ইউরো ফাইনালে টাইব্রেকার মিসের পর বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ড
ইউরো ফাইনালে টাইব্রেকার মিসের পর বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ড

ইউরো ২০২০

ফাইনালে হারের পর বর্ণবিদ্বেষী আচরণ, নিন্দা জানাচ্ছেন সবাই

বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ফুটবলাররা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েক বছর ধরেই। খেলা শুরুর আগে সম্মিলিতভাবে হাঁটু গেড়ে প্রতিবাদ জানানোটা প্রথা বানিয়ে ফেলেছে অনেক দল।

কিন্তু এমন প্রতিবাদেও যে খুব একটা ফল পাচ্ছে এমন নয়। ইংল্যান্ড দলের এমন প্রতিবাদের মুখেই দুয়ো দিয়েছে অনেক বর্ণবাদী দর্শক। তাদের কদর্য রূপ আরও নগ্নভাবে বেরিয়ে পড়েছে গতকাল রাতে।

ইউরোর ফাইনালে কাল টাইব্রেকারে হেরে গেছে ইংল্যান্ড। ইতালির বিপক্ষে ওয়েম্বলিতে স্বাগতিক দলের হয়ে শেষ তিনটি শট জালে পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছেন মার্কাস রাশফোর্ড, জাডোন সাঞ্চো ও বুকায়ো সাকা। এরপরই বর্ণবাদী সব লোক অনলাইনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এই তরুণদের ওপর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে নগ্নভাবে বর্ণবিদ্বেষ ছড়িয়েছে এই সমর্থকেরা।

সাবেক ফুটবলার, ইংলিশ ফুটবল ফেডারেশন ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন—সবাই এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন। কিন্তু বর্ণবাদী আচরণ থামাতে সরকারের সদিচ্ছা আছে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।

রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়িয়েই থামেনি অনেকেই। রাতেই উইথিংটনে রাশফোর্ডের একটি ম্যুরাল নষ্ট করা হয়েছে। ম্যুরালের গায়ে বর্ণবাদী বার্তা লেখা হয়েছিল। রাত তিনটার একটু আগে ম্যানচেস্টার পুলিশকে এটা জানানো হলে দ্রুত সেটা ঢাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাডোন সাঞ্চোকেও টাইব্রেকার মিসের পর সহ্য করতে হয়েছে বর্ণবাদী আচরণ।

নিজের শিষ্যদের এভাবে বিদ্বেষের শিকার হওয়ার বিষয়টির কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন গ্যারেথ সাউথগেট, ‘ওদের কারও এভাবে বিদ্বেষের শিকার হওয়ার বিষয়টি ক্ষমার অযোগ্য। যাঁরা এসব তথ্যপ্রযুক্তির উৎস খুঁজে বের করতে পারেন, তাঁরা ব্যাখ্যা করতে পারবেন ভালো। কিন্তু ওরাই সব নয়। আমরা স্রেফ এসবের বিপক্ষে। জাতীয় দলের সঙ্গে মানুষকে একসূত্রে গাঁথতে আমরা আলোকবর্তিকার মতো কাজ করছি। জাতীয় দল সবার পক্ষে দাঁড়ায়।’

ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বর্ণবাদী আচরণের নিন্দা জানিয়ে টুইট করেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্ণবাদী আচরণ নয়, ইংল্যান্ড দলকে নায়কের মর্যাদা দেওয়া উচিত।’

কিন্তু বরিস জনসনকে ধুয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক ডিফেন্ডার গ্যারি নেভিল। স্বয়ং ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীই ‘বর্ণবাদকে উৎসাহ’ দিচ্ছেন বলে মনে করেন নেভিল, ‘গত মাসে খেলোয়াড়েরা যখন হাঁটু গেড়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, তারা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, তখন সরকারের উচ্চপর্যায়ের অফিশিয়ালরা এ নিয়ে উপহাস করেছেন। তাই ফুটবল ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়েরা যখন বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়, তখন বিষয়টি আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগে না। কারণ, বর্ণবাদ আছে এবং তাতে আসলে প্রধানমন্ত্রীই উৎসাহ দিচ্ছেন।’