কিরগিজস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ হারবে—একপ্রকার অনুমেয়ই ছিল। ব্যবধানটা কী হয়, তাই ছিল দেখার বিষয়। শেষ পর্যন্ত বিশকেকের দোলন ওমরজাকোভ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪–১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ।
কিরগিজস্তানের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। টানা দুই জয়ে তিন জাতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো কিরগিজস্তান। ফিলিস্তিন রানার্সআপ আর বাংলাদেশ তৃতীয়।
ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ২–০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচের একাদশে চারটি পরিবর্তন এনে আজ মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। গোলকিপার শহিদুল আলমের জায়গায় আনিসুর রহমান, ডিফেন্ডার রেজাউল করিমের জায়গায় রিয়াদুল হাসান, মিডফিল্ডার সোহেল রানার জায়গায় রাহবার ও সাদ উদ্দিনের জায়গায় মাহবুবুর রহমান। ২৩ মিনিটেই কানাডাপ্রবাসী রাহবারকে তুলে নামানো হয় সোহেলকে।
কিরগিজদের সঙ্গে আগে চার ম্যাচে কখনো জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আজ অলৌকিক কিছু করে বাংলাদেশ জিতবে, এমন বাজি ধরার মতো কোনো লোক না থাকাই স্বাভাবিক। বরং আগের চেয়ে শুধু র্যাঙ্কিংয়ে নয়, মাঠের খেলাতেও অনেক এগিয়ে যাওয়াটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশটি।
আজকের আগে ২০১৫ সালে সর্বশেষ কিরগিজস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। বিশকেকে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-০ গোলে। তখন ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান ছিল ১৪৬। ৬ বছরের ব্যবধানে সেই কিরগিজস্তান ১০১ নম্বর স্থানে উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পিছিয়ে ১৮৮। দিন বদলের সঙ্গে সবাই সামনের দিকে এগোয়, আর বাংলাদেশ হেঁটেছে পেছনের দিকে। সেই বিশকেকেই বিপরীতমুখী পথে চলা দুটি দলের ফলও হয়েছে যা হওয়ার তাই।
৪–১ গোলে হারা ম্যাচের খুব বেশি ভুল না খুঁজলেও চলে। কিরগিজদের দ্রতগতির ফুটবলের সামনে দাঁড়াতে পারেননি জামাল ভূঁইয়ারা। পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়েও গোলমুখে শক্ত প্রতিরোধ গড়া যায়নি। প্রথম তিনটি গোলই ‘আনমার্কড’ থেকে বিনা বাধায় গোল করেছে তারা। প্রতিপক্ষের অর্ধে মতিন, রাকিবম মাহবুবুররা একসঙ্গে খেলতে পারেননি বেশ কয়েকটি পাসও।
মাঝে মাঝে প্রতি–আক্রমণে তেড়েফুঁড়ে উঠলেও প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। কর্নার কিক ও ফ্রিকিকগুলো অনায়াসে তুলে দিয়েছেন কিরগিজ গোলরক্ষকের হাতে।
১০ মিনিটে প্রথম গোল খায় বাংলাদেশ। আলিমারদন শুকরোভের নেওয়া ফ্রিকিকে দূরের পোস্ট থেকে ভলিতে বল জালে জড়িয়েছেন এলডার। তাঁকে মার্কিং করতে ব্যর্থ হন বিশ্বনাথ ঘোষ ও ইয়াসিন আরাফাত। ১৭ মিনিটেই ২–০ হতে পারত।
গোললাইন থেকে সেভ করেন সেন্টারব্যাক তপু বর্মণ। ৪০ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ থেকে দ্বিতীয় গোল খায় বাংলাদেশ। কায়রাত ইজাকোভের কাটব্যাক থেকে বক্সের মধ্যে থেকে দেখেশুনে পোস্টে জড়িয়েছেন শুকুরোভ। বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষ ফরোয়ার্ড কীভাবে থাকে? এ প্রশ্ন মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তৃতীয় গোল হজমেও বাংলাদেশের একই ভুল।
বিরতিতে যাওয়ার আগে যেখানে শেষ হয়েছিল, দ্বিতীয়ার্ধে সেখান থেকেই শুরু কিরগিজদের। ৪৬ মিনিটে আলিকুলুভের পাস থেকে ৩–০ করেছেন তুরসুনালি রুসতামোভ। ৩–০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচ কার্যত সেখানেই শেষ। ৫৩ মিনিটে ব্যবধান কমিয়েছেন মাহবুবুর। তাঁর শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। ৩–১ হওয়ার পর কয়েক খেলোয়াড়ের বদলিতে তুলনামূলক ভালো খেলে বাংলাদেশ। কিন্তু ৮৯ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করে বাংলাদেশ।