
সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেল দ্য ওভারল্যাপ ক্রিকেটের ‘স্টিক টু ক্রিকেট’ পডকাস্টে ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করার সময় বিষয়টি জানান ব্রায়ান লারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ও ব্রায়ান লারা। তবে দুজনকে ঠিক সমসাময়িক বলা যায় না। ভিভ যখন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে চলে আসেন, লারার ক্যারিয়ার তখন সবে শুরু হয়। এরপরও দুজনের একসঙ্গে অনেক স্মৃতি জমে আছে।
কিন্তু ভিভের সঙ্গে লারার প্রথম সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট স্কোয়াডে প্রথমবারের মতো ডাক পাওয়ার পর লারা ড্রেসিংরুমে তাঁর ব্যাগপত্র রেখে এলে তা বাইরে ছুড়ে মারেন ভিভ। সে সময় ড্রেসিংরুম ছিল অনেক ছোট। সেখানে জায়গা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাথরুমে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ দিন কাটাতে হয়।
সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেল দ্য ওভারল্যাপ ক্রিকেটের ‘স্টিক টু ক্রিকেট’ পডকাস্টে ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করার সময় বিষয়টি জানান লারা। তাঁর কথা শুনে পডকাস্টে উপস্থিত ইংল্যান্ডের সাবেক চার ক্রিকেটার ডেভিড লয়েড, ফিল টাফনেল, মাইকেল ভন ও স্যার অ্যালিস্টার কুক শুরুতে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং এরপর অট্টহাসিতে মেতে ওঠেন।
টেস্ট ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস (৪০০*) উপহার দেওয়া লারা বলেন, ‘(অবশেষে) আমি তাঁর (ভিভ রিচার্ডস) সঙ্গে খেলার সুযোগ পেলাম। ত্রিনিদাদে (লারার দেশ) আমার প্রথম টেস্ট ছিল। (ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট) বোর্ড থেকে আমার কাছে চিঠি এল, “তুমি দলে আছ। আগামীকাল অনুশীলন আছে, সকাল ৯টায় রিপোর্ট করবে।” আমি সকাল ৮টায় কুইন্স পার্ক ওভালে পৌঁছে আমার ভাইয়ের সঙ্গে হালকা অনুশীলন করলাম। এরপর দল এল।’
৫৬ বছর বয়সী লারা এরপর আরও বলেন, ‘আমার সামনে যাঁরা, তাঁরা সবাই আমার নায়ক—ভিভ (রিচার্ডস), (গর্ডন) গ্রিনিজ, (ডেসমন্ড) হেইন্স, ম্যালকম মার্শাল...সব বড় তারকাই ড্রেসিংরুমে ঢুকলেন। সে সময় ড্রেসিংরুম খুব ছোট ছিল। আমি আমার ভাইকে বললাম, “চলো, আমার সতীর্থদের কাছে গিয়ে হ্যালো বলে আসি।” যখন আমি ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিলাম, আমার ক্রিকেট ব্যাগ বাইরে উড়ে এসে পড়ল। ব্যাগে থাকা সবকিছু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেল। আমি জিনিসগুলো একত্র করে ব্যাগে ঢুকিয়ে আবার ড্রেসিংরুমে গেলাম এবং দেখলাম, যেখানে এর আগে আমার ব্যাগ রেখেছিলাম, সেখানে স্যার ভিভিয়ানের ব্যাগ। তাই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ দিন আমাকে বাথরুমে কাটাতে হলো।’
তবে লারা সেই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। ত্রিনিদাদে কবে সেই ম্যাচ হয়েছিল, সেটিও জানাননি। ভিভ আর লারার টেস্ট পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেল, দুজন একসঙ্গে কখনো টেস্ট খেলেননি। লারা নিজ দেশ ত্রিনিদাদে নিজের প্রথম টেস্ট খেলেন ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। আর ভিভ জাতীয় দলকে বিদায় বলে দেন ১৯৯১ সালে।
অনেক আগেই সোনালি সময় পার করে আসা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে এখন দুর্দিন চলছে। কদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জ্যামাইকা টেস্টের শেষ ইনিংসে মাত্র ২৭ রানে অলআউট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যা টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় এবং নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোর।
খেলোয়াড়দের চরম হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখে নড়েচড়ে বসা ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই) এক জরুরি বৈঠকের ডাক দেয়। সেই বৈঠকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের সঙ্গে ভিভ রিচার্ডস ও ব্রায়ান লারাও ছিলেন।