মিরপুরের কালো পিচেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন রিশাদ হোসেন
মিরপুরের কালো পিচেও ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন রিশাদ হোসেন

২৭৮ স্ট্রাইক রেটে রিশাদের তাণ্ডব, হয়ে গেল রেকর্ডও

স্পিনের স্বর্গে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেন হাঁসফাঁস করছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের ঘূর্ণিতে রান তোলা হয়ে উঠেছিল দুঃসাধ্য কাজ। ঠিক তখনই এলেন রিশাদ। চার-ছক্কার ঝড় তুললেন, দলের রানটা দুই শ ছাড়িয়ে দিলেন।

বল হাতে আগের ম্যাচেই ৬ উইকেট নিয়ে জিতিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। সেই ম্যাচেও তাঁর ব্যাট থেকে ১৩ বলে এসেছিল ২৬ রান। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেই ইনিংসকেও ছাড়িয়ে গেলেন। মাত্র ১৪ বলে করলেন ৩৯ রান।

লেগ স্পিনে এখন দলের ভরসা রিশাদ। তবে আজ তাঁর ব্যাটই যেন কথা বলেছে সবচেয়ে জোরে। ছক্কা মারার হাতে যে বাড়তি জোর আছে, তা আগেই জানা ছিল। কিন্তু আজ তা যেন নতুন এক উচ্চতা ছুঁয়ে গেল। স্ট্রাইক রেট? অবিশ্বাস্য—২৭৮.৫৭!

গত বছর মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮ বলে করেছিলেন ৪৮ রান। ওই ম্যাচে স্ট্রাইক রেট ছিল ২৬৬.৬৬। সেটিকেও ছাড়িয়ে গেলেন এবার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও কখনো এত স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেননি রিশাদ।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের অন্তত ২৫ রানের ইনিংসে এর চেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটে আর কেউ ব্যাট করতে পারেননি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড ছিল সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসানের। ২০০৬ সালে বগুড়ায় মাশরাফি কেনিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন ১৬ বলে অপরাজিত ৪৪ রান। স্ট্রাইক রেট ছিল ২৭৫.০০। ২০১৪ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিবও ১৬ বলের ৪৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।

১৪ বলে ৩টি করে ছক্কা ও চারে অপরাজিত ৩৯ রান করেছেন রিশাদ হোসেন

আজ যখন তিনি নামলেন, বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৬৩। হাতে তখনো চার ওভার। দুই শ পার হবে কি না, সেই শঙ্কাই ঘুরছিল মাথায়।

কিন্তু ওই ২৪ বলের মধ্যে ১৪টির মুখোমুখি হয়ে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন রিশাদ। প্রথম দুই বলে নিলেন দুই রান। তৃতীয় বলেই রোস্টন চেজকে চার মেরে শুরু করলেন বাউন্ডারির খাতা। পরের ওভারে গুড়াকেশ মোতিকে খেললেন ঝড়ের মতো—দুই ছক্কা আর এক চারে তুললেন ১৮ রান।

ওই ওভারের শেষ বলে রান নিয়ে স্ট্রাইক রাখলেন নিজের কাছে। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে নন-স্ট্রাইকে রেখে শেষ ওভারের সব বল খেললেন তিনি। এক চার আর এক ছক্কায় সেই ওভার থেকে এল ১৬ রান। বাংলাদেশও পেল ২১৩ রানের সংগ্রহ।