Thank you for trying Sticky AMP!!

বেঙ্গালুরুকে ১ রানে হারিয়েছে কলকাতা

কলকাতার ২২২-এর পর ১ রানের বেদনা বেঙ্গালুরুর

কলকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২২৩ রানের লক্ষ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর শেষ ওভারে দরকার ছিল ২১ রান, মিচেল স্টার্কের প্রথম ৪ বলে কর্ণ শর্মা মারেন ৩টি ছক্কা। সেই কর্ণ, যাঁকে আগের ওভারে স্ট্রাইক দেননি দিনেশ কার্তিক। কিন্তু ২ বলে ৩ রান দরকার থাকার সময় লো ফুল টসে টেনে মারতে গিয়ে স্টার্কের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে থামতে হয় কর্ণকে। শেষ বলে লকি ফার্গুসন ডাবলস নিতে পারলে টাই হতো ম্যাচটা, থ্রো-টা সুবিধার না হলেও ফার্গুসনকে রানআউট করেন ফিল সল্ট। ইংলিশ উইকেটকিপার এ ওভারেই কর্ণের নিচু ক্যাচ নিতে পারেননি ঠিকঠাক।

ইডেন গার্ডেনসে নাটকীয় ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হৃদয়ভঙ্গই হয়েছে বেঙ্গালুরুর। যেটি হতে পারত আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া, সে ম্যাচে তারা হেরেছে ১ রানে। শেষ ওভারে খলনায়ক হতে হতে নায়কই বনে গেছেন স্টার্ক আর হঠাৎ নায়ক হতে গিয়েও হননি কর্ণ। এ জয়ে ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে কলকাতা, অন্যদিকে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বেঙ্গালুরুর আরেকটি জয়ের অপেক্ষা দীর্ঘই হয়েছে।

বিরাট কোহলির ৭ বলে ১৮ রানের ইনিংসে শুরুটা ঝোড়ো হয় বেঙ্গালুরুর, কিন্তু তারাও পাওয়ারপ্লেতে হারায় ২ উইকেট। কোহলির আউট নিয়ে অবশ্য তৈরি হয় বিতর্ক। হারশিত রানার ফুল টসে ভড়কে গিয়ে লিডিং এজে ফিরতি ক্যাচ দেন ক্রিজের বাইরে থাকা কোহলি, অন ফিল্ড আম্পায়ার নো বল না দিলে সেটি রিভিউ করেন তিনি। নতুন পদ্ধতিতে বল ট্র্যাকিংয়ে বলের অনুমিত গতিপথের সঙ্গে দাঁড়ানো অবস্থায় ব্যাটসম্যানের পা থেকে কোমর উচ্চতার পার্থক্য মেপে নির্ধারণ করা হচ্ছে নো বল। সে অনুযায়ী, কোহলির কোমরের (১.০২ মিটার) চেয়ে বলের (০.৯২) উচ্চতা ছিল কমই।

কর্ণ শর্মা আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ সিরাজের ছবিটাই বলে দিচ্ছে সব

৩৫ রানে ২ উইকেট হারানো বেঙ্গালুরু অবশ্য শক্ত একটা ভিত পায় উইল জ্যাকস ও রজত পাতিদারের জোড়া ফিফটি এবং দুজনের ৪৮ বলে ১০২ রানের জুটিতে। ৩২ বলে ৫৫ রান করা জ্যাকসের পর ২৩ বলে ৫২ রান করা পাতিদারকে একই ওভারে ফেরান রাসেল, ব্যাটিংয়ে তেমন সুবিধার দিন না কাটালেও বোলিংয়ে ঠিকই প্রভাব রাখেন এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার।

Also Read: ‘ব্যাটিং এনে দেবে স্পনসর, বোলিং দেবে শিরোপা’

মাঝের ওভারে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও বেঙ্গালুরুর আশা হয়ে ছিলেন দিনেশ কার্তিক। সমীকরণটা কঠিন হয়ে উঠছিল, শেষ দিকে সিঙ্গেলও ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। রাসেলের স্লো বাউন্সারে আগে থেকেই স্কুপ করতে উদ্যত কার্তিক ক্যাচ তুলে থামেন ১৯তম ওভারের শেষ বলে, বেঙ্গালুরুর তখনো দরকার ২১ রান। এ উইকেটে গতি কমিয়ে আনা বল কার্যকর হলেও স্টার্ক শেষ ওভারে তেমন কিছু করেননি শুরুতে, তার খেসারতও দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হাঁপ ছেড়েই বাঁচেন আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়।

এর আগে পাওয়ারপ্লেতে কলকাতা প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে তোলে ৭৫ রান। এর মধ্যে সুনীল নারাইন ও অংক্রিশ রঘুবংশী মিলে ১৯ বলে ১৩ রান করলেও কলকাতা অমন শুরু পায় সল্টের ১৪ বলে ৪৮ রানের ইনিংসে, প্রথম ১৩ বলের ১০টিতেই ইংলিশ ব্যাটসম্যান মারেন বাউন্ডারি।

Also Read: আইপিএলে রানবন্যা থামাতে বিসিসিআইকে যে পরামর্শ গাভাস্কারের

পাওয়ারপ্লেতে করা একমাত্র ওভারে লকি ফার্গুসন দেন ২৮ রান, কিন্তু পরের ৩ ওভারে কিউই ফাস্ট বোলার খরচ করেন ১৯ রান। বেঙ্গালুরু পাওয়ারপ্লের শেষ দিক থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় ভালোভাবে, ৭-১৬ ওভারের মধ্যে কলকাতা তুলতে পারে মাত্র ৮০ রান। অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার পান ২০২২ সালের মে মাসের পর প্রথম আইপিএল ফিফটি। শুরুতে সময় নিলেও পরে সেটি পুষিয়ে দেন ভালোভাবেই। প্রথম ২১ বলে ২৫ রান করা শ্রেয়াস ফিফটিতে যান ৩৫ বলে, যদিও ঠিক পরের বলেই আউট হন।

কোহলির আউটে তৈরি হয় বিতর্ক

মাঝে রিঙ্কু সিং ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার রানের গতিটা ধরে রাখলেও কলকাতা বড় লাফ দিতে পারেনি। আগে থেকেই বলের গতি কমিয়ে আনা ও ইয়র্কার করে এমন উইকেটে কার্যকর বোলিং করে বেঙ্গালুরু। আন্দ্রে রাসেল প্রথম ১৫ বলে করেন মাত্র ১৬ রান, যদিও শেষ করেন ২০ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থেকে। রমণদীপ সিংয়ের ৯ বলে ২৪ রানের ক্যামিওতে কলকাতা যায় ২২২ রান পর্যন্ত।

এ মৌসুমে ২০০ বা এর বেশি রানের ১৬তম স্কোর ছিল সেটি, আইপিএলের এক মৌসুমে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। বেঙ্গালুরু সে সংখ্যাকে নিয়ে যায় ১৭-তে। কিন্তু সেটি হয়তো বেদনা আরও বাড়িয়েই দিয়েছে কোহলিদের।