
গোলের পর তাঁর উদ্যাপনের সঙ্গে ভালোবাসার একটা যোগসূত্র আছে। দুহাত দিয়ে ‘হৃদয়’ বানিয়ে দেখান অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া। ভালোবাসাবাসি ব্যাপারটার শুরু তো হৃদয় থেকেই। তো সেই ভালোবাসার দিনে, ভালোবাসার শহরে ডি মারিয়া যদি তাঁর সেই বিখ্যাত উদ্যাপনের সুযোগই না পান, কেমন দেখায়! এরপর আবার সেই দিনটা যদি তাঁর জন্মদিন হয়, তাহলে তো কথাই নেই।
মনে হতে পারে, প্যারিসের পার্ক দো প্রিন্সেসে কেউ বুঝি তাঁর জন্য মঞ্চ সাজিয়ে রেখেছিল। ডি মারিয়ার কাজ শুধু সেই মঞ্চে উঠে নায়কের ভূমিকাটা নেওয়া। আসলে তা নয়। সেই মঞ্চে লিওনেল মেসি নামে একজন ছিলেন। ছিলেন লুইস সুয়ারেজ, নেইমারও। এঁদের সবাইকে ছাপিয়ে নায়ক হওয়া কি যেনতেন ব্যাপার!
কিন্তু ডি মারিয়া কী দারুণভাবেই না পুরো আলোটা নিজের ওপর নিলেন। বার্সেলোনার জালে পিএসজির ৪ গোলের দুটিই তাঁর। ১৮ মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রিকিক থেকে প্রথম গোল। ৫৫তম মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত এক বাঁকানো শটে দ্বিতীয়টি। আর শুধু গোল কেন! সতীর্থদের গোলের জোগান দেওয়া, মাঝমাঠে প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেওয়া, কী করেননি আর্জেন্টাইন উইঙ্গার! প্যারিসে পরশু রাতে পুরো ম্যাচেই অপ্রতিরোধ্য ছিলেন ডি মারিয়া। তাঁর সামনে খুঁজেই পাওয়া যায়নি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের।
জন্মদিন ছিল ডি মারিয়ার সতীর্থ এডিনসন কাভানিরও। উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার সেটি উদ্যাপন করেছেন দুর্দান্ত এক গোল করে। কিন্তু সব ছাপিয়ে এ রাতটা আসলে ডি মারিয়ার। ম্যাচ শেষে তাঁর উচ্ছ্বাস তাই বাঁধ মানছিল না, ‘আমার জন্য এ এক বিশেষ দিন। জন্মদিনটা এর চেয়ে ভালো আর হতে পারত না।’
কাজটা যে কতটা কঠিন ছিল বললেন সেটাও, ‘মেসি-নেইমার-সুয়ারেজকে সামলানো সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা দারুণভাবেই সবকিছু করতে পেরেছি। বিশ্বাস করা কঠিন যে আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা দলকে এভাবে হারিয়েছি।’
তবে নিজের মাঠে এত বড় জয়ের পরও এখনই চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত ভাবছেন না ডি মারিয়া। একই ছন্দে খেলতে চান ফিরতি লেগটাও, ‘আমরা যদি আমাদের মাঠে ওদের এভাবে হারাতে পারি, ওদেরও সামর্থ্য আছে নিজের মাঠে আমাদের এর চেয়ে বড় ব্যবধানে হারানোর।’