শততম টেস্টের প্রথম সকালে মাঠে এসেছিলেন মুশফিকের পরিবারের সদস্যরা। এক পর্যায়ে নিজের অভিষেক টেস্টের ক্যাপ পরিয়ে দেন মেয়ের মাথায়
শততম টেস্টের প্রথম সকালে মাঠে এসেছিলেন মুশফিকের পরিবারের সদস্যরা। এক পর্যায়ে নিজের অভিষেক টেস্টের ক্যাপ পরিয়ে দেন মেয়ের মাথায়

সেই ক্যাপ আমৃত্যু রাখতে চান মুশফিক

সেই সবুজ ক্যাপ এখন ধূসর হয়ে গেছে। মুশফিকুর রহিমেরও বয়স বেড়েছে। কিন্তু ২০ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে সেই ক্যাপটাকে ছেড়ে যাননি। এক শ টেস্টের সবগুলোতেই তাঁর সঙ্গী হয়েছে অভিষেক টেস্টের সময় পাওয়া ‘গ্রিন ক্যাপ’। ৯৯তম টেস্টে মাঠে নামার আগে ফেসবুকে ক্যাপের ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘উত্থান–পতনের সঙ্গী।’

অভিষেক টেস্টে পাওয়া ক্যাপটার সঙ্গে মুশফিকের বহু স্মৃতি। ২০০৫ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক, কখন থেকে এই ক্যাপ বয়ে বেড়ানোর ভাবনা এল?

আজ মিরপুরের সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে মুশফিক বলেছেন, ‘টেস্টের সবচেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে আপনার ব্যাগে গ্রিন ক্যাপ। এটার মর্যাদা যদি একটা খেলোয়াড় না বোঝে, এটা আসলে তাকে বলে বোঝানো যায় না। আর আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন আমি এমন কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই, যেখানে ক্যাপ পরে ফিল্ডিং বা কিপিং না করি।’

২০ বছর ধরে বয়ে চলা ক্যাপটা আমৃত্যু রাখতে চান বলেও জানিয়েছেন তিনি, ‘বলতে পারেন যে এই ক্যাপটা শুধু ফিল্ডিং করতে করতে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। কারণ, ক্যাপ পরে খুব কমই আমি ব্যাটিং করি, হেলমেট পরে বেশির ভাগ সময় ব্যাটিং করা হয়। কিন্তু এটা আমার একটা সিম্বল। আমি মনে করি যে এটা অনেক বড় একটা পাওয়া আমার জন্য, আশা করি আমৃত্য আমি এটা বয়ে নেব।’

মুশফিকের মাথায় রংচটা ক্যাপটা আলাদা করে বোঝা যায়

শততম টেস্ট ঘিরে মুশফিককে অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকেই। এর মধ্যে আছেন বাংলাদেশের ফুটবল তারকা হামজা চৌধুরীও। একটি ভিডিও বার্তায় মুশফিককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। সেটি চোখে পড়েছে মুশফিকেরও।  

সুযোগ পেলে তাঁকে ধন্যবাদ জানানোর কথাও বলেছেন মুশফিক, ‘আজ সকালে শুনেছি (হামজা অভিনন্দন জানিয়েছে)। পরে আমি আমার ম্যানেজারের মোবাইল থেকে দেখেছি। আমি খুবই অবাক হয়েছি এটা দেখে। আশা করি যদি সামনাসামনি দেখা হয় কখনো, ইনশা আল্লাহ অবশ্যই তাঁকে ধন্যবাদ জানাব।’

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনটা মুশফিক শেষ করেছিলেন ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে। আজ এক রান করতে ৯ বল খেলেন মুশফিক। ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। এমন অর্জন উৎসর্গ করতে গিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন মুশফিক।

মুশফিকের মাথায় উঠেছে শততম টেস্টের ক্যাপ

তিনি বলেন, ‘আমার দাদা–দাদি আর নানা–নানিকে উৎসর্গ করব। কারণ, তাঁরা যখন বেঁচেছিলেন, আমার সবচেয়ে বড় ভক্ত ছিলেন। তাঁরা যখন মারা যান, তার আগে যখন অসুস্থ ছিলেন, আমার এখনো মনে আছে আমার দাদা–দাদি, নানা–নানি সবাই বলেছিলেন যে ভাই, তোমার খেলা দেখার জন্য হলেও আমি আরও কয়েকটা দিন বেঁচে থাকতে চাই। এমন খুব কম নাতি–নাতনির ভাগ্যে জোটে। তাঁদের দোয়াতেই আমি আজকে এত দূর।’