এ মুহূর্তে বার্সেলোনার গোল করার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর। রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়িয়েই একের পর এক গোল করে যাচ্ছেন মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার নামের ত্রিফলা। কিন্তু এই একই কাজ যদি পেনাল্টি স্পট থেকে করতে বলা হয়? রেকর্ডটা তখন আর মুগ্ধতা তো জাগাবেই না, উল্টো প্রশ্ন তুলে দেবে, পেনাল্টি কিক নিতে গেলে কী হয় তখন মেসিদের?
মৌসুমের শুরু থেকে মাথার ওপর প্রশ্নটা ঝুলছে অভিশাপের মতো। সর্বশেষ রায়ো ভায়োকানো ম্যাচেও সেটি আরেকবার ফিরে এল। পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারলেন না সুয়ারেজ। এতে একটা রেকর্ডও হয়ে গেছে, যদিও রেকর্ডটি বার্সা কোচ লুইস এনরিকের ভালো লাগবে না। লিগে এ পর্যন্ত ১৩ পেনাল্টির সাতটি থেকেই গোল করতে ব্যর্থ বার্সার খেলোয়াড়েরা। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের পর স্প্যানিশ লিগে এই প্রথম কোনো ক্লাবের সাতটি পেনাল্টি নষ্ট হলো।
ব্যর্থতার পরিসংখ্যানে ‘সাত’ লেখাটা ঠিক কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারত। সেল্টা ভিগো ম্যাচে মেসি-সুয়ারেজের যুগলবন্দীর পেনাল্টিকে ব্যর্থতা বললে ফুটবলের উদ্ভাবনী সৌন্দর্যকে অস্বীকার করা হয়। তবে রেকর্ডের খাতার তো আর সৌন্দর্যের স্বীকৃতি দেওয়ার দায় নেই, ওখানে সেটি ‘মিস’ হিসেবেই লেখা। লিগের পাশাপাশি অন্য প্রতিযোগিতাগুলোও হিসাবে নিলে বার্সার আক্ষেপের দীর্ঘশ্বাসটা আরও বড় হবে। মৌসুমে এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ পেনাল্টি থেকেই গোল করতে পারেনি বার্সেলোনা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মোট ১৮টি পেনাল্টি পেয়েছে বার্সা, তাতে গোল হয়েছে মাত্র নয়টি।
আর এই ব্যর্থতার দায় ‘এমএসএন’ ত্রয়ীরই। জাদুকরি ফুটবলে আলো ছড়াচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু পেনাল্টি যেন ত্রিরত্নের পারফরম্যান্সে চাঁদের কলঙ্ক হয়ে আছে। লিওনেল মেসি, নেইমার, লুইস সুয়ারেজ—তিনজনই পেনাল্টিতে যতগুলো গোল করেছেন, ব্যর্থও হয়েছেন ততবারই। নেইমার ৮টি পেনাল্টি থেকে গোল পেয়েছেন চারটি, মেসি ৬ পেনাল্টিতে তিনটি, সুয়ারেজ ৪-এ দুই। যাচ্ছেতাই রেকর্ড। রায়ো ভায়েকানো ম্যাচের পর বার্সা কোচ এনরিকেও পেনাল্টিতে সাফল্য বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন, ‘পেনাল্টিতে আমরা সফল হচ্ছি না। কোনো সন্দেহই নেই যে এই জায়গাটাতে উন্নতি করতেই হবে।’
বিস্ময়কর যে, পেনাল্টি দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিচ্ছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছেও। রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড এই মৌসুমে দুটি পেনাল্টি মিস করেছেন। অবশ্য তাঁর সাফল্যও ‘এ+’ গ্রেডের। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বাকি ৮ পেনাল্টি থেকেই গোল করেছেন রোনালদো। মার্কা, গোলডটকম।