
এমসিজির এই টেস্টটা অবিশ্বাস্য লাগছে না?মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অ্যাশেজের বক্সিং ডে টেস্টের নামে যা হলো, তাকে আর যা–ই হোক ‘স্বাভাবিক’ ক্রিকেট বলা চলে না। চলুন, সংখ্যা আর রেকর্ডের আয়নায় দেখে নেওয়া যাক দুই দিনেই শেষ হয়ে যাওয়া এই টেস্টের কিছু অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান—
২০১১ সালের পর এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতল ইংল্যান্ড। একটু মনে করে দেখুন তো, ২০১১ সালে আপনার হাতে কোন ফোন ছিল? আইফোন ৪ তখন সবে মাত্র বাজারে এসেছে। আর এখন চলছে আইফোন ১৭ প্রো-ম্যাক্স! নোভাক জোকোভিচ তখন মাত্র একটা গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন (এখন যা ২৪)। এই টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪০ রান করা জ্যাকব বেথেল তখন মাত্র সাত বছরের এক শিশু। অস্ট্রেলিয়ার দলে শুধু উসমান খাজা ও স্টিভ স্মিথ—এই দুজনেই ২০১১ ও ২০২৫ সালের এই দুই হারের সাক্ষী হয়ে থাকলেন। মাঝখানে পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ৫৪৬৮ দিন!
অস্ট্রেলিয়ার মাত্র চতুর্থবার দুই দিনেই শেষ হলো টেস্ট। এর সর্বশেষ দুটিই চলমান অ্যাশেজে। এর আগে ১৯৩১ ও ২০২২ সালে দুই দিনের টেস্ট দেখেছে অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থবার এক সিরিজে একাধিক টেস্টে দুই দিনে শেষ হলো। সর্বশেষ ১২৯ বছর আগে ১৮৯৫–৯৬ মৌসুমে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। এক সিরিজে সর্বোচ্চ তিনটি দুই দিনের টেস্ট দেখেছে ১৮৮৮ সালে অ্যাশেজ।
দুই দলের কেউ ফিফটিও করতে পারেননি মেলবোর্নে! দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেডের ৪৬ রানই ম্যাচের সর্বোচ্চ। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৩২ সালের পর এই প্রথম কোনো টেস্টে একটি হাফ সেঞ্চুরিও পেলেন না কোনো ব্যাটসম্যান। অ্যাশেজে এমন ঘটনা শেষবার ঘটেছিল ১৯৮১ সালে।
চতুর্থ অ্যাশেজ টেস্টের প্রথম দিনেই পড়েছে ২০ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট ক্রিকেটে এর আগে এক দিনে ২০ উইকেট পড়েছিল ১৯৫১ সালে, অ্যাডিলেড ওভালে।
দুই দিনে মোট রান ৫৭২। উইকেট পড়েছে ৩৬টি। সব মিলিয়ে বল হয়েছে ৮৫২টি। গড়ে প্রতি উইকেটে ১৫.৮৮ রান, আর প্রায় প্রতি চার ওভারে একজন করে ব্যাটসম্যান আউট। ১৯৩২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টের (৬৫৬ বল) পর এমসিজিতে এটিই ছিল সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী টেস্ট।
বক্সিং ডেতে এমসিজিতে হাজির হয়েছিলেন ৯৪,১৯৯ জন দর্শক। এক দিনে এই মাঠে ক্রিকেট দেখার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এই সংখ্যা। আগের রেকর্ড ছিল ৯৩,০১৩—২০১৫ সালের পুরুষদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে। দ্বিতীয় দিনেও উপস্থিতি ছিল ৯২,০৪৫।