
৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৮ বলে দরকার ছিল ৬৯ রান—এই সমীকরণও মেলাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।
সনাৎ জয়াসুরিয়া মনমরা হয়ে বসে ছিলেন ড্রেসিংরুমের বাইরে। ম্যাচের মোড় এভাবে ঘুরে যাওয়া হতো হজম করতে পারছিলেন না শ্রীলঙ্কার কোচ।
পারবেন কী করে? দুবাইয়ে ভারতের দেওয়া ২০৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ১২ ওভারে ১ উইকেটেই ১৩৪ রান তুলে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। পাতুম নিশাঙ্কা ও কুশল পেরেরা মিলিয়ে তোলেন ১২৭, যা এশিয়া কাপ টি–টোয়েন্টিতে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৮ বলে দরকার ছিল ৬৯ রান।
পেরেরার আউটে মহাকাব্যিক জুটি ভাঙলেও নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে টুর্নামেন্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের পথেই ছিল লঙ্কানরা। কিন্তু শেষ দিকে ভারতীয় বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে গুবলেট পাকিয়ে ফেলল জয়াসুরিয়ার দল। ২০ ওভারে ঠিক ভারতের সমান ৫ উইকেটে ২০২ রানে থামল লঙ্কানরা।
ফলে ম্যাচ গেল সুপার ওভারে। সেখানে অর্শদীপ সিংয়ের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার প্রথম বলেই নিলেন ৩ রান।
ব্যস, শ্রীলঙ্কার মুঠো থেকে ম্যাচটা ছিনিয়ে নিল ভারত। গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোর মিলিয়ে টানা ছয় জয়ে টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকেই রোববার রাতে ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সূর্যকুমারের দল।
ভারত সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করায় ও শ্রীলঙ্কা অনেক আগেই ফাইনালে ওঠার লড়াই থেকে ছিটকে পড়ায় সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল নিছক নিয়ম রক্ষার। অথচ এমন ম্যাচই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে জমজমাট ম্যাচের তকমা পেয়ে গেল!
নিশাঙ্কার সৌজন্যে এবারের এশিয়া কাপ পেয়েছে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান। ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ৫৮ বলে ১০৭ রানের ইনিংস বৃথা গেলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার তাঁর হাতেই উঠেছে।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে অভিষেক শর্মার আরেকটি বিধ্বংসী ফিফটির তিলক বর্মা, সঞ্জু স্যামসনদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রথম দল হিসেবে এবারের এশিয়া কাপে দুই শ স্পর্শ করে ভারত।
ভারত: ২০ ওভারে ২০২/৫ (অভিষেক ৬১, তিলক ৪৯*, স্যামসন ৩৯, অক্ষর ২১*; আসালাঙ্কা ১/১৮, শানাকা ২/২৩, তিকশানা ১/৩৬)।
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ২০২/৫ (নিশাঙ্কা ১০৭, পেরেরা ৫৮, শানাকা ২২*; পান্ডিয়া ১/৭, কুলদীপ ১/৩১, বরুণ ১/৩১)।
সুপার ওভার
শ্রীলঙ্কা: ৫ বলে ২/২
ভারত: ১ বলে ৩/০
ফল: ভারত সুপার ওভারে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: পাতুম নিশাঙ্কা।