
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন নিয়ে নাটক যেন থামছেই না!
আগামীকালের মধ্যে নির্বাচন পেছানোর দাবি না মানলে বাংলাদেশের সব ধরনের ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ক্লাবগুলোর একাংশ। শনিবার ‘বিসিবি নির্বাচনে নোংরামির বিরুদ্ধে ক্লাব, সংগঠক ও কাউন্সিলরদের প্রতিবাদ’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিসিবি নির্বাচনে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদউজ্জামান। তাঁর সঙ্গে ঢাকার প্রথম সারির বেশ কয়েকটি ক্লাবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
তাঁদের দাবি, বর্তমান বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ বাড়িয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। অথবা অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন দেওয়া হোক। প্রয়োজনে বর্তমান তফসিল বাতিল করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করা হোক। মোহামেডান ক্লাবে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪৮টি ক্লাব এই দাবির পক্ষে আছে।
গত পরশু বিসিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে একই কথা বলেছিলেন ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলামও। আজকের সংবাদ সম্মেলনে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মাসুদউজ্জামানকে প্রশ্ন করা হয়, ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে এরপর কোনো কথা হয়েছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘পথটা খোলা। ওই দিনই (গত পরশু) খুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সাড়া না পাওয়াতেই আজকে এই জায়গায় বসা (সংবাদ সম্মেলন করা)।’
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘৬ তারিখ নির্বাচন। এখন আর ২ দিন বাকি। এই সময়ে এসে নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।’
বিতর্কের শুরু অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তৃতীয় বিভাগ বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসা ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ হাইকোর্টে স্থগিত হওয়ার পর। এরপর জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ মোট ১৬ জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আজকের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ক্রীড়া সংগঠকেরাও।
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ‘নাটক মঞ্চস্থ’ হচ্ছে দাবি করে মাসুদউজ্জামান বলেন, ‘আপিলের সুযোগ আছে, কিন্তু আপনারাই দেখেন, আমরা পারছি কিছু? কোনোভাবে যৌক্তিক কিছু করতে পারছি? আমরা ক্রিকেটের স্বার্থেই কথা বলছি।’
এরপর তিনি আরও বলেন, ‘আলোচনার দরজা খুলে দিচ্ছি। যাঁরা রিট করেছেন, তাঁদের সবার প্রতিই তো এই জিনিসটা (আলোচনার পথ) করা। এখন যদি ধরেন, আপনি মামলা করেছেন, আপনি আপোস চান, আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালো চান। আপনি আলোচনা করে তারপর ব্যবস্থা নেন।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই সাংবাদিকদের হাতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি তুলে দেওয়া হয়। তাতে লেখা ছিল, ‘বিতর্কিত নির্বাচনের নীলনকশা বাতিল না করা হলে আসন্ন কোনো ধরনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ক্লাব অংশ নেবে না।’ ওই বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ও বিভাগ থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর তালিকায় সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলা হয়।
এদিকে আজ বিসিবি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী অঞ্চল থেকে পরিচালক প্রার্থী হাসিবুল আলম এবং ক্লাব ক্যাটাগরিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের প্রার্থী লুতফর রহমান। তাঁদের মধ্যে লুতফর রহমান আজ মোহামেডান ক্লাবের সংবাদ সম্মেলনেও উপস্থিত ছিলেন।