
বেনেফিট অব ডাউট ব্যাটসম্যান ফখর জামানের দিকেই যাওয়ার কথা। কিন্তু একাধিক অ্যাঙ্গেল থেকে রিপ্লে দেখার পর ফখরকে আউট দিয়েছেন টিভি আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিয়াগুরুগে।
হার্দিক পান্ডিয়ার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন ফখর জামান। ভারতের উইকেটকিপার সঞ্জু স্যামসন ক্যাচ ঠিকভাবে নিয়েছেন নাকি বল তাঁর গ্লাভসে জমা হওয়ার আগে মাটিতে পড়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেননি বাংলাদেশি আম্পায়ার গাজী সোহেল। এ কারণে সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয় টিভি আম্পায়ারকে।
বেনেফিট অব ডাউট ব্যাটসম্যান ফখরের দিকেই যাওয়ার কথা। কিন্তু একাধিক অ্যাঙ্গেল থেকে রিপ্লে দেখার পর ফখরকে আউট দিয়েছেন টিভি আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিয়াগুরুগে। জায়ান্ট স্ক্রিনে O U T লেখা ভেসে ওঠার পর ফখরের যেন বিশ্বাসই হতে চাইছিল না।
বিশ্বাস হবে কী করে! টিভি রিপ্লেতে বোঝা যাচ্ছিল, বল আগে মাটিতে পড়েছে, এরপর স্যামসনের গ্লাভসে গেছে। সাধারণত তৃতীয় আম্পায়ার ‘সন্দেহাতীতভাবে’ নিশ্চিত হলে আউট দিয়ে থাকেন। সন্দেহ থাকলে রায় ব্যাটসম্যানের পক্ষে যায়।
তবে সেটি না হওয়ায় অবিশ্বাস নিয়ে মাথা নাড়াতে নাড়াতে মাঠ ছেড়েছেন ফখর। ড্রেসিংরুমে ঢোকার আগে প্রধান কোচ মাইক হেসনের কাছেও নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুবাইয়ে গতকাল রাতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে ফখরের এই বিতর্কিত আউট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) ফেসবুক পেজে পোস্ট করা পান্ডিয়ার উইকেট উদ্যাপনের ছবিতে তো এক পাকিস্তানি সমর্থক ক্ষোভ নিয়ে লিখেছেন, ‘ভারত সবসময়ই দ্বাদশ খেলোয়াড় (আম্পায়ারের পক্ষপাতিত্ব) নিয়ে খেলে।’
ম্যাচ শেষে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগাও ফখরের আউট সন্দেহের কথা বলেছেন। অসন্তোষ জানিয়েছেন ওয়াসিম আকরাম। শোয়েব আখতারও টিভি আম্পায়ারকে একহাত নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সালমান বলেছেন, ‘আম্পায়াররাও ভুল করতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছিল বলটা উইকেটকিপারের গ্লাভসে যাওয়ার আগে মাটিতে পড়েছিল। আমি ভুলও হতে পারি। তবে ফখর যেভাবে খেলছিল, যদি পাওয়ারপ্লে পর্যন্ত টিকে যেত, তাহলে আমরা হয়তো ১৯০ তুলতে পারতাম। কিন্তু এটা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। তিনিও ভুল করতে পারেন।’
সাইম আইয়ুব ওপেনিংয়ে ভালো করতে না পারায় গতকাল ইনিংস উদ্বোধনে সাহিবজাদা ফারহানের সঙ্গী হন ফখর। পাকিস্তানকে তিনি উড়ন্ত শুরুই এনে দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। বিতর্কিতভাবে আউট হওয়ার আগে তিন বাউন্ডারিতে করেন ৮ বলে ১৫ রান। পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ১৭২ রানের লক্ষ্য দিতে পারে ভারতকে। সেই লক্ষ্য ৭ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় সূর্যকুমার যাদবের দল।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রীড়া চ্যানেল পিটিভি স্পোর্টসের আলোচনা অনুষ্ঠানে শোয়েব আখতার বলেছেন, ‘ফখর আসলে আউট ছিল না। রিভিউয়ে যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধা থাকে, তাহলে সুবিধাটা ব্যাটসম্যানের দিকেই যাওয়ার কথা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মাঠে ২৬টি ক্যামেরা থাকার পরও তারা সঠিক অ্যাঙ্গেল পেল না। শুধু দুটি অ্যাঙ্গেল দেখে তাকে আউট দিয়ে দিল। কে জানে, ফখর যদি উইকেটে টিকে যেত, তাহলে ম্যাচের ফল হয়তো অন্য রকম হতো। আম্পায়ারিংয়ের মান একেবারে হাস্যকর। বল স্পষ্টতই মাটিতে পড়েছিল, গ্লাভস তখন বলের নিচে ছিল না।’
কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম এশিয়া কাপে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে আছেন। কাল ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়ই তিনি বলেন, ‘ফখরকে আউট দেওয়ার আগে আম্পায়ারের আরও কয়েকটা অ্যাঙ্গেল দেখে নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল। আর যদি পরিষ্কার প্রমাণ না থাকে, তাহলে সুবিধাটা ব্যাটসম্যানের দিকেই দেওয়া উচিত।’