
পারলেন না রিপন মণ্ডল। পারলেন না আবদুল গাফফার সাকলাইন। পারলেন না দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়ে রূপকথার গল্প লিখতে। কাতারের দোহায় ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য কিছুই করেছিলেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ১০ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান। আর তাতেই খাদের কিনার থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসের ফাইনালটাকে সুপার ওভারে নিয়ে যেতে পেরেছিল বাংলাদেশ ‘এ’। তবে শেষ হাসিটা হাসল পাকিস্তান শাহিনসই। সুপার ওভারে রিপনদের হারিয়ে রেকর্ড তৃতীয়বারের মতো উদীয়মানদের এশিয়া কাপ জিতল শাহিনস নামেই পরিচিত পাকিস্তান ‘এ’ দল।
১২৬ রানের লক্ষ্য। ৫৩ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ ‘এ’। এরপর এস এম মেহেরব ও রাকিবুল হাসান আশার পালে হাওয়া লাগালেও দলকে জয়ের বন্দরে নিতে পারেননি। এ দুজনও যখন ফিরলেন ৯৬ রানে ৯ উইকেট নেই বাংলাদেশ ‘এ’ দলের।
এরপর গাফফারকে নিয়ে অবিশ্বাস্য কিছুই করলেন রিপন । পাকিস্তান শাহিনসের ইনিংসে বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া রিপন ব্যাট হাতেও খেললেন ১১ রানের ইনিংস। আরেক পেসার সাকলাইনও (১৬*) সাহায্যের হাত বাড়ালেন। ১৯তম ওভারে ২০ রান তুললেও অবশ্য শেষ ওভারে ৭ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি তাঁরা। তবে শেষ বলে ১ রান নিয়ে ম্যাচটা টাই করে সুপার ওভারে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালটাকে।
তবে সেমিফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের মতো আজ আর সুপার ওভার শেষে হাসতে পারেননি আকবর আলীরা। আহমেদ দানিয়ালের করা সুপার ওভারে একটি ওয়াইড ডেলিভারি থেকে ৫ রান এলেও ৩ বলের মধ্যে বাংলাদেশ ‘এ’ অলআউট ৬ রানে। রিপনের করা সুপার ওভারে ৭ রানের লক্ষ্যটা ৪ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন সাদ মাসুদ ও মাজ সাদাকাতরা।
ফাইনালটা বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নভঙ্গের ম্যাচই হয়ে রইল শেষ পর্যন্ত। অথচ পাকিস্তান শাহিনসের ইনিংসটা শেষ হতেই রং চড়েছিল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের স্বপ্নে। শাহিনস যে ১২৫ রানেই অলআউট। প্রথমবারের মতো উদীয়মানদের এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেই স্বপ্ন ধূসর হতে অবশ্য সময় লাগেনি। ফাইনালের চাপেই পিষ্ট হয়েই কিনা ৫৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ ‘এ’। এরপর শেষের ওই নাটক।
রান তাড়ায় ওপেনার জিশান আলম ৬ রান করে ফিরে গেলেও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের শুরুটাকে খারাপ বলার উপায় রাখেননি আরেক ওপেনার হাবিবুর রহমান। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা হাবিবুর ১৬ বলেই ২৬ রান তুলে দলকে ৩.৫ ওভারে ৩৬ রান এনে দিয়েছিলেন। সবকিছু বদলে গিয়েছিল ওভারের শেষ বলটাতেই। সাদ মাসুদের বল টাইমিংয়ে গড়বড় করে সহজ ক্যাচ তুলে হাবিবুর ফিরতেই ধসের শুরু। ৩৬ থেকে ৫৩, ১৭ রানের মধ্যেই নেই ৬ উইকেট।
এর আগে বাংলাদেশের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২৫ রানে অলআউট পাকিস্তান শাহিনস। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ডানহাতি পেসার রিপন মণ্ডল ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২ উইকেট বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসানের।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ বলে ৩৮ রান করেছেন সাত নম্বরে নামা সাদ মাসুদ। ২৩ বলে ২৫ রান আরাফাত মিনহাসের।
পাকিস্তান শাহিনস : ২০ ওভারে ১২৫ (সাদ ৩৮, আরাফাত ২৫, মাজ ২৩; রিপন ৩/২৫, রাকিবুল ২/১৬)।বাংলাদেশ ‘এ’: ২০ ওভারে ১২৫/৯ (হাবিবুর ২৬, রাকিবুল ২৪, মেহেরব ১৯, সাকলাইন ১৬*, রিপন ১১*; সুফিয়ান ৩/১১, মিনহাস ২/৫, দানিয়াল ২/১১)।ফল : টাই, পাকিস্তান শাহিনস সুপার ওভারে জয়ী।