সেঞ্চুরির পর ব্যাটে চুমু মিরাজের
সেঞ্চুরির পর ব্যাটে চুমু মিরাজের

সাকিবের ক্লাবে মিরাজ, শেষ ব্যাটসম্যানকে সঙ্গে নিয়ে করলেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও

লাঞ্চের পর তখনো খেলা শুরু হয়নি। বোলার ব্লেসিং মুজারাবানি থেকে ব্যাটসম্যান তানজিম হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ—সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন সময়েই চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে মিরাজের নতুন কীর্তি ভেসে উঠল। ২৬তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের জন্য মিরাজকে জানানো হলো অভিনন্দন। মিরাজের চোখও পড়ল স্ক্রিনে। খানিকক্ষণ তাকিয়েও রইলেন। নিজের কীর্তিতে অভিনন্দন পেতে কার না ভালো লাগে!

এ ঘটনার পর মিরাজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কীর্তি গড়েছেন আরও একটি। পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তাতে মিলেছে দর্শকের হাততালি, সতীর্থদের অভিবাদন। তাঁর উদ্‌যাপনই বলে দিচ্ছিল সেঞ্চুরিটি তাঁর জন্য কতটা বিশেষ।

তানজিমের আউটের পর মিরাজের সেঞ্চুরিটা এসেছে কিছুটা নাটকীয়ভাবে। শেষ উইকেটে মিরাজকে ৯৯ রানে নন–স্ট্রাইকে রেখে হাসান মাহমুদ যেভাবে ভিনসেন্ট মাসেকেসার ৫টি বল কোনোমতে ঠেকালেন, তাতে মিরাজের সেঞ্চুরিতে বিশেষ অবদান তিনি দাবি করতেই পারেন।

সেঞ্চুরির পর উদ্‌যাপন মিরাজের

টেস্টে মিরাজ সেঞ্চুরি পেয়েছেন চার বছরের বেশি সময় পর। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন সেই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, এই চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দলের জন্যও মিরাজের এমন একটা ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। তাঁর ব্যাটিংয়েই চট্টগ্রাম টেস্টে এখন চালকের আসনে বাংলাদেশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১২৭ ওভারে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ৯ উইকেটে ৪৪২।

১৬ রানে তৃতীয় দিনটা যখন শুরু করেন মিরাজ, তখন বাংলাদেশ লিড ছিল ৬৪। হাতে ছিল ৩ উইকেট। সেখান থেকে শুরুতে তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে আজ সকালে যোগ করেন ৫১ রান। তাইজুল ২০ রানে ফিরে গেলেও তানজিমের সঙ্গে গড়েছেন ৯৬ রানের জুটি। তাতে ঘরের মাঠে প্রায় দুই বছর ও ১৫ ইনিংস পর ৪০০ করতে পারল বাংলাদেশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২১৫ রানের লিড নিয়েছে বাংলাদেশ। মানে চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের জন্য ম্যাচে ফেরা এখন বেশি কঠিনই। এতে তানজিমের কৃতিত্বও অনেক। এই বোলিং অলরাউন্ডার করেছেন ৪৩ রান।

শেষের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দারুণ ব্যাট করেছেন মিরাজ

২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের ক্লাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে নাম লেখালেন মিরাজ। অন্য ক্রিকেটারটি যে সাকিব আল হাসান, সেটা না বললেও চলে। সাকিবের চেয়ে অবশ্য এক টেস্ট কম খেলেই এ ক্লাবে ঢুকলেন মিরাজ। সাকিবের লেগেছিল ৫৪ টেস্ট, মিরাজের ৫৩। মানে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের কীর্তিতে মিরাজই দ্রুততম।

১৯৬৪ রান নিয়ে এই টেস্টে ব্যাটিং শুরু করা মিরাজকে এদিনও মুজারাবানির বাউন্সারের পরীক্ষায় পড়তে হয়েছে। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মুজারাবানির বাউন্সারে আউট হওয়া মিরাজ আজ ছিলেন আক্রমণাত্মক। বাউন্সারে ব্যাট চালিয়ে গেছেন। রানও পেয়েছেন।