলে রাব্বি ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ১৪২ বলে ৯২ রান করলেও বরিশাল অলআউট হয়েছে ২১৭ রানে। ময়মনসিংহের পেসার আসাদউল্লাহ হিল গালিব ৪৫ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ফলে ১৩৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছে ময়মনসিংহ।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রংপুরের ব্যাটিং যেন ভেঙে পড়ল ঝড়ের মতো। চট্টগ্রামের দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও ইফরান হোসেন মিলে ৩৩ রানেই তুলে নেন রংপুরের ৮ উইকেট।
তবে রংপুর রেকর্ড ভাঙেনি। সর্বনিম্ন ৪২ রানের রেকর্ড পেছনে ফেলতে পারেনি, অলআউট হয়েছে ১২৬ রানে। নবম উইকেটে তানভীর হায়দার ও আবু হাশিম যোগ করেন ৮৮ রান। হাশিম আউট হন ৩৯ রানে, তানভীর অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে।
জাতীয় দলের পেসার হাসান মাহমুদ ৩১ রানে নেন ৫ উইকেট। ৩২ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটিই তাঁর সেরা বোলিং এবং জাতীয় লিগে প্রথম ৫ উইকেট। আগের সেরা ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে ৫/৪৩। ইফরান ৩ উইকেট নিয়েছেন ২০ রানে।
এর আগে ৬ উইকেটে ২৭০ রান নিয়ে দিন শুরু করা চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৩৫০ রানে। প্রথম ইনিংসে ২২৪ রানের লিড নিয়ে তারা ফলো অন করিয়েছে রংপুরকে। দ্বিতীয় ইনিংসে রংপুর করেছে বিনা উইকেটে ৪ রান।
২৬ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হলো ফয়সাল আহমেদের। অভিষেকেই ঢাকা বিভাগের হয়ে খেললেন ৭৭ রানের ইনিংস। খুলনায় খুলনার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৩৫ রান তুলে ৪১ রানে এগিয়ে গেছে তাঁর দল। রায়হান ছাড়াও ফিফটি পেয়েছেন জিশান আলম, করেছেন ৫৭ রান।