ইংল্যান্ড দলের পক্ষ থেকে বলা কথাবার্তা শুনলে তাঁর হাসি পায়, এমনটাই বলেছেন সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা বেন স্টোকসের দল ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলেও মনে করেন না তিনি। ইংল্যান্ডের আরেক সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন বলেছেন, নিজেদের কৌশলে পরিবর্তন না আনলে কাজটি আরও কঠিন হয়ে পড়বে ইংল্যান্ডের।
বিশাখাপট্টনমে ভারতের দেওয়া ৩৯৯ রানের লক্ষ্য ৬০-৭০ ওভারের মধ্যে তাড়া করতে চাইবে ইংল্যান্ড, এমন বলেছিলেন জেমস অ্যান্ডারসন। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম দলকে বলেছিলেন, ভারত ৬০০ রানের লক্ষ্য দিলেও তাড়া করার চেষ্টা করবেন। আবার বেন ডাকেট রাজকোটে যশস্বী জয়সোয়ালের ব্যাটিং দেখে বলেছিলেন, তাঁদের দেখে অন্যরাও এভাবে খেলার চেষ্টা করছে—এর কৃতিত্ব একটু হলেও দিতে হবে ইংল্যান্ডকে।
কিন্তু ভন বলছেন, ইংল্যান্ডের সব কথা ঠিক বিশ্বাসযোগ্য নয়। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের এক ভিডিও অনুষ্ঠানে দীনেশ কার্তিকের সঙ্গে কথা বলার সময় ভন বলেন, ‘তারা হয়তো ভাবে, তারা এসব বিশ্বাস করে, কিন্তু এগুলোর কোনোটি বিশ্বাস করা কঠিন। অ্যান্ডারসন যা বলছে, ম্যাককালাম যা বলছে—তারা জানে, এগুলো সম্ভব নয়। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন হয়নি (ডাকেট যা বলছে), ইতিহাসে এমন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান আগেও ছিল—(বীরেন্দর) শেবাগ, (অ্যাডাম) গিলক্রিস্ট, (ভিভ) রিচার্ডস, ইউনিভার্স বস (ক্রিস গেইল)—যারা বড় ছক্কা মেরেছে।’
ইংল্যান্ডের খেলার ধরন নিয়ে ভন বলেছেন, ‘তুমি, আমি—সংবাদমাধ্যমে আমরা এটিকে বাজবল বলি। আমার মনে হয় না তারা এটি বলা শুরু করেছে। তারা বাজবল বলে না। তবে তাদের কোনো কোনো সাক্ষাৎকার শুনে আমার হাসি পায়। কারণ, এগুলোর বেশির ভাগেরই কোনো মানে হয় না।’
Also Read: ভারতকে ৩-২ ব্যবধানে হারানোর আশা স্টোকসের
ইংল্যান্ডের এই দল শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু জিতবে না, নিজের এমন আশঙ্কার কথা ভন বলেছিলেন আগেই। সেটি বলেছেন আবার। এ সিরিজেও ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখেন না তিনি, ‘তারা মনে করে, পরের দুটি ম্যাচ জিতে সিরিজ জিততে পারবে, আমি মনে করি না সেটি। আমাকে ভুল প্রমাণ করুক। তারা বড় কোনো সিরিজ জেতেনি। এটা রোমাঞ্চকর। কিন্তু তারা ভুল থেকে শেখেনি। (সিরিজ জয়) অনেক দূরের ব্যাপার। আমি কখনো দেখিনি, ভারতের কোনো দল দেশের মাটিতে সিরিজ গড়ানোর সঙ্গে খারাপ হয়, বরং আরও উন্নতি করে।’
রাজকোটে ইংল্যান্ডের বড় ব্যবধানে হারের পর স্বাভাবিকভাবেই দলটির খেলার ধরন নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে অনেক। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে যশপ্রীত বুমরাকে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে জো রুটের আউট হওয়া নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে ইংলিশদের ইতিহাসের ‘সবচেয়ে বাজে শট’ আখ্যাও দেওয়া হয়েছে সেটিকে। সাবেক অধিনায়ক হুসেইন অবশ্য রুটের ওই শটে কোনো সমস্যা দেখেন না।
Also Read: রুটেরও বাজবল খেলার কী দরকার, প্রশ্ন ভনের
তবে ডেইলি মেইলে লেখা এক কলামে তিনি বলেছেন, ‘কিন্তু যখন রবিচন্দ্রন অশ্বিন নেই, যখন রবীন্দ্র জাদেজাকে তার অধিনায়ক ধীরেসুস্থে আনছে, যখন রুটের সাম্প্রতিক সময়ের “নেমেসিস” যশপ্রীত বুমরা টানা তিনটি টেস্ট খেলছে, বিশ্রামের আলোচনার মধ্যে। তখন আমি (ওই শট) খেলার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলব।’
ইংল্যান্ড ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে সুযোগ নিতে পারেনি বলেও মত নাসের হুসেইনের, ‘যখন প্রতিপক্ষের একজন বোলার কম, স্কোরের সুযোগ বুঝতে হবে, এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে। যদি ইংল্যান্ড একটু এদিক-ওদিক করার ব্যাপারটি বিবেচনায় না নেয়, তাহলে বাজবল একটা ধর্ম হয়ে উঠবে—যার বিপক্ষে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। আমি তাদের মন্ত্র বদলাতে বলছি না। শুধু কয়েকটি ম্যাচ পর্যবেক্ষণ করে নিজেদের জিজ্ঞাসা করতে বলছি—আমরা কীভাবে উন্নতি করতে পারি?’