এমন একটা ম্যাচের অমন শেষ, ব্যাপারটিকে অ্যান্টিক্লাইমেটিক বলাই যায়! মেহেদী হাসানের বলে আসিতা ফার্নান্ডো ২ রান নেওয়ার পর স্কোর টাই হওয়ার কথা ছিল, অথচ একটু পর উল্লাসে মাতল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ অফ স্পিনার যে আরেকবার পপিং ক্রিজের ভেতরে রাখতে পারেননি পা।
ইনিংসে বাংলাদেশ করেছে ৪টি নো বল, সঙ্গে ৮টি ওয়াইড। অথচ শ্রীলঙ্কা নো ও ওয়াইড থেকে রানই দেয়নি কোনো। নো ও ওয়াইড থেকে শুধু অতিরিক্ত ১২টি রান দেওয়া নয়, বাংলাদেশকে করতে হয়েছে অতিরিক্ত ২ ওভারও। এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে সেগুলোও।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলছেন, চাপের মুহূর্তে এখনো কতটা ভেঙে পড়তে পারে বাংলাদেশ দল, সেটিই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি আরেকবার দেখিয়ে দিল। স্কিলের সঙ্গে এদিকেও উন্নতি করতে হবে বলেও ধারণা তাঁর।
শুধু শেষের ওই নো নয়, এর আগে কুশল মেন্ডিস আউট হয়ে ফিরে যেতে নিয়েও যাননি মেহেদী নো বল করাতে। স্পিনার হয়েও এমন নো বল করাকে ‘ক্রাইম’ বলছেন সাকিব, ‘(নো বল) টার্নিং পয়েন্ট তো হতেই পারে, ব্যাটসম্যান যখন আউট হয়ে গেছে। স্পিনারের নো বল করা অবশ্যই ক্রাইম। সাধারণত আমাদের স্পিনাররা এভাবে নো বল করে না।’
তবে অমন পরিস্থিতিতে নো হয়ে গেছে চাপের কারণেই, মনে করেন সাকিব, ‘আসলে বোঝা গেল আমরা চাপে এখনো কতটা ভেঙে পড়তে পারি। এখানে উন্নতি করতে হবে। স্কিলের উন্নতির ব্যাপার আছে অবশ্যই। তবে চাপ এলেই ভেঙে পড়ি, চাপের মুহূর্ত এলেই হেরে যাই আমরা। এমন ৫০ শতাংশ ম্যাচও জিতলেও কিন্তু আমাদের রেকর্ড ভালো থাকত, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে।’
১৮তম ওভারে দাসুন শানাকা আউট হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচটা ঝুঁকে পড়েছিল বাংলাদেশের দিকে। তবে অভিষিক্ত ইবাদত হোসেন এসে দেন ১৭ রান। প্রথম ২ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া এ পেসার পরের ২ ওভারে গুনেছেন ৩৮ রান!
অভিজ্ঞতার অভাবেই এমন হয়েছে, মনে করেন সাকিব, ‘এমন চাপের ম্যাচ এর আগে খেলেনি। এর আগে টেস্ট খেলেছে, ওয়ানডে একটি-দুটির বেশি খেলেনি। কিন্তু এমন চাপের পরিস্থিতিতে পড়েছে আজই প্রথম। অনেক কিছু শেখার আছে ওর। প্রথম ২ ওভারে যেভাবে খেলেছে, আমাদের ম্যাচে রেখেছিল সে। আমরা ভেবেছিলাম সে-ই আমাদের ম্যাচে সেরা বোলার হবে। প্রত্যাশা করাই যায়, ছন্দ ভালো থাকবে, ইতিবাচক থাকবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হয়নি। তবে আমার ধারণা, এ ম্যাচ দিয়ে অনেক কিছু শিখতে পারবে সে।’
ডেথ বোলিংয়ে উন্নতির কথাও বারবার করেই বলেছেন সাকিব। আফগানিস্তানের পর শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার পরও পার হতে পারেনি বাংলাদেশ।
তবে কোনো কিছুর জন্যই তাড়াহুড়া করতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘নতুন করে অধিনায়কত্ব পেলাম। (শ্রীধরন) শ্রীরামের জন্যও প্রথম ম্যাচ। নতুন করে শুরু করতে গেলে অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। এত সহজ না। যদি কয়েকটা ম্যাচ, ৪-৫টা সিরিজ পেতাম, তাহলে অনেক কিছু পরিকল্পনা করতে পারতাম। কিছু ঠিক হবে, কিছু ভুল হবে।’
তবে আগের সিরিজগুলো থেকে উন্নতি হয়েছে, এমন দাবি তাঁর, ‘আমাদের একটি লক্ষ্য আছে। সেদিকেই এগোচ্ছি। ধীরে ধীরে যেতে চাই। প্রথম দুই ম্যাচের অ্যাটিটিউড, চিন্তাভাবনা… প্রথম ম্যাচের ব্যাটিংয়ের কথা বলতে পারেন, তবে উইকেটটাই অমন ছিল। হয়তো ১০-১৫ রান বেশি করতে পারলে ভালো হতো। অন্তত সর্বশেষ ৩-৪টি সিরিজের চেয়ে উন্নতি হয়েছে।’