বাংলাদেশ দল
বাংলাদেশ দল

ইমরানের সেই ‘বিশ্বাস’ রাখার মন্ত্র কি বাংলাদেশ দলে ছড়িয়ে দিতে পারবেন মুশতাক

‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর’—বাংলা প্রবাদটি পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদকে কেউ বলেছেন কি না কে জানে! প্রবাদটি মুশতাক হয়তো কোনো দিন শুনে না থাকলেও তাঁর কথার প্রায় প্রতি বাক্যেই থাকে ‘বিশ্বাস’ শব্দটি।

বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক এখন নিয়মিতই মুখোমুখি হন সংবাদমাধ্যমের। যেকোনো পরিস্থিতিতেই মুশতাক তাঁদের বলে যান ‘বিশ্বাস’ রাখার কথা। এখনকার পরিস্থিতিই ধরুন—এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সুপার ফোরে যাওয়ার পথটা বেশ কঠিন। আজ গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে কেবল হারালেই চলবে না, বাংলাদেশকে প্রার্থনা করতে হবে শ্রীলঙ্কাও যেন হারিয়ে দেয় রশিদ খানদের।

এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও ‘বিশ্বাস’ রাখতে বলেছেন মুশতাক। কোচ হিসেবে সেটি অবশ্য তিনি বলতেই পারেন। তবে তাঁর অতিরিক্ত ‘বিশ্বাসের’ কথা বলা নিয়ে মাঝেমধ্যে যে রসিকতা হয়, সেটা টের পেয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক এই লেগ স্পিনারও।

দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

কাল আবুধাবিতে মিনিট দশেকের সংবাদ সম্মেলনে তাঁর কাছে প্রশ্ন ছিল, জীবনে বহু বড় বড় খেলোয়াড়ের সঙ্গেই খেলেছেন। ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের কিংবদন্তি অধিনায়ক ইমরান খানের সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যও তিনি। বিভিন্ন সময় অধিনায়কদের কাছ থেকে পাওয়া বার্তা তাঁকে অনুপ্রাণিতও করেছে। বাংলাদেশ দল যখন এশিয়া কাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায়, তখন তাঁদেরকে কী বলে অনুপ্রাণিত করবেন? উত্তরের শুরুতে মুচকি হেসে মুশতাক বলেন, ‘আপনারা অনেকে হয়তো ভাবেন…আমি যখনই প্রেসে আসি, বিশ্বাস শব্দটা বেশি ব্যবহার করি…।’

‘আমি ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, জাভেদ মিয়াঁদাদের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলেছি। যখন আমি পাকিস্তানের হয়ে খেলা শুরু করি, তাঁরা আমাকে শিখিয়েছেন—যদি তুমি বিশ্বাস না করো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারো, প্রতিপক্ষকে বেশি সম্মান দিতে শুরু করো, নিজের শক্তি ভুলে যাও, তাহলে হবে না। আমি ক্রিকেটারদের এই অভিজ্ঞতাটা বলি—যতবার তুমি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হও, তুমি তত শক্তিশালী হয়ে ওঠো, দলও শক্তিশালী হয়।’

আজ জিততেই হবে বাংলাদেশের।

এখনকার ক্রিকেটাররা ব্যাপারটি ধীরে ধীরে বুঝতে পারছেন বলে বিশ্বাস মুশতাকের। অনুশীলনে খেলোয়াড়দের তাড়না দেখেই সেটি মনে হচ্ছে মুশতাকের। এখন কেবল মানসিকতার পরিবর্তনই তাঁদের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করেন পাকিস্তানের সাবেক এই ক্রিকেটার।

কঠিন পরিস্থিতি সামলে বাংলাদেশের তাই উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন মুশতাক, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম। সামর্থ্য ও সম্ভাবনা দুই–ই আছে। শুধু বিশ্বাস রাখতে হবে।’

সেই বিশ্বাসের মন্ত্রটা বাংলাদেশের আজ বেশি দরকার। এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সে জন্য সবার আগে সুপার ফোরে খেলতে হবে, আর সেটির জন্য আজ হারাতে হবে আফগানিস্তানকে। এরপর প্রার্থনা নিয়ে বসতে হবে টিভির সামনে—শ্রীলঙ্কা যেন হারিয়ে দেয় আফগানিস্তানকে।

ইমরান খানের কাছ থেকে শেখা মুশতাকের ‘বিশ্বাসের’ মন্ত্রটা বাংলাদেশেও কাজ করে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।