পরিকল্পনা অনুৃযায়ী বোলিং করার সুফল পেয়েছে বাংলাদেশ
পরিকল্পনা অনুৃযায়ী বোলিং করার সুফল পেয়েছে বাংলাদেশ

টানা ৬ হারের পর যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই সিরিজ জয় বাংলাদেশের

হারতে হারতে খাদের কিনারায়ই পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু, এরপর পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় সিরিজের প্রথম ম্যাচ মিলিয়ে তারা হেরেছিল টানা ৬ ম্যাচ। ধাক্কাটা লিটন দাসের জন্যই ছিল বেশি। আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি সংস্করণে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর থেকেই হারের বৃত্তে বন্দী তাঁর দল।

অবশেষে বাংলাদেশ সেই বৃত্ত থেকে বের হয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে। ওই ম্যাচে ৮৩ রানের জয় বাংলাদেশকে খুঁজে দেয় নতুন পথ। কলম্বোয় শেষ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার মাটিতে তাদের বিপক্ষে সিরিজ জেতে।

সেই আত্মবিশ্বাস সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশ নামে পাকিস্তানের বিপক্ষে। গত মে মাসে লাহোরে তাদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার স্মৃতি সঙ্গে ছিল। তবে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে পা হড়কায়নি বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলে। কাল শেষ ম্যাচ হারলেও তাই ট্রফিটা উঠেছে লিটনের হাতে।

টানা ৬ হারের পর কীভাবে টানা এই দুই সিরিজ জয়? প্রশ্নের জবাবে কাল মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেছেন, ‘ফিরে আসার মতো একটা জিনিসই ছিল, এক্সিকিউশনটা (প্রয়োগ) ভালো হয়নি। আমার মনে হয় যে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলাম, (প্রথম ম্যাচে) শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের কোথায় বল করব। পরের দুই ম্যাচে ওটা (পরিকল্পনা) অনুসরণ করে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’

কাল শেষ ম্যাচে হারলেও সিরিজ জয়ের ট্রফি নিয়ে উল্লাস করেছে বাংলাদেশ দল

এ তো গেল শ্রীলঙ্কার কথা। কিন্তু পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে কেন ও রকম হার? ওই ব্যাখ্যাও আছে লিটনের কাছে, ‘আমরা যখন আমিরাত এবং পাকিস্তানে খেলি, কিছুটা ক্রাইসিস মোমেন্টের ভেতর ছিলাম। অধিনায়ক হিসেবে আমার দলের যাঁরা সেরা সেরা খেলোয়াড়, তাঁদের পাইনি। তাসকিনকে পাইনি, মোস্তাফিজ চলে গিয়েছিল আইপিএলে। আমরা সবাই জানি মোস্তাফিজ কতটা সামর্থ্য রাখে একটা দলের জন্য, কতটা বিধ্বংসী হতে পারে প্রতিপক্ষের জন্য। পাকিস্তানেও একই, অনেকজন খেলোয়াড় আমরা খেলাতে পারিনি।’

কিন্তু চোট বা অন্য কোনো কারণে তো ক্রিকেটাররা নাই থাকতে পারেন। তাহলেই কি এমন হার হবে? দায়টা নিজেদের খেলার দিকেও এরপরই নিয়েছেন লিটন। তাঁর বিশ্বাস, পুরো দল নিয়ে খেলতে পারায় শ্রীলঙ্কার পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও সাফল্য পাওয়া গেছে।

লিটন বলেছেন, ‘যে খেলোয়াড়গুলো আমাদের হাতে ছিল, তারা ভালো ক্রিকেট খেলেনি (হেরে যাওয়া দুই সিরিজে)। এরপর আমরা যে দুইটা সিরিজ খেললাম শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান—আমার কাছে মনে হয়, পুরো সেট আপ নিয়ে যেতে পেরেছি। আমরা দেখিয়েছি ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, এটা যেন ধারাবাহিকভাবে করতে পারি।’

এই ভালো করার জন্য একটা উন্নতির জায়গাও বের করেছেন লিটন, ‘শেষ কিছুদিন ধরে আমার কাছে মনে হয় যে জিনিসটা একটু স্ট্রাগল করছি, আমরা নতুন বলে খুব ভালো করছি, ডেথ বোলিংটা আরেকটু ভালো করতে হবে।’

শেষের দিকে বোলিংটা আরও ভালো চান লিটন

তবে মাস দেড়েক পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া কাপের আগে উন্নতির ওই সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। কারণ, এই সময়ে বাংলাদেশের যে কোনো সিরিজই নেই। আগস্টের ভারতের তিন ওয়ানডে ও সমানসংখ্যক টি-টোয়েন্টির সিরিজ দেওয়া হয়েছে পিছিয়ে।

এশিয়া কাপের আগে সিরিজ না থাকা নিয়ে প্রশ্নে লিটন বলেছেন, ‘এই বিরতির পর ফিটনেস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ফিটনেস ক্যাম্প হওয়ার পর যদি একটা সিরিজ হয়, তাহলে আমাদের জন্য ভালো।’