
জন্মশহর কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে আন্দ্রে রাসেলকে সম্ভাব্য সেরা উপায়ে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে জ্যামাইকা সরকার। কিন্তু শেষ ম্যাচে তাঁকে জয় উপহার দিতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জ্যামাইকার পতাকায় মোড়ানো স্মারক ব্যাট–বল। সেখানে দাঁড়িয়ে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী অলিভিয়া গ্রেঞ্জ। দুই পাশে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া দল। সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলেন আন্দ্রে রাসেল। তাঁকে দেওয়া হলো ‘গার্ড অব অনার’।
জন্মশহর কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন রাসেল। টি–টোয়েন্টি ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটারের চাওয়া পূরণ হয়েছে। ৩৭ বছর বয়সী তারকাকে সম্ভাব্য সেরা উপায়েই বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে তাঁর দেশ জ্যামাইকার সরকার।
কিন্তু এরপর যে উদ্দেশে রাসেল মাঠে নামলেন, তা পূরণ হলো না। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী ওয়েস্ট ইন্ডিজ রাসেলের বিদায়ী ম্যাচেও পারল না। সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেল ৮ উইকেটে।
স্যাবাইনা পার্কে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ১৭২ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান রাসেল, ২ চার ও ৪ ছক্কায় ১৫ বলে করেন ৩৬ রান।
কিন্তু জশ ইংলিস ও ক্যামেরন গ্রিন ১৭৩ রানের লক্ষ্যকেও মামুলি বানিয়ে ফেলেন। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে নিল ২৮ বল ও ৮ উইকেট বাকি রেখে। গত রোববার একই ভেন্যুতে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে ৩ উইকেটে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা এখন ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।
রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল মার্শকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাফল্য বলতে এটুকুই।
এরপর ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন ইংলিস ও গ্রিন। মাত্র ৫৯ বলে দুজন গড়েন ১৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, যা টি–টোয়েন্টিতে তৃতীয় উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও অ্যারন ফিঞ্চের ১১৮, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
ইংলিস–গ্রিনের ঝড় থেকে রেহাই পাননি রাসেলও। নিজের প্রথম ওভারে রাসেল ১৬ রান দেওয়ার পর তাঁকে আর বোলিংয়ে আনেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ। সবচেয়ে বেশি রান বিলিয়েছেন আলজারি জোসেফ। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মার্শকে আউট করলেও জোসেফের ৩ ওভার থেকে এসেছে ৫০।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালোই শুরু পেয়েছিল। উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৬৩ রান। তাতে প্রায় সব অবদান ব্র্যান্ডন কিংয়ের। ৬৩ রানের মধ্যে কিংয়েরই ৫১!
এরপর অস্ট্রেলিয়ার দুই স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। দুজন টপাটপ উইকেট তুলে নিলে ৬৩/০ থেকে ৯৮/৫–এর দলে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৪ ওভার শেষেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ এক শ স্পর্শ করেনি। সেই দলটিই শেষ ৬ ওভারে তুলেছে ৭৩ রান। তাতে বড় অবদান বিদায়ী ম্যাচে রাসেলের ওই ব্যাটিং তাণ্ডব। কিন্তু ইংলিস–গ্রিনে ম্যাচের সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের (২৪০.০০) ইনিংসটাও বৃথা গেছে।
সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে দুই দলের তৃতীয় টি–টোয়েন্টি বাংলাদেশ সময় আগামী শনিবার ভোরে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৭২/৮ (কিং ৫১, রাসেল ৩৬, মোতি ১৮*, চেজ ১৬ হেটমায়ার ১৪; জাম্পা ৩/২৯, ম্যাক্সওয়েল ২/১৫, এলিস ২/৩৪, ডরশুইস ১/৩৭)।
অস্ট্রেলিয়া: ১৫.২ ওভারে ১৭৩/২ (ইংলিস ৭৮*, গ্রিন ৫৬*, মার্শ ২১, ম্যাক্সওয়েল ১২; হোল্ডার ১/২৮, জোসেফ ১/৫০, চেজ ০/১৪, রাসেল ০/১৬)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জশ ইংলিস।
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।