টেস্টে জো রুট এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিক। সামনে শুধু ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার (১৫,৯২১ রান)। রুট এখন শচীনের চেয়ে ২,৫১২ রানে পিছিয়ে। ৩৪ বছর ২০৮ দিন বয়সী এই ব্যাটসম্যান কি শচীনকে আসলেই পেছনে ফেলে টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে পারবেন?
পারলে রুটই পারবেন। কারণ, বর্তমান টেস্ট সূচিতে ‘বিগ থ্রি’ (অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ভারত) ছাড়া অন্য কোনো দেশের খেলোয়াড়দের পক্ষে টেন্ডুলকারকে টপকানো কার্যত অসম্ভব। নিউজিল্যান্ডের কেইন উইলিয়ামসনের কথাই ধরুন। তাঁর টেস্ট অভিষেক রুটের দুই বছর আগে।
রুটের গড় যেখানে ৫০, সেখানে উইলিয়ামসনের প্রায় ৫৫। তবু টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙার দৌড়ে নেই উইলিয়ামসন। তাঁর বয়স ৩৪ বছর ৩৫২ দিন এবং টেস্টে রান ৯,২৭৬। একই অবস্থা স্টিভ স্মিথের, তাঁরও রুটের দুই বছর আগেই অভিষেক, ব্যাটিং গড় ৫৬। কিন্তু এখনো রুটের চেয়ে ৩,০০০ রান পিছিয়ে স্মিথ।
অর্থাৎ টেন্ডুলকারের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারলে, সেটি রুটই পারবেন। আর যদি তিনি পারেন, তাহলে এই দৌড়ে ভবিষ্যতে হয়তো কেউই আর থাকবে না। কারণ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বাস্তবতায় সবাই রুট হতে পারবেন না। ২০১২ সালে অভিষেকের পর থেকে ইংল্যান্ডের ১৫৯টি টেস্টের মধ্যে যিনি ১৫৭টিই খেলেছেন। একবার ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বাদ পড়েছিলেন, আরেকবার ২০২০ সালে পিতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন।
সর্বশেষ ২৯ টেস্টে রুট রান করেছেন ২,৬৭৮। ৩৪ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান এখন নিজের সেরা ফর্মে। এই বয়সে কত দিন সেটা থাকবে, এটা একটা প্রশ্ন। যদিও আপাতত ফর্মের ঘাটতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে নানা কিছু বিবেচনায় নিয়ে রুট কবে টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙতে পারেন, তার একটি অনুমানভিত্তিক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। সেটি নিচে তুলে ধরা হলো-
রান: ১২০ (গড়: ৪৩.৩)
মোট রান পৌঁছাবে: ১৩,৫৩৯
এখনো বাকি দেড়টি টেস্টে (এক ইনিংস ও এক টেস্ট) ১৩০ রান করার সম্ভাবনা ধরা হয়েছে।
রান: ৩৭০ (গড়: ৩৭)
মোট রান: ১৩,৯০৯
এই সফর সম্ভবত তাঁর জন্য ‘চূড়ান্ত পরীক্ষা’। অস্ট্রেলিয়ায় রুট ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছেন। ১৪ টেস্টে ৯ বার পঞ্চাশের বেশি করেছেন। যদিও অস্ট্রেলিয়ায় কোনো সেঞ্চুরি নেই। সাম্প্রতিক কালে দেশটির উইকেট আরও বোলিং সহায়ক হয়ে উঠেছে।
রান: ২৭০ (গড়: ৪৫)
মোট রান: ১৪,১৭৯
নিউজিল্যান্ডের তরুণ পেসাররা ও ম্যাট হেনরি রুটকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন।
রান: ৩৩০ (গড়: ৫৫)
মোট রান: ১৪,৫০৯
২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে রুট নিজের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস খেলেন। করেছিলেন ২৫৪ রান। গত বছর পাকিস্তানে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও করেন।
রান: ২৪০ (গড়: ৪০)
মোট রান: ১৪,৭৪৯
দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর গড় ৫০.২, তবে সেখানে রান করা তুলনামূলকভাবে বেশ কঠিন।
রান: ২০০ (গড়: ৫০)
মোট রান: ১৪,৯৪৯
শেষবার বাংলাদেশ সফরে (২০১৬) রুটের গড় ছিল মাত্র ২৪.৫। তবে সেই রুট আর এই রুটের পার্থক্য আছে। স্পিনের বিপক্ষে রুটের গড় এখন ৬৩.৫, তাই বাংলাদেশ তাঁর জন্য উপযুক্ত।
রান: ৮০ (গড়: ৪০)
মোট রান: ১৫,০২৯
টেস্ট ক্রিকেটের ১৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে মেলবোর্নে একটি বিশেষ টেস্ট হবে। এটি রুটে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফর হতে পারে।
রান: ৬০ (গড়: ৬০)
মোট রান: ১৫,০৮৯
অ্যাশেজের আগে একটি প্রস্তুতি টেস্ট। প্রতিপক্ষ দুর্বল হলে হয়তো একবারই ব্যাটিংয়ের সুযোগ মিলবে।
রান: ৩৬০ (গড়: ৩৬)
মোট রান: ১৫,৪৪৯
৩৬ বছর বয়সে রুট কি ফর্ম হারাবেন? অনেক ব্যাটসম্যানই এই বয়সে পড়তির দিকে যান, কে জানে!
রান: ৩৫০ (গড়: ৩৫)
মোট রান: ১৫,৭৯৯
প্রতিপক্ষ এখনো নিশ্চিত নয়, তবে এ সময়ে ইংল্যান্ড ভারত সফর করতে পারে।
রান: ৩৯০ (গড়: ৩৫.৫)
মোট রান: ১৬,১৮৯
এই ছয়টি টেস্ট শুরুর আগে রুট টেন্ডুলকারের চেয়ে ১২২ রানে পিছিয়ে থাকবেন। এই সময়টাতেই রেকর্ডটি নিজের করে নিতে পারেন রুট। ৩৭ বছর বয়সে ফর্ম কি খুব হারাবেন? না হলে তো ১২২ রান করারই কথা!