বোলার ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার আয়াবোঙ্গা খাকা। গতকাল নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের ঘটনা। ভারতের ইনিংসে অষ্টম ওভারের প্রথম বলটাই বোলার খাকার মাথার ওপর দিয়ে সীমানা ছাড়া করলেন স্মৃতি মান্ধানা। ওই ছক্কাতেই এ বছর ওয়ানডেতে ভারতের এই ব্যাটারের রান দাঁড়াল ৯৭২। তাতেই হয়ে গেল এক পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডেতে কোনো নারী ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ১৯৯৭ সালে ১৬ ম্যাচের ১৪ ইনিংসে ৯৭০ রান করে এত দিন যে রেকর্ডের মালিক ছিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার বেলিন্ডা ক্লার্ক।
শেষ পর্যন্ত মান্ধানা আউট হয়েছেন ৩২ বলে ২৩ রান করে। ভারতের মেয়েরা দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েদের কাছে ম্যাচটা হেরে গেছে ৩ উইকেটে। তবে মান্ধানা এগিয়ে গেছেন ঐতিহাসিক এক মাইলফলকের দিকে। আপাতত এ বছর ওয়ানডেতে তাঁর মোট রান ৯৮২। এ বছর আরও অন্তত চারটি ম্যাচ বাকি ভারতের। ইতিহাসের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডেতে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে মান্ধানার দরকার আর মাত্র ১৮ রান।
ওদিকে মান্ধানার ওপেনিং সঙ্গী প্রতিকা রাওয়াল করেছেন ৭৭৩ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার তাজমিন ব্রিটসের রান ৭৪৯। অর্থাৎ অন্তত তিনজন ব্যাটার আছেন, যাঁদের এ বছর হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার বাস্তব সম্ভাবনা আছে।
এর আগে ২০১৬, ২০১৭ আর ২০২২ সালে তিনজন করে ব্যাটার ৭০০ রানের বেশি করেছিলেন। এ বছর এরই মধ্যে তিন ব্যাটারের রান ৭০০ পেরিয়ে গেছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের সিদরা আমিন (৬৩৪) ও ভারতের হারলিন দেওলও (৫৫১) যোগ হতে পারেন এই তালিকায়। লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েদের ওয়ানডেতে রান প্রসবা এই চারটা বছরের মধ্যে তিনটিই হচ্ছে বিশ্বকাপের বছর। আর বিশ্বকাপ মানেই তো বেশ কিছু অতিরিক্ত ম্যাচ—ফলে রান সংখ্যাও বাড়ে।
পুরুষদের ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ১৪৯ বার কোনো ব্যাটসম্যান এক বছরে হাজার রান করেছেন। এর মধ্যে আটবার ১৫০০ রানেরও বেশি।
নারীরা পিছিয়ে থাকার বড় কারণ ম্যাচ সংখ্যার পার্থক্য। নারীদের মধ্যে এক বছরে সর্বাধিক ওয়ানডে খেলার রেকর্ড ইংল্যান্ডের, ২০০০ সালে ২৪টি। ওই সংখ্যাকে সীমা ধরলে দেখা যায়, পুরুষদের মধ্যে মাত্র ২৮ জন বছরে ২৪ ম্যাচ বা তার কম ম্যাচ খেলে ১০০০ রান করেছেন।
তাহলে কি সাম্প্রতিক সময়ে নারীদের রান বেড়ে যাওয়ার কারণ ম্যাচ বেড়ে যাওয়া?
পুরোপুরি তা নয়। এই শতকে কোনো নারী দলই ধারাবাহিকভাবে অনেক বেশি ওয়ানডে খেলছে না। ভারত এ বছর খেলেছে ১৭টি, সামনে আরও ৪টি আছে। ২০০৬ সালে তারা খেলেছিল ২৩টি, ২০১৭ সালে ২০টি। এটা এখন নির্ভর করে আসলে সামনে কোন সংস্করণের বড় ইভেন্ট আছে, তার ওপর। যে সংস্করণের বিশ্বকাপ সামনে থাকে, সেটাই অগ্রাধিকার পায়। ফলে ম্যাচ কিছুটা বাড়লেও পুরুষদের সমান হয়নি। এ কারণেই মেয়েদের ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে কাউকে ১০০০ রান করতে দেখার অপেক্ষাটা এত দীর্ঘ! এ কারণেই মান্ধানার ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করলে সেটা হবে ঐতিহাসিক এক ঘটনা।