ওল্ড ট্রাফোর্ডে ‘সিইউউউ’ উদ্যাপন!
মাঠে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, মাত্রই হয়েছে গোল। দৌড়ে কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে গিয়ে লাফ দিয়ে শূন্যে শরীর ঘুরিয়ে দুই দিকে দুই হাত ছড়িয়ে দেওয়া উদ্যাপন। এর মানেই তো রোনালদোর সেই বিখ্যাত ‘সিইউউউ’ উদ্যাপন। কিন্তু এমন উদ্যাপনেও মুখ চুন করে বসে আছে ওল্ড ট্রাফোর্ড। আগ্রাসী কয়েকজন তো পারলে তেড়েই আসেন।
উদ্যাপন রোনালদোর, কিন্তু সেটা করে দেখিয়েছেন এনড্রোস টাউনসেন্ড। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে গোল করেই প্রতিপক্ষ সমর্থকদের পিত্তি জ্বালিয়ে দিলেন এভারটন মিডফিল্ডার। এই গোলেই প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়া ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচে ফিরেছে এভারটন। শেষ পর্যন্ত রোনালদোদের হতাশ করে রাফায়েল বেনিতেজের দল ১-১ গোলে ড্র করে মহামূল্যবান এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আজ।
উলে গুনার সুলশারের দল অবশ্য এক পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারে। ৮৬ মিনিটে অতিথি দল দ্বিতীয় গোল করে বসেছিল। কিন্তু ইয়েরি মিনার গোলটি ভিএআর অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেয়।
জিতলেই লিগের শীর্ষে যাওয়া যাবে, এমন এক ম্যাচে একটু বেশিই পরীক্ষা করে ফেলেছিলেন সুলশার। বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ ছিল। সে ম্যাচে ৯৫ মিনিটে গোল করে দল জেতানো রোনালদো আজ শুরু থেকে ছিলেন না মাঠে। শুধু রোনালদোই নন, সুলশার বসিয়ে রেখেছিলেন পল পগবাকেও।
দলের সেরা তিন খেলোয়াড়ের দুজনকে বেঞ্চে রেখেও প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল ইউনাইটেড। ৪৩ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের পাস থেকে গোল করেছেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল। গত ফেব্রুয়ারির পর ইউনাইটেডের জার্সিতে গোল করেছেন চোট থেকে সেরে ওঠা মার্শিয়াল।
গোল করলেও মার্শিয়াল, এদিনসন কাভানি ও ম্যাসন গ্রিনউডকে নিয়ে আক্রমণভাগ খুব একটা প্রাধান্য দেখায়নি। বরং এভারটনই ভালো খেলেছে বেশি। দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিট মাঠে নামেন রোনালদো ও জাডোন সাঞ্চো। এরপর ইউনাইটেডের আক্রমণের গতি বাড়ে। ওদিকে এভারটন তাদের দুই মূল গোল ভরসা রিচার্লিসন ও ডমিনিক কালভার্ট-লুইন ছাড়া নেমেছে। তাই শট নেওয়ায় ইউনাইটেডের সঙ্গে পাল্লা দিলেও গোলে মাত্র দুটি শট নিতে পেরেছে।
এর মধ্য থেকেই গোল বের করে নিয়েছে এভারটন। ৬৫ মিনিটে দারুণ এক প্রতি আক্রমণে ইউনাইটেড রক্ষণ ফাঁকা হয়ে যায়। নিজেদের বক্সের বাইরে থেকে দারুণভাবে বল নিয়ে বেরিয়ে যান ডেমারাই গ্রে। আবদুলায়ে দুকুরে অনেক জায়গা পেয়ে যান মাঝমাঠে। বক্সের কাছে এসে বল দিয়ে দেন টাউনসেন্ডের কাছে। আর বাকিটা সেরে নিয়েছেন টাউনসেন্ড। এরপরই রোনালদো ও ওল্ড ট্রাফোর্ডকে দেখিয়ে করলেন সেই উদ্যাপন।
এরপরই সুলশার মাঠে নামান পগবাকে। তবে ইউনাইটেডের হয়ে ত্রাস ছড়াচ্ছিলেন সাঞ্চো। বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করলেও গোল পাননি। কিন্তু উল্টো নিজেদের জালে বল যেতে দেখেছিল ইউনাইটেড। টম ডেভিসের ক্রস থেকে এভারটন ডিফেন্ডার মিনা বল পাঠিয়েছিলেন জালে। কিন্তু সেটা অফসাইডে বাতিল হয়। ড্র মেনে নিতে হয় দুই দলকে। ৭ ম্যাচে সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগে এখন দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে ইউনাইটেড ও এভারটন। এ ফলে এভারটন খুশি হলেও চাপ বাড়ছে সুলশারের ওপর। সব প্রতিযোগিতা মিলে গত ছয় ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে ইউনাইটেড।