এবি ডি ভিলিয়ার্স ও বিরাট কোহলি
এবি ডি ভিলিয়ার্স ও বিরাট কোহলি

কোহলিকে মন ‘রিসেট’ করতে বললেন ডি ভিলিয়ার্স

আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে ১১ মৌসুম একসঙ্গে খেলেছেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে এবি ডি ভিলিয়ার্সের সম্পর্কটা তাই শুধু সতীর্থ হিসেবেই নয়, বন্ধুত্বের দিক থেকেও ঘনিষ্ঠ। ব্যাট হাতে দুঃসময় পার করতে থাকা কোহলিকে সেই ডি ভিলিয়ার্সই ‘রিসেট বাটন’ চাপার পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থাৎ, সবকিছু নতুন করে শুরু করো।

দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি ডি ভিলিয়ার্স মনে করেন, কোহলির লড়াকু মনোভাব একই সঙ্গে তাঁর শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা। তাই ডি ভিলিয়ার্সের চাওয়া, কোহলি যেন প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের সঙ্গে মাঠে ঝামেলায় জড়ানো কমিয়ে দেন। আর ব্যাটিংয়ের সময় প্রতিটি বলের পর মানসিকভাবে নতুন করে স্থির হন।

ডি ভিলিয়ার্স কেন কোহলিকে এমন পরামর্শ দিলেন, তা সবার জানা। ব্যাট হাতে পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই; কিন্তু প্রতিপক্ষের সঙ্গে লেগে যেতে কিংবা বিতর্কের জন্ম দিতে পিছপা হননি। সদ্য সমাপ্ত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে কোহলিকে বেশির ভাগ মানুষ নিশ্চয় এভাবেই মনে রাখবেন।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে ১১ মৌসুম একসঙ্গে খেলেছেন কোহলি ও ডি ভিলিয়ার্স

এক দশক পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে টেস্ট সিরিজ হেরেছে ভারত। ভারতীয় দলের ব্যর্থতার দায় তো কোহলির ওপরও বর্তায়। সিরিজে একটা সেঞ্চুরি থাকার পরও ৯ ইনিংসে ২৩.৭৫ গড়ে করতে পেরেছেন ১৯০ রান। সর্বশেষ ৭ ইনিংসের পারফরম্যান্স তাঁর নামের সঙ্গে একেবারেই বেমানান ১২.১৪ গড়ে মাত্র ৮৫ রান।

সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ব্যাপার ছিল কোহলির আউট হওয়ার মুহূর্ত। সিরিজে ৮ বার তিনি আউট হয়েছেন। প্রতিবারই অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারকে অথবা স্লিপে ক্যাচ দিয়ে।

কিন্তু ফিল্ডিংয়ের সময় এমনকি মাঠের বাইরেও কোহলির আচরণ ছিল বেশ উত্তেজনাপ্রবণ। মেলবোর্ন বিমানবন্দরে নেমেই অস্ট্রেলিয়ার এক নারী সাংবাদিককে ধমক দিয়েছেন। বক্সিং ডে টেস্টে অভিষিক্ত স্যাম কনস্টাসকে কাঁধ দিয়ে ধাক্কা মেরেছেন।

গতকাল সিডনি টেস্ট হারের দিনে বাউন্ডারির কাছে ফিল্ডিংয়ের সময় প্যান্টের পকেট বের করে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বোঝাতে চেয়েছেন তাঁর কাছে কোনো শিরিষ কাগজ নেই। অর্থাৎ ২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্টে স্যান্ডপেপার গেট কেলেঙ্কারির বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ানদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।

ডি ভিলিয়ার্সের মনে হয়েছে, এবারের অস্ট্রেলিয়া সফরে কোহলি একটু বেশিই ঝামেলায় জড়িয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বিরাট (কোহলি) তার লড়াকু মনোভাব ও স্বভাবগত কারণে মাঝেমধ্যে ভুলে যায় (এমনটা করা উচিত নয়) এবং ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। সমগ্র ভারতকে দেখাতে চায় তাদের হয়ে লড়াই করার জন্য সে আছে। তার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও খ্যাতি এ ক্ষেত্রে কোনো বিষয় নয়। কখনো কখনো প্রতিটি বলের পরই এমনটা দেখা যায়। হয়তো কখনো কখনো সে অতিমাত্রায় (ঝামেলায়) জড়িয়ে পড়ে।’

২০২১ সালে খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় বলে দেওয়া ডি ভিলিয়ার্স আরও বলেন, ‘সে মাঠেই লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছে। এটা তার সবচেয়ে বড় শক্তি, আবার একই সঙ্গে দুর্বলতাও হতে পারে। এই সিরিজে আমরা কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত লড়াই দেখেছি। এমনকি দর্শককেও উত্তেজিত করে তুলতে বাদ রাখেনি।’

যেহেতু অনেক দিন হলো ব্যাট হাতে ছন্দে নেই, তাই কোহলিকে ঝামেলা এড়িয়ে ব্যাটিংয়ে আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডি ভিলিয়ার্স, ‘আমার মনে হয় তার মনকে নতুন করে স্থির করতে হবে। সে লড়াই করতে ভালোবাসে। কিন্তু তুমি যখন ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে নেই, তখন এসব থেকে দূরে থাকাই ভালো হবে। ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিটি বলেই মনকে রিসেট করতে হবে এবং মনে করতে হবে একেকটি বল একেকটি ইভেন্ট। কে বল করছে, তা ভুলে যাও।’