‘পাগলা হাওয়ার তোড়ে’—জেমস গানটা গাইতে শুরু করতেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে একটা বিদ্যুৎ–তরঙ্গ খেলে গেল। ‘মাটির পিদিম নিভু নিভু করে’ পরের লাইনটা জেমসের হয়ে গেয়ে দেন মাঠের দর্শক। দর্শকদের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছিলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও।
এই চিত্র বিপিএলের ফাইনাল-পূর্ব কনসার্টের। স্টেডিয়ামের যে জায়গায় কনসার্ট হচ্ছিল, তার উল্টো পাশে সিলেট দলের ক্রিকেটাররা গা গরম করছিলেন। সেখানে শরীর দুলিয়ে মাশরাফি গাইছিলেন, ‘ওরে ওরে হাওয়া থাম না রে, বন্ধু আসছে বহুদিন পরে।’ পুরো সিলেট দলের মধ্যেও সে আমেজ দেখা গেল।
Also Read: বিপিএল এখন কত নম্বরে
তখন উল্টো চিত্র কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস শিবিরে। জেমসের মঞ্চের সামনেই নক করছিলেন আন্দ্রে রাসেল। জ্যামাইকান এই অলরাউন্ডার জেমসের গিটার সলো নিয়ে ভাবছিলেন না। একজন সাপোর্ট স্টাফের সঙ্গে নক করছিলেন তিনি। একদম পুরোনো, ভারী রংচটা কয়েকটি বল নিয়ে ড্রাইভ, পুল ও কাট শট খেলছিলেন রাসেল। বড় বড় ছক্কার জন্য যে রাসেল পরিচিত, সেই রাসেলকেই ব্যাটিং ছন্দটা খুঁজতে দেখা গেল অনেকটা প্রথাগত উপায়ে।
রাসেলের আগে একই কাজ করতে দেখা গেল মঈন আলী, লিটন দাসদের। চার-ছক্কার টি-টোয়েন্টি খেলতেও যে ব্যাটিংয়ের মৌলিক দিক শক্ত থাকা দরকার, সেটি এই তিনজনের ম্যাচপূর্ব ‘রুটিন’ না দেখলে বোঝা যাবে না। যদিও সেদিকে দর্শকদের চোখ খুব কমই ছিল। জেমসের কনসার্টেই তখন সবাই মত্ত।
Also Read: বিপিএলে প্রাপ্তির চেয়ে আক্ষেপই বেশি
কনসার্ট শেষে অবশ্য ছবিটা পাল্টে গেল। ‘সিলেট’, ‘সিলেট’ রব যেমন কানে লাগছিল; তেমনি আবহ সংগীতের মূর্ছনায় ‘কুমিল্লা’, ‘কুমিল্লা’ও শোনা যাচ্ছিল। গানের বিনোদন শেষ। এবার মাঠের লড়াইয়ের পালা। আর সে লড়াইয়ে কে কার চেয়ে এগিয়ে, সেটি আলাদা করে বলা মুশকিল। কারণ, গ্যালারিতে যে কুমিল্লার লাল আর সিলেটের গোলাপি আলাদা করাই যাচ্ছিল না। দুটি রঙে মিলেমিশে যেন একাকার মিরপুর স্টেডিয়াম!
Also Read: বিপিএল ফাইনাল: মুশফিকের ফিফটি
বিসিবি কর্তারাও ম্যাচের আগে এমন উৎসবের আবহ তৈরি করতে পেরে গর্ব বোধ করছিলেন। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা তো বারবার বলছিলেন, ‘কেমন হলো? দর্শকেরা কিন্তু খুব উপভোগ করছে। সব ঠিকমতো করতে পেরেছি, মনে হচ্ছে। ভালো লাগছে।’
কিন্তু দর্শকদের ভিড়ে ছিল অব্যবস্থাপনাও। বিশেষ করে সাধারণ দর্শকদের বিপিএল ফাইনালের টিকিট পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। প্রকৃত দামের দু-তিন গুণ বেশি দামে টিকিট কিনতে হয়েছে তাঁদের।
টিকিটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁদের মধ্যে অনেকে খেলা দেখতে এসেছেন সিলেট ও নড়াইল থেকে। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তাকর্মীদের দর্শকদের মাঠে ঢোকাতে দেখা গেছে বিনা টিকিটে। তবে গ্যালারির লাল-গোলাপি দৃশ্যটা যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল।
Also Read: বিপিএল চিনিয়েছে যাঁদের
আরও পড়ুন
-
কিডনি ব্যবসায়ীরা পার পাচ্ছেন দায়সারা তদন্তে
-
মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
-
বিদ্যালয়ের শৌচাগারে ৬ ঘণ্টা আটকে ছিল এক শিশু, পরে তালা ভেঙে উদ্ধার
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার