মিরপুর টেস্ট জেতা হলো না বাংলাদেশের
১৩৭ রান—লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ দলের বোলারদের পুঁজি এটুকুই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ চতুর্থ দিনের উইকেট স্পিনারদের পক্ষে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড দল স্পিন সামলানোয় সেরা, সেটাও বলার উপায় নেই। তবু রানটা কমই মনে হচ্ছিল।
শেষ পর্যন্ত রানের অভাবেই মিরপুর টেস্ট হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের; এর সঙ্গে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে হারানোর সুযোগও। নিউজিল্যান্ড মিরপুরে ৪ উইকেটে জেতায় দুই দলের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১–এ ড্র হলো। সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১৫০ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
চতুর্থ দিন সকালের সেশনে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস যখন ১৪৪ রানে থামে, তখনই কুয়াশা সরিয়ে সূর্য তাপ দিতে শুরু করছিল। দিনের সেরা ব্যাটিং কন্ডিশন বলতে যা বোঝায়, সেটাই পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের পক্ষে যদি কিছু থেকে থাকে, সেটি হচ্ছে নতুন বল। মিরপুরের এই উইকেটে নতুন বলে স্পিন খেলা কঠিন। বাংলাদেশ সে সুবিধা দিয়ে প্রথম ইনিংসের মতো (৫৫ রানে ৫ উইকেট) দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫১ রানে নিউজিল্যান্ডের ৫ উইকেট তুলে নেয়। সেখান থেকে আরও একবার নিউজিল্যান্ডের ত্রাণকর্তা গ্লেন ফিলিপস। তাঁর অপরাজিত ৪০ রানে ৪ উইকেটের জয় পেল নিউজিল্যান্ড।
এর আগে দ্রুত ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের আশা দেখিয়েছিল মিরাজ-তাইজুল জুটি। দিনের দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে পেসার শরীফুল ইসলামের বলে নিউজিল্যান্ড ওপেনার ডেভন কনওয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খানিকটা নিচু হয়ে ভেতরে এসে কনওয়ের প্যাড খুঁজে নেয়। ১৫ বলে ২ রান করা কনওয়ের ইনিংস থামে তাতে।
পরের উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। দশম ওভারে মিডল স্টাম্পের ওপর তাইজুলের ফ্লাইট মেশানো বল সামনের পায়ে খেলার চেষ্টা করেন কেইন উইলিয়ামসন। কিন্তু পিচ পর্যন্ত যেতে পারেননি তিনি। নিখুঁত টার্নের সঙ্গে মেশানো বাড়তি বাউন্স উইলিয়ামসনকে পরাস্ত করে যায় উইকেটের পেছনে। উঁচু হয়ে আসা বলটি গ্লাভসবন্দী করেই স্টাম্প ভেঙে দেন নুরুল। তাতেই ১১ রান করা উইলিয়ামসনের ইনিংস থামে। চলতি সিরিজে চার ইনিংসে তৃতীয়বার উইলিয়ামসনকে আউট করলেন তাইজুল।
Also Read: মিরপুর টেস্টে নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য ১৩৭ রান
চারে নামা হেনরি নিকোলসকে (৩) বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মিরাজ। স্টাম্প তাক করে করা বল ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লু হন তিনি। টপ অর্ডারের অন্যরা যখন আসা–যাওয়ায় ব্যস্ত, তখন ল্যাথাম এক প্রান্ত ধরে রেখেছিলেন। ২১তম ওভারে ল্যাথামের লড়াই থেমেছে মিরাজের দারুণ বোলিংয়ে। ৬০ বলে ২৬ রান করে মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে প্রথম স্লিপে থাকা নাজমুলের হাতে ক্যাচ তোলেন ল্যাথাম।
ঠিক পরের ওভারেই আরও একবার নিউজিল্যান্ড ব্যাটিংয়ে আঘাত হানেন তাইজুল। এবার শিকার টম ব্লান্ডেল (২)। বাঁহাতি স্পিনারের বাড়তি বাউন্স মেশানো বল উইকেটের পেছনে যাওয়া আগে ছুঁয়ে যায় ব্লান্ডেলের গ্লাভস। নিউজিল্যান্ড দলের রান তখন ৫ উইকেটে ৫১, প্রথম ইনিংসে কিউইরা ৫ উইকেট হারিয়েছে ৫৫ রানে।
উইকেটসংখ্যা খুব দ্রুতই ৬ হতে পারত। আর সেই ষষ্ঠ উইকেট হতে পারতেন প্রথম ইনিংসে ৮৭ রান করা গ্লেন ফিলিপসের। কিন্তু মিরাজের বলে স্লিপে নাজমুলের হাত ফসকে যায় ফিলিপসের ক্যাচ। তখন ফিলিপস রানের খাতা খোলেননি। মিরাজ অবশ্য ২৭তম ওভারে ১৯ রান করা ড্যারেল মিচেলকে নাজমুলের তালুবন্দী করেন। ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময়টা পার করে ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনারের সৌজন্যে।
দুজন মিলে ৭৭ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডকে ইনিংসের ৪০তম ওভারে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। বাংলাদেশ দল জুটি ভাঙার বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করেও সফল হয়নি। শূন্য রানে সুযোগ পাওয়া ফিলিপস প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪৮ বলে অপরাজিত ছিলেন ৪০ রানে, স্যান্টনার ৩৯ বলে করেছেন অপরাজিত ৩৫। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ, ২ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল।
Also Read: ‘২০০-২২০ রান করলে ইনশা আল্লাহ জিতব’
আরও পড়ুন
-
প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যু: মধ্যপ্রাচ্যে সংকট বাড়তে পারে
-
ভূমধ্যসাগরে ভাসছিলেন ৩৫ বাংলাদেশি, উদ্ধারকারীদের দেখেই আঁকড়ে ধরেন
-
শেষ ধাপেও এমপিদের স্বজন ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতারা প্রার্থী
-
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের খোঁজ পাওয়া যায়নি পাঁচ দিনেও
-
ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে এলাকা ভাগ করে দিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী