পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

জারদারির অতিথি বাংলাদেশ দল, বললেন, ‘হৃদয়গুলো জোড়া লাগানোর সময় এসেছে’

তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে গেছে বাংলাদেশ। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। একই ভেন্যুতে আজ রাতে নিয়ম রক্ষার তৃতীয় টি–টোয়েন্টি। অবশ্য ম্যাচটি লিটন দাসের দলের জন্য ধবলধোলাই এড়ানোর লড়াই।

শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দলকে লাহোরের গভর্নর হাউসে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আজ সেখানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা–বাণিজ্য, খেলা, সংস্কৃতি, মানবিক বন্ধনসহ সব ক্ষেত্রে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়।

অনুষ্ঠানে জারদারি বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার (বাংলাদেশের সঙ্গে) একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করার চেষ্টা করছে। তবে এটি এক রাতেই সম্ভব নয়। আমাদের বিনিয়োগ করে যেতে হবে এবং নতুন সমাধানের মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে হবে।’

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি

বাংলাদেশ–পাকিস্তান দুই দেশেরই ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল মন্তব্য করে জারদারি আর বলেন, ‘পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে আগ্রহী। পাকিস্তান সরকারও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করতে চায়। আমাদের দুই জাতির ভবিষ্যৎই উজ্জ্বল।’

জারদারি বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস এবং এ দেশের জনগণেরও প্রশংসা করেন, ‘বাঙালি জাতি এই অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জাতি এবং তাদের গর্ব করার মতো একটি ইতিহাস আছে।’

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি সফল উদাহরণ। অর্থনীতি ও মানবসম্পদ—দুটিতেই আল্লাহ আপনাদের শক্তি দিয়েছেন।’

১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণা করে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্ম জানে না, আমরা কতটা বেদনার মধ্য দিয়ে গেছি। আমরা একে অন্যের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিলাম। এখন সেই হৃদয়গুলো জোড়া লাগানোর সময় এসেছে।’

পাকিস্তান দলের সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি

বাংলাদেশ দলের উদ্দেশে জারদারি বলেন, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা, যা বিশ্বব্যাপী মানুষকে একত্র করে। আমি খুশি যে আপনাদের সবাইকে পাকিস্তানে, লাহোরে স্বাগত জানাতে পারছি। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক সফর হবে।’

জারদারি পেটারো ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে কয়েকজন বাংলাদেশির বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। সেসব বাংলাদেশির সঙ্গে এখনো তাঁর যোগাযোগ হয় বলেও জানান তিনি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আসার কথাও জানিয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী এই রাষ্ট্রপতি, ‘দীর্ঘদিন হলো ঢাকায় যাওয়া হয়নি। বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।’

অনুষ্ঠানে দুই দলের খেলোয়াড়েরা ছাড়াও পাঞ্জাবের গভর্নর সর্দার সেলিম হায়দার খান, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নকভি, পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন, পিসিবি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আমির মির এবং দুই দলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারিকে একটি স্মারক জার্সি উপহার দেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি

প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি দুই দলের সঙ্গে গ্রুপ ছবি তোলেন এবং সফররত বাংলাদেশ দলের কর্মকর্তাদের হাতে স্মারক তুলে দেন। এ সময় পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি প্রেসিডেন্ট জারদারিকে একটি স্মারক জার্সি উপহার দেন।