ভারত সফরে আসার আগেই ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার সেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কারটা জিতেছিলেন উসমান খাজা। স্টিভ স্মিথের হাতে চতুর্থবারের মতো উঠেছিল অ্যালান বোর্ডার মেডেল। গত বছর টেস্ট ক্রিকেটে এই দুই ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড়ই ৭০-এর চেয়ে বেশি। স্মিথের গড় ছিল ৭১.৯২, খাজার ৭৮.৪৬।
এবার ডেভিড ওয়ার্নারের দিকে চোখ দেওয়া যাক। ঘরের মাঠে দুই টেস্ট আগেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন ওয়ার্নার। সঙ্গে ভারতের মাটিতে খেলার অভিজ্ঞতা তো আছেই। আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ের এক নম্বর ব্যাটসম্যান মারনাস লাবুশেনকে নিয়ে আলোচনাটা না করলেও চলছে। ছন্দ না থাকলে তো আর আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর ব্যাটসম্যান হতে পারতেন না।
খাজা-স্মিথ-ওয়ার্নার-লাবুশেনদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইনআপের কেউই ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ফিফটি করতে পারেননি। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও এটাই সত্য। প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেছিলেন লাবুশেন। দুই ইনিংসে মিলিয়ে এটাই সর্বোচ্চ। ভারতের মাটিতে এই প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা টেস্টের দুই ইনিংসে কোনো ফিফটি পাননি।
ভারতের মাটিতে প্রথম, তবে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানেরই ফিফটি করতে না পারার একমাত্র ঘটনা এটি নয়। এর আগেও একবার এমন হয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও, তা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই। সেটি ২০২০ সালে ডিসেম্বরে মেলবোর্ন টেস্টে।
স্পিন-বিষেই নীল হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টেস্ট শুরুর আগেই নাগপুরের উইকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। সেই উইকেটকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন ভারতের স্পিনত্রয়ী রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেল। যাঁদের প্রশংসা করতে গিয়ে দারুণ এক উপমা টেনেছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা,‘এমন উইকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেলের অধিনায়কত্ব করা অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স আর জস হ্যাজলউডের অধিনায়কত্ব করার মতো।’
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স উইকেটকে কোনো অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাননি। বরং দায় স্বীকার করে নিয়েছেন নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতার, ‘প্রথম ইনিংসে উইকেটে স্পিন ধরছিল। কিন্তু সেই স্পিন খেলা যাচ্ছিল না, ব্যাপারটি এমন নয়। আমরা যদি প্রথম ইনিংসে আরও ১০০ রানের মতো যোগ করতে পারতাম, তাহলে ভারতের ওপর কিছুটা চাপ তৈরি করা যেত।’ উইকেটকে কাঠগড়ায় দাঁড় সুযোগও অবশ্য কামিন্সের ছিল বলে মনে হয় না। কারণ, যে উইকেটে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা করেছেন ৪০০ রান, সেখানে দুই ইনিংস মিলিয়েও ভারতের চেয়ে ১৩২ রান কম করেছে অস্ট্রেলিয়া।
ভারতের মাটিতে প্রথম, তবে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানেরই ফিফটি করতে না পারার একমাত্র ঘটনা এটি নয়। এর আগেও একবার এমন হয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও, তা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই। সেটি ২০২০ সালে ডিসেম্বরে মেলবোর্ন টেস্টে। এই নাগপুর আর সেই মেলবোর্নে মিল কী, জানেন?
নাগপুরের মতো মেলবোর্নেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান করেছিলেন মারনাস লাবুশেন। রানটাও প্রায় মিলেই গিয়েছিল। নাগপুরে লাবুশেন করেছেন ৪৯, মেলবোর্নে করেছিলেন ৪৮।
আর অমিল? নাগপুরে স্পিন-বিষে নীল হয়েছে অস্ট্রেলিয়া আর মেলবোর্নে উড়ে গিয়েছিল পেস-তোপে।